|
|
|
|
ত্রুইপাল্যান্ড বিতর্ক |
পৃথক রাজ্যের দাবির নিন্দা সিপিএমের
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
ত্রিপুরা ভাগ করে উপজাতি অধ্যুষিত ‘ত্রুইপাল্যান্ড’ গঠনের দাবি নিয়ে উপজাতি সংগঠন আইপিএফটি সরব হওয়ায় চিন্তায় পড়েছে রাজ্যের শাসক বামফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম। দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিশদে আলোচনাও হয়েছে। ঠিক হয়েছে, সিপিএম রাজনৈতিক ভাবে এই দাবির মোকাবিলায় নামবে। দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর এই শক্তিকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বিভেদকামী শক্তি’ আখ্যা দিয়েছেন। যদিও আইপিএফটি ভারতীয় সংবিধানের মধ্যে থেকে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছেন। ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গিয়ে আলাদা রাষ্ট্রের দাবি তারা তোলেননি। সুতরাং তাদের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলা রাজনৈতিক ভাবে সঠিক কিনা প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
উল্লেখ্য, আশির দশকের মাঝামাঝি গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনকে একই ভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমও একই ভাবে সুভাষ ঘিসিংয়ের সেই আন্দোলনকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যায় দেয়। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য তথা দলের তাত্ত্বিক নেতা এম বাসপুন্নাইয়া স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন বা তার মতো কোনও আন্দোলনই ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নয়। পরবর্তী পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সেই তত্ত্ব মেনেই নিজেদের বক্তব্য থেকে পিছু হঠেন। বিজনবাবু অবশ্য এখনও ওই তত্ত্ব মানতে রাজি নন।
বিজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সিপিএম ত্রিপুরা ভেঙে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিকে সমর্থন করে না।’’ তাঁর কথায়, “গত ৩০ বছর ধরেই এ ধরনের বিচ্ছিন্নতাকামী শক্তিকে রাজনৈতিক ভাবেই সিপিএম মোকাবিলা করেছে। এখনও সেটাই করবে।” আইপিএফটিকে সরাসরি উগ্রপন্থীদের দোসর বলে অভিহিত করে বিজনবাবুর বক্তব্য, “এই আইপিএফটি সংগঠন থেকেই বিজয় রাঙ্খালের আইএনপিটি তৈরি হয়েছিল। আইএনপিটি এখন কংগ্রেসের জোট সঙ্গী।” সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের অভিযোগের তির কংগ্রেসের দিকে। বিজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘উপজাতি এবং অ-উপজাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির লাভ, বামপন্থীদের ক্ষতি। দেশে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, কেন্দ্রে কোটি কোটি টাকার ‘আর্থিক দুর্নীতির’ প্রভাব যাতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে না পড়ে, সেই কারণে কংগ্রেস চাইছে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলি আরও সক্রিয় উঠুক। আইপিএফটি-র ত্রিপুরা ভাগের দাবির পিছনে কংগ্রেসের পরোক্ষ মদত রয়েছে বলে বিজনবাবুদের অভিযোগ। সিপিএমের অভিযোগ, অমবাসা, তেলিয়ামুড়ায় রাজ্যের উপজাতিদের নিয়ে নতুন রাজ্য গঠনের দাবিতে তলে তলে রাজনৈতিক তত্পরতা শুরু করেছে কংগ্রেসের জোটসঙ্গী আইএনপিটি-ও। সিপিএমের দাবি, আইপিএফটি এখনও উগ্রপন্থীদের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে জঙ্গি শিবিরের সঙ্গে এই সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের কথায়, ‘‘টিএনভি যেমন স্বাধীন ত্রিপুরা, সমগ্র উত্তর-পূর্র্বাঞ্চল নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের ডাক দিয়েছিল, এডিসি নিয়ে আলাদা ত্রিপুরা রাজ্যের দাবিতে আইপিএফটি এখন সে রকমই রাজনৈতিক স্লোগান তুলেছে।’’ এর বিরুদ্ধে সিপিএম রাজ্য কমিটি গ্রাম পঞ্চায়েত, নগর পঞ্চায়েত, এডিসি ভিলেজ-সহ রাজ্যের সর্বত্র ব্যাপক রাজনৈতিক প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
|
|
|
|
|
|