মোয়েস টেনেটুনে পাশ
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-০
চেলসি-০
সোমবার রাতে যখন এ মরসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম হাইপ্রোফাইল ম্যাচ দেখতে বসেছিলাম তখন মাথায় একটাই প্রশ্ন ঘুরছিল। স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনের উত্তরসূরি ডেভিড মোয়েস কি পারবেন নিজের প্রথম বড় পরীক্ষায় পাশ করতে? নাকি মোরিনহো-র মগজাস্ত্র বাজিমাত করবে?
ট্যাকটিক্যালি ফার্গুসনের গেমপ্ল্যানিং চেলসি ম্যাচে বেশি কিছু বদলাননি মোয়েস। সেই ৪-২-৩-১ ছকেই দল সাজিয়েছিলেন। যা গত কয়েক বছর ছিল ফার্গুসনের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডেরও ফর্মেশন। কিন্তু মোয়েসের দলকে খুব বেশি রক্ষণাত্মক মনে হল। এখানেই তফাত ফার্গুসনের সঙ্গে। বছরের পর বছর বড় ম্যাচে সব সময় আক্রমণাত্মক ট্যাকটিক্স নিতেন ফার্গুসন। এমনকী নিজের গেমপ্ল্যান মতো ম্যাচ না এগোলে খেলার মধ্যেই ‘প্ল্যান এ’ থেকে ‘প্ল্যান বি’ কিংবা ‘সি’-তেও চলে যেতে দ্বিধা করতেন না।
চেলসির বিরুদ্ধে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যদি এই ম্যাচে ফার্গুসন থাকতেন, তা হলে মনে হয় ম্যাড়ম্যাড়ে গোলশূন্য ড্র ফলাফল নিয়ে মাঠ ছাড়তেন না। বরং যখন দেখতেন যে, ফান পার্সি-রুনিরা প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিট চেলসির ‘ফাইনাল থার্ডে’ দাঁত ফোটাতে পারছে না, তখন হয়তো ৪-২-৩-১ বদলে ৪-৪-২ ফর্মেশনে চলে গিয়ে ঘরের মাঠে গোলের জন্য জোড়া স্ট্রাইকার খেলাতেন। অভিজ্ঞ কোচেরা যা সব সময় করে থাকেন। তবে নিজের প্রথম বড় ম্যাচ অনুযায়ী মোয়েসের দল খুব একটা খারাপ করেনি। টানা প্রায় তিন দশকের মেগাকোচের উত্তরসূরি হওয়া সহজ কাজ নয়। খানিকটা সময় মোয়েসকে তা-ই দিতে হবে।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের রিংয়ে। যুযুধান দুই কোচ মোরিনহো-মোয়েস।
এ বার আসা যাক মোরিনহো প্রসঙ্গে। আমার মনে হয়, চেলসির বিখ্যাত কোচ শুরু থেকে সেন্টার ফরোয়ার্ড না খেলিয়ে হয়তো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ ড্র রাখার চিন্তা নিয়েই নেমেছিলেন। আন্দ্রে সুরলের মতো অনভিজ্ঞ তরুণ ফুটবলারকে এ রকম একটা হাইপ্রোফাইল লড়াইয়ে প্রথম এগারোয় দেখে একটু অবাকই লাগল। তা-ও আবার ‘ফলস নাইন’-এ! যে ভূমিকায় সফল হওয়ার জন্য মেসির মতো স্কিল আর গোল করার মহাক্ষমতা থাকা দরকার। রোনাল্ডোর রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে চেলসিতে ফিরেও নিজের পুরনো ছক ধরে রেখেছেন মোরিনহো। সাইডব্যাকের ওভারল্যাপ নেই। ডিফেন্সের সামনে সেই দু’জন হোল্ডিং মিডিও, যাদের ফুটবলের পরিভাষায় বলা হয় ‘ব্ল্যাঙ্কেট ডিফেন্স।’ সামনে একজন মাত্র ফরোয়ার্ড। যে জায়গায় হয়তো এখনও দ্রোগবার বিকল্প অনুভব করছে চেলসি। মনে হচ্ছে, দলবদলের বাজার শেষ হওয়ার আগে অবশ্যই একটা ভাল স্ট্রাইকার কিনতে হবে মোরিনহো-কে।
গোলহীন ম্যাচেও গতি খুব ভাল থাকলেও কোনও একক দক্ষতা সে ভাবে চোখে পড়ল না। মেসি বা রোনাল্ডো যেমনটা করার ক্ষমতা রাখে। সেই গুণ ওয়েলবেক, তোরেসদের মধ্যে পেলাম না। ‘অফ-দ্য স্ট্রাইকার’-এ রুনি ম্যাচের শুরু থেকে খেললেও, সেটা আমার মতে ওর আসল জায়গা নয়। রুনি আপাদমস্তক গোলগেটার। আজ হোক বা কাল, রুনিকে ফান পার্সির পাশেই খেলাতে হবে, তার পিছনে নয়। যদি অবশ্য রুনি থাকে মোয়েসের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে!

রুনিকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলেন মোরিনহো
“যদি চেলসিতে সই করতে চাও, তবে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে জানাও।” দলবদলের নাটকে ওয়েন রুনিকে এমনই বার্তা দিয়ে রাখলেন চেলসি কোচ হোসে মোরিনহো। সোমবার রাতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-চেলসি মেগা ম্যাচের পরেই মোরিনহো সাফ বলে দেন, পুরনো ক্লাব ছেড়ে চেলসিতে সই করতে হলে স্বয়ং রুনিকে দলবদলের আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। তা-ও আবার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে। “বেশি হলে আর আটচল্লিশ ঘণ্টা অপেক্ষা করব। তার মধ্যে রুনি দলবদলের আর্জি জানালে ম্যাঞ্চেস্টারকে তৃতীয় প্রস্তাব দেব। এই ব্যাপারটা ও নিজে শুরু করেছে। ওকেই শেষ করতে হবে,” বলেন মোরিনহো। সঙ্গে যোগ করেন, “মরসুমের শুরু থেকেই রুনি ইঙ্গিত দিয়েছিল যে ও ম্যাঞ্চেস্টারে খুশি নয়। তাই ওকে চেলসিতে সই করানোর প্রস্তাব দিয়েছি।” সোমবার রাতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এক বিরল দৃশ্যে রুনিকে উৎসাহ দিতে তাঁর নাম ধরে চেঁচায় চেলসি সমর্থকরাও। কিন্তু ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যম জানাচ্ছে যে, ম্যাঞ্চেস্টার ছাড়া নিয়ে রুনি এখনও রুনি দোটানায়। তিনি দলবদলের আবেদনপত্র জমা না দিলে আঞ্জি মাকাচকালার স্ট্রাইকার স্যামুয়েল এটো-র জন্য সম্ভবত প্রস্তাব দেবেন মোরিনহো।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.