দু’মাস আগে মহেশতলার হাতকাটা কেলে এবং তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে এক বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার মঙ্গলবার আদালতকে রিপোর্ট দিয়েছেন, হাতকাটা কেলে এবং তার তিন সঙ্গী তৃণমূলের সক্রিয় সমর্থক। অর্থাৎ অভিযুক্তেরা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলেই যে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, পুলিশ সুপার কার্যত সেটা মেনে নিয়েছেন।
পুলিশ ঝান্ডার রং দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে এর আগে মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর আদালতেই মামলা করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার সুখদেবপুরের বাসিন্দা ৭০ বছরের ললিতমোহন মণ্ডল। গত ২৬ জুন ভাইপো পরেশ মণ্ডলের সঙ্গে জমি নিয়ে বিবাদ বাধে তাঁর। ললিতবাবুর অভিযোগ, পরেশের নেতৃত্বে হাতকাটা কেলে, রঘুনাথ মণ্ডল ও প্রদীপ মণ্ডল তাঁকে আক্রমণ করে। তিনি গুরুতর আহত হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ৮ জুলাই তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। তাঁর পরিবার চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মহেশতলা থানায় অভিযোগ করে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
ললিতবাবু হাইকোর্টে বলেন, ঘটনার দু’মাস পরেও পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অভিযুক্তেরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। এলাকার প্রভাবশালী নেতারাও তাদের মদত দিচ্ছেন। তাই পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ললিতবাবুর আশঙ্কা, তাঁর এবং তাঁর পরিবারের লোকেদের উপরে আবার হামলা হতে পারে।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে? পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী এ দিন আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানান, অভিযুক্ত চার জনই সক্রিয় তৃণমূল-সমর্থক। তবে অভিযুক্তের রাজনৈতিক রং না-দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহেশতলা থানার ওসি তাঁকে জানিয়েছেন, ললিতবাবুর পরিবারের নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ মনে করে, নতুন করে ললিতবাবু এবং তাঁর পরিবারের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই।
বিচারপতি মামলার নিষ্পত্তি করে দিয়ে বলেন, অভিযুক্তেরা একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থক বলে এসপি জানিয়েছেন। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। পুলিশ সুপার তাঁর রিপোর্টে ঠিক চিত্র তুলে ধরায় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলায় তিনি পুলিশকে নতুন নির্দেশ দেননি। |