|
|
|
|
সনিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে পরোক্ষ খোঁচা, টুইট-বিতর্কে মোদী
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সনিয়া গাঁধীর আরোগ্য কামনার মধ্যেও নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে সূক্ষ্ম কটাক্ষ রেখেছেন, কংগ্রেস স্বভাবতই তা ভাল ভাবে নিচ্ছে না।
গত কাল সংসদে খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে ভোটাভুটির আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কংগ্রেস সভানেত্রী। তড়িঘড়ি তাঁকে এইমস-এ ভর্তি করানো হয়। তার পরে গভীর রাতে ছেড়েও দেওয়া হয়। বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই আরোগ্য কামনা করে বার্তা পাঠান। তার মধ্যেই বিতর্ক তৈরি করে মোদীর টুইট।
আজ সকালে সনিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মোদী তিনটি টুইট করেন। প্রথমটিতে তিনি জানান, “সনিয়া গাঁধী সুস্থ আছেন জেনে খুশি হয়েছি। ভবিষ্যতেও তিনি সুস্থ থাকুন।” পরের দুটি টুইটে সংসদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বসেন মোদী। সনিয়া কাল অসুস্থ হওয়ার পরে পায়ে হেঁটেই গাড়িতে উঠেছিলেন। মোদী এ দিন বলেন, সনিয়াকে জরুরি ভিত্তিতে হুইলচেয়ার বা স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। শুধু তাই নয়। মোদী আরও বলেন, “সনিয়াজির স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাঁকে অত্যাধুনিক অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। যদিও চিকিৎসকরাই এ বিষয়ে শেষ কথা বলবেন।”
আপাত ভাবে মোদীর টুইট সনিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংসদে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, এর মধ্যে প্রচ্ছন্ন কটাক্ষও রয়েছে। মোদী বোঝাতে চেয়েছেন, রাজনীতি নয়, সনিয়ার এখন স্বাস্থ্য উদ্ধারেই নজর দেওয়া উচিত। আজ সংসদের সেন্ট্রাল হলে সাংসদদের মধ্যে এটাই ছিল চর্চার বিষয়। অনেকেই ভাবছেন, মুখে আরোগ্য কামনা করলেও মোদী স্ট্রেচার-হুইলচেয়ার-অ্যাম্বুল্যান্সের কথা বলে সনিয়াকে আরও বেশি করে অসুস্থ প্রমাণ করতে চেয়েছেন। কিন্তু টুইটের মোড়কটি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যে, প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করাও সম্ভব নয়।
এইমসের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত রাতে আর সি ডেকার নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল সনিয়া গাঁধীকে দেখেছে। ভাইরাসঘটিত জ্বরের কারণে অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল তাঁর। কিছু পরীক্ষা করানো হয়। তবে অস্বাভাবিক কিছু মেলেনি। বিশেষ চিকিৎসারও দরকার পড়েনি তাঁর।
সনিয়া যে পুরোপুরি সুস্থ, সেটি বোঝানোর জন্য আজ মুখ খোলেন স্বয়ং রাহুল গাঁধীও। দিল্লিতে দলিত সম্মেলনের এক অনুষ্ঠানে এসে তিনি জানান, “গত কাল সনিয়াজির শরীর খারাপ হয়েছিল বটে। কিন্তু এখন তিনি ভাল রয়েছেন।” সনিয়া আজ অবশ্য সংসদে আসেননি। চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রাম নিচ্ছেন। মোদীর কটাক্ষের জবাব সরাসরি না দিয়েও রাহুল জানিয়ে দেন, আগামী মাসের ৭ তারিখ কেরলের রাজীব গাঁধী রিসার্চ সেন্টারে যাবেন সনিয়া।
শুধু কংগ্রেস নয়, মোদীর টুইট নিয়ে বিজেপির ভিতরেও একাংশের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। দলের অনেক নেতাই মনে করছেন, রাজনৈতিক লড়াই মাঠে-ময়দানে-সংসদে হয়। কিন্তু কারও অসুস্থতা নিয়ে কটাক্ষ না করাই বাঞ্ছনীয়। গত কাল রাত প্রায় পৌনে এগারোটা পর্যন্ত খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে লোকসভায়। রাতে বাড়ি গিয়ে সনিয়ার অসুস্থতার খবর পেয়েই লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ টুইট করেন, “সনিয়া গাঁধীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।” বিজেপি নেতারা ঘরোয়া স্তরে আলোচনা করছেন, রাজনৈতিক সৌজন্য বলেও একটি বিষয় রয়েছে। সেই লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করা উচিত নয়। দু’বছর আগে সনিয়া গাঁধী যখন চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান, সেই খবর শুনে বিজেপি সেদিন সংসদে রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা স্থগিত রেখেছিল। |
|
|
|
|
|