|
|
|
|
আনন্দplus এক্সক্লুসিভ |
বুম্বার জন্য একই মঞ্চে বলিউড-টলিউড
প্রসেনজিৎ-এর অভিনয় জীবনের ৩০ বছর। আসছেন রানি-ঐশ্বর্যা।
রাজসূয় সেলিব্রেশনে থাকছে অনেক চমক। লিখছেন কৃশানু ভট্টাচার্য |
এক জনের সঙ্গে বচ্চন পরিবারের ছেলের বিয়ে হওয়ার গুঞ্জন উঠেছিল। কিন্তু হয়নি। সে দুঃখ আজও ভুলতে পারেনি বাঙালি। আর এক জন আজ অমিতাভ বচ্চনের নাতনি আরাধ্যার মা।
প্রথম জন রানি মুখোপাধ্যায়। দ্বিতীয় জন ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। তাঁদের কলকাতায় এক মঞ্চে হাজির করাচ্ছেন কে? কে আবার? প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। হঠাৎ কী কারণে তাঁরা দু’জনে একসঙ্গে এক মঞ্চে? তাঁরা কি একসঙ্গে কোনও ছবি করছেন?
না।
আসল কথা হল আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে এই মহানগরের সব রাস্তার একমাত্র গন্তব্যস্থল হতে চলেছে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। ‘হোপ ‘৮৬’র পরে বলিউড-টলিউড মিলিয়ে এমন তারকাখচিত আসর শেষ কবে দেখেছে কলকাতা? জল্পনা তো চলতেই পারে।
জি বাংলা সিনেমা আয়োজিত ‘অপরাজিত প্রসেনজিৎ ৩০ বছর’ উপলক্ষে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মঞ্চ আলোকিত করতে মুম্বই থেকে উড়ে আসবেন ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। ‘চোখের বালি’র সেই ‘বিনোদিনী’। যে বিনোদিনী মহেন্দ্ররূপী প্রসেনজিতের সঙ্গে মাদকতাময় অভিনয়ে মাত করেছিলেন দর্শকদের।
মঞ্চে হাজির থাকার সম্মতি জানিয়েছেন প্রসেনজিতের ‘বিয়ের ফুল’-এর নায়িকা রানি মুখোপাধ্যায় এবং ‘অমর প্রেম’য়ের জুহি চাওলাও। “অভিষেক বচ্চনকেও হাজির করার চেষ্টা করছি আমরা”, জানালেন জি বাংলা সিনেমার প্রোগ্রামিং হেড রাজর্ষি দে।
|
|
এই রকমটা যদি সত্যি হয়, তা হলে সেই মাহেন্দ্রক্ষণে ঐশ্বর্যা, রানি আর অভিষেকের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে মঞ্চে তৈরি হতে পারে চূড়াম্ত নাটকীয় এক মুহূর্ত। ছেলের অনন্য অবদানে সাক্ষী থাকার জন্য মুম্বই থেকে আসতে দ্বিধা করছেন না বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও।
চ্যানেলের দাবি, ভূ-ভারতে কোনও নায়কের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কোনও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এত বড় মাপের অনুষ্ঠান কখনও হয়নি। এ বার হচ্ছে।
কারণ উত্তমকুমারের পরে টানা ৩০ বছর কোনও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নায়ক হয়ে থাকার এমন অনন্য রেকর্ড প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতো আর কেউ গড়তে পেরেছেন কি?
প্রসেনজিতের সঙ্গে দৌড় শুরু করা চিরঞ্জিত, তাপস পাল সরে গিয়েছেন চরিত্রাভিনয়ে। কিন্তু বাংলা ছবির বর্তমানদের সঙ্গে সমানে টক্কর নিচ্ছেন টলিউডের অক্ষয় অব্যয় বুম্বাদা।
মহানায়কের প্রয়াণের পরে ১৯৮৩-তে ‘দু’টি পাতা’য় নায়ক হিসেবে আবির্ভাবের পর থেকে গত ৩০ বছর ধরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ছাড়া বাংলা ছবি অচল। দেব এবং জিৎ-দের আমলেও তাঁকে সরানো যায়নি নায়কের আসন থেকে। বাংলা ছবিতে এমন বিস্ময়কর রেকর্ড গড়েছিলেন উত্তমকুমার। মহানায়কের সঙ্গে একমাত্র তুলনীয় তাঁর উত্তরসূরি প্রসেনজিৎ!
বলা বাহুল্য, এই অনুষ্ঠানকে এত বেশি বর্ণাঢ্য করার প্রয়াসের পিছনে রয়েছে শিল্পী হিসেবে প্রসেনজিতের নিজেকে ভাঙাগড়া করে, পরিশীলিত করে নতুন থেকে নতুন ভূমিকায় মেলে ধরার অদম্য পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনলস গতি। সুজয় কুট্টি বললেন, “আমাদের চ্যানেলেই প্রসেনজিৎ প্রথম বার কোনও শো হোস্ট করেছিলেন। তার তিরিশ বছরের সেলিব্রেশন তো আমরা বড় করেই করব।”
|
|
ছবি: রাসবিহারী দাস |
তাপস পাল, চিরঞ্জিত-এর পাশাপাশি হাজির থাকবেন দেব, জিৎ থেকে যিশু, হিরণ, সোহম, অঙ্কুশ। এ ছাড়া ঋতুপর্ণা, রচনা, শতাব্দী, স্বস্তিকা, শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, পায়েল-সহ প্রসেনজিতের প্রায় সব নায়িকা সে দিন আসর জমাতে ভিড় করবেন মঞ্চে। ব্যতিক্রমী হবেন না প্রসেনজিতের ‘রিল লাইফ’-এর নায়িকা থেকে ‘রিয়্যাল লাইফ’-এর সহধর্মিণী অর্পিতাও।
মোদ্দা কথায় সে দিন মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে টলিউডের অতীত এবং বর্তমান। গানের আসর মাতাবেন রূপঙ্কর এবং অনুপম রায়। চেষ্টা চলছে বাপ্পি লাহিড়িকে আনারও। গোটা অনুষ্ঠানে থাকবে মোট ২০টি আইটেম। নাচের তালিকায় আছে
দেব এবং জিতের নামও। রিহার্সালে ব্যস্ত এখন রাইমা, পাওলি, শুভশ্রী, শ্রাবন্তীরাও।
|
ঐশ্বর্যা রাই |
|
রানি মুখোপাধ্যায় |
চ্যানেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বাচ্চাদের জন্মদিনে যেমন চার দিক বেলুন, আলো দিয়ে সাজানো হয়, তেমন ভাবে সাজানো হবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামকে। দর্শকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে লজেন্স আর চকোলেট।
অনুষ্ঠান সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে আর্টিস্ট ফোরাম। পারফর্মারদের সাজপোশাক, রিহার্সাল— সব কিছুর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই সংগঠনকে। কো-অর্ডিনেটরের কাজ করছেন জুন মাল্য।
মীরের সঙ্গে সঞ্চালনায় একে একে ডেকে নেওয়া হবে মঞ্চে হাজির নায়িকাদের। সমগ্র অনুষ্ঠানটি ক্যামেরাবন্দি করার দায়িত্বে থাকবে ‘ফিশ আই’ সংস্থা। স্টার জলসার সব অনুষ্ঠান এবং মহালয়ার দায়িত্বে থাকে এই সংস্থা।
১৪ সেপ্টেম্বর তো দূর। তার আগেই আগামী শনিবার থেকেই দুর্গাপুর, বর্ধমান এবং আসানসোলে শুরু হচ্ছে প্রসেনজিৎ ফিল্মোৎসব। উদ্বোধন করবেন নায়ক নিজে।
এখন শুধু একটিই কথা। বহু বছর হল এক মঞ্চে দেখা যায়নি রানি আর ঐশ্বর্যাকে। ওঁদের কারও যেন হঠাৎ জ্বর না হয়, শরীর খারাপ না হয়। বা হঠাৎ শু্যটিংয়ের জন্য অনিবার্য কারণে আসতে পারলেন না, এমনটাও যেন না হয়। হয়তো এ সব কথাই ভাবছেন চ্যানেল আধিকারিকেরা। এ ছাড়া অনেক বিস্ময় অপেক্ষা করে আছে। উদ্যোক্তারা এখনই সব বলতে চাইছেন না।
|
প্রসেনজিৎ নিজে বললেন... |
• কেমন লাগছে?
খুব ভাল। এর আগে ‘পঁচিশ প্রসেনজিৎ’ হয়েছিল— পাঁচ বছর আগে।• কিন্তু এ বার তো আরও বড় করে হচ্ছে। বলিউড থেকেও আপনার সব নায়িকাকে নিয়ে। এটা ঈশ্বরের আশীর্বাদ। তিরিশ বছর কাজ করার পর একটা মঞ্চে উঠে সংবর্ধনা নিতে পারা ভারতের অভিনয় জগতেও খুব ‘রেয়ার’। সবার কাছে আমি খুব কৃতজ্ঞ।
• কী কী হচ্ছে সে দিন?
সত্যি বলতে কী আমি জানি না। পুরো শো-টাই করছে জি বাংলা। আর এদের সাহায্য করছে আর্টিস্ট ফোরাম। আমি শুধু ভাবছি, এটা দেখে পরের জেনারেশন যেন উৎসাহ পায় যে, পেশায় আন্তরিকতা থাকলে একদিন ওদের জন্যও সংবর্ধনা অপেক্ষা করে থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সে দিন আসতে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। উনি এলে আমি খুব খুশি হব।
• এই মুহূর্তের অনুভূতি!
চাই এমন ভাবে কাজ করে যেতে যে, আমার পঞ্চাশ বছর পূর্তিটাও সেলিব্রেটেড হবে। |
|
|
|
|
|
|