কোথাও উঠে গিয়েছে পিচের চাদর, কোথাও বা রাস্তা জুড়ে কাদা। রাস্তার বড় বড় গতর্গুলো বর্ষার জল জমে হয়ে গিয়েছে ডোবা। এমনই দশা বেলডাঙার বাদশাহী সড়কের।
ভোট আসে, ভোট যায় কিন্তু পাল্টায় না রাস্তার হাল। সারগাছি বাজার সংলগ্ন বাদশাহি রোড গত ১০ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় অগম্য হয়ে পড়েছে। ওই রাস্তা দিয়েই আশপাশের বেশ কয়েকটি হাই স্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা যাতায়াত করে। সারগাছি বাজার ও বাসস্ট্যান্ড থেকে বহরমপুর যেতে পড়ে ওই রাস্তা।
খানাখন্দে ভরপুর রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এলাকার বাসিন্দা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী লাবণী মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিদিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যেতে হয় ওই রাস্তা দিয়ে। সারা বছরই চলাচল করতে কষ্টের সীমা থাকে না। ’’ নিত্যযাত্রী থেকে ব্যবসায়ী, কৃষক থেকে স্কুল শিক্ষক সকলেরই ওই রাস্তাই একমাত্র সম্বল। ফলে, দৈনন্দিন সমস্যা যেন কাটতেই চায় না। |
সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুদীপ্তকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের ৮৬১ জন ছাত্রের মধ্যে ৭০ জন আবাসিক। বাকিরা ওই রাস্তা দিয়ে কষ্ট করে স্কুলে আসে।’’ এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা দীননাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘পলাশির যুদ্ধের সময় নবাব সিরাজদৌল্লা এই রাস্তা ধরেই সৈন্য নিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে পলাশিতে আসেন। এই রাস্তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। তবুও এই রাস্তা সারাইয়ের কাজে প্রশাসনের অনীহ।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের মহুলা-১ অঞ্চল সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সারগাছি বাজার থেকে বাণীনাথপুর প্রায় ৮ কিমির বেশি রাস্তা চলাচলের অযোগ্য। বর্ষার জলের কাদা না-থাকলেও ওই রাস্তায় কোনও সুস্থ মানুষ যাতায়াত করতে পারবে না।’’
এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য কংগ্রেসের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ওই রাস্তার অবস্থা সত্যিই শোচনীয়। তবে এ বার আমরা জেলা পরিষদে ক্ষমতায় এসেই কাজ করব। ইতিমধ্যেই ওই বাদশাহি রাস্তাটিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি, পুজোর পরেই টেন্ডার ডেকে দ্রুত কাজ শুরু করা যাবে।’ কিন্তু গত ১০ বছরে ওই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মেরামত হল না কেন? বিদায়ী জেলা পরিষদের কংগ্রেস সদস্য ইসমাইল শেখ বলেন, ‘‘গত জেলা পরিষদে ক্ষমতায় বামফ্রন্ট থাকলেও সেখানে তাঁরা সংখ্যালঘু ছিলেন। বাজেট বরাদ্দ ও অন্যান্য প্রকল্পের টাকা মঞ্জুর নিয়ে সমস্যা ছিল। ফলে কাজ হয়নি। এ বার ওই রাস্তা মেরামত করা হবে।’’ |