ব্যাঙ্কে রক্ষী নেই, ৭৬ লক্ষ টাকা লুঠ বোলপুরে
কোনও নিরাপত্তা রক্ষী ছিল না। এমনই একটি ব্যাঙ্ক থেকে বিনা বাধায় ভল্ট থেকে ৭৬ লক্ষ টাকা লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সকালে বোলপুর শহরের ব্যস্ততম এলাকা চিত্রা মোড়ের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঘটনা। পুলিশ সুপার সি সুধাকর জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সওয়া ন’টায় ওই ব্যাঙ্ক খোলে। প্রথমে ব্যাঙ্কে মাত্র ২-৩ জন কর্মীই ছিলেন। পরে কয়েক জন গ্রাহক আসেন। তাঁদেরই মধ্যে তিন যুবকও ছিল। তাঁরাই পরে ব্যাঙ্ককর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুঠ শুরু করে বলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি। ভেতরে তিন জন থাকলেও বাইরেও ওই দুষ্কৃতী দলের কয়েক জন পাহারায় ছিল। গোটা ঘটনায় ব্যাঙ্ক কর্মীদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিপুল পরিমাণ টাকা থাকলেও ওই ব্যাঙ্কে কেন কোনও রক্ষী ছিল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এ দিন আগে থেকেই ব্যাঙ্কে ঢুকে ‘অ্যাকশনে’ নেমে পড়েছিল ওই দুষ্কৃতী দল। ৯টা ৫০ নাগাদ ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার আরএন সিংহ ব্যাঙ্কে ঢুকতেই দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথায় পিস্তল ঠেকায়। তাঁর দাবি, “ওরা আমাকে মারধর করে মাথায় পিস্তল ঠেকেয়ে আমার চেম্বারে জোর করে ঢুকিয়ে দেয়। মোবাইল ফোনের ব্যাটারিও খুলে নেয়।”

তদন্তে পুলিশ। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্কের ভেতরে থাকা কর্মী ও অন্যদেরও দুষ্কৃতীরা পিস্তল দেখিয়ে আটকে রাখে। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার জানান, ওই দুষ্কৃতীরা ক্যাশিয়ারের জন্য অপেক্ষা করছিল। তিনি আসতেই তাঁকে আর পিওনকে নিয়ে দুষ্কৃতীরা ব্যাঙ্কের ভল্টের দিকে যায়। ভল্টের তালা খুলিয়ে ৭৬ লক্ষ টাকা বের করে ব্যাঙ্ক কর্মীদের বাইরে থেকে তালা মেরে সহজেই চম্পট দেয়। এমনকী, যাওয়ার আগে ডাকাত দল ব্যাঙ্কের সিসিটিভি-র যন্ত্রাংশও খুলে নিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে।
এ দিন ঘটনার খবর পেয়েই প্রথমে বোলপুরের এসডিপিও প্রশান্ত চৌধুরী ও পরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবস্মিতা দাস ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেন। তালা খুলে ব্যাঙ্কের ভেতরে থাকা লোকেদের উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ডাকাতির তদন্তে ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। ভবানী ভবন থেকে একটি প্রতিনিধিদল ঘটনার তদন্তে আসছেন বলেও জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনায় বেশ কয়েকটি জায়গায় পুলিশের খটকা রয়ে গিয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রথমত, বোলপুরের মতো একটি শহরে ওই ব্যাঙ্কে নিরাপত্তারক্ষী না থাকাটা আশ্চর্যের। তবে ডাকাত দল মোটামুটি তৈরি হয়েই এসেছিল। তা না হলে অল্প সময়ের মধ্যে সবাইকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বিনা বাধায় ওই বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে তারা চম্পট দিতে পারত না। গোটা ঘটনায় ব্যাঙ্কের কর্মীদেরও মোটেই সন্দেহের বাইরে রাখা হচ্ছে না।” ওই ব্যাঙ্কে রোজদিন বর্ধমানের গুসকরা থেকে পুজো করতে আসা এক পুরোহিতের ভূমিকাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এ দিন তাঁর সামনেই ডাকাতি হয়েছে। পরে বরুণ মুখোপাধ্যায় নামে ওই পুরোহিত সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, “ব্যাঙ্কে ঢুকতেই এক যুবক আমাকে প্রণাম করে ভিতরে আসতে বলল। ভিতরে ঢোকা মাত্রই পিস্তল ঠেকিয়ে বলল, ‘চুপ করে বসে যান’। তারপরে মিনিট দশেকের মধ্যে তারা ব্যাঙ্ক লুঠ করে পালাল।” এ দিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ব্যাঙ্ক থেকে দ্রুত বেরিয়ে একটি মোটর বাইক ও মেরুন রঙের চার চাকায় কয়েক জন যুবককে তাঁরা পালিয়ে যেতে দেখেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.