এই প্রথম ভোটের ময়দানে দাঁড়িয়েছিলেন। জিতেছেন বড় ব্যবধানে। এবং পুরস্কার হিসাবে পেলেন জেলা সভাধিপতির পদ!
যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দলের বিশ্বস্ত ও পুরনো সৈনিকের উপরেই ভরসা রাখলেন দলনেত্রী। বাঁকুড়া জেলা সভাধিপতির মুকুট তুলে দিলেন অরূপ চক্রবর্তীর হাতেই। সোমবার কলকাতার টাউন হলে এই সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল
|
অরূপ চক্রবর্তী। |
নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা কো-চেয়ারম্যান পদে ছিলেন অরূপবাবু। প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্রের খুব কাছের মানুষ হিসাবেই বরাবর পরিচিত অরূপবাবু।
সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনিই ছিলেন জেলায় দলের সবচেয়ে হেভিওয়েট প্রার্থী। অথচ এ বারই প্রথম নির্বাচনী রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ। এর আগে যাবতীয় নির্বাচনে এই জেলায় তৃণমূলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকতেন তিনিই। ভোটের প্রচার থেকে শুরু করে সংগঠন সামলানোসব কাজেই তিনি সমান দক্ষ বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের নিচু স্তরের কর্মীরা। দলের ভিতরে তাঁর প্রভাব ও জনপ্রিয়তা রয়েছে যথেষ্ট। বাঁকুড়া ১ ব্লকের ২৫ নম্বর জেলা পরিষদ আসনের টিকিটটি অরূপবাবুর হাতে আসার পরেই সম্ভাব্য সভাধিপতি হিসেবে তাঁর নাম প্রথম উঠে এসেছিল। অথচ তখনও ভোটে জেতা ছিল বহু দূরের লক্ষ্য। ভোটে তিনি ৩ হাজার ৪১৭ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দেন সিপিএমের দাপুটে নেতা সমর মণ্ডলকে।
ভোট-পরবর্তী সময়ে অবশ্য সভাধিপতি হিসাবে আরও কয়েক জন তৃণমূল নেতার নাম দলের অন্দরে উঠে এসেছিল। কিন্তু, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত অরূপবাবুর উপরেই আস্থা রেখেছেন। এ দিন টাউন হলে সভাধিপতি হিসেবে অরূপবাবুর নাম ঘোষণা হওয়ার পরেই তাঁর কাছের নেতা-কর্মীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। জেলার এক তৃণমূল নেতার কথায়, “যোগ্য লোকই সভাধিপতি হয়েছেন। অরূপবাবু গোটা জেলার কোথায় কী সমস্যা আছে, তার খবরাখবর রাখেন। সাংগঠনিক ক্ষমতাও অসাধারণ।” বৈঠক শেষে টাউন হল ছেড়ে বেরিয়ে অরূপবাবু বলেন, “দল আমার উপর আস্থা রেখেছে। আমি সেই আস্থার মর্যাদা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করব। জেলাবাসীর প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। এই জেলার সার্বিক উন্নয়ন ঘটানোই আমার লক্ষ্য।” বাঁকুড়ার বিরাট জঙ্গলমহলের মানুষের কথা ভেবে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি করা হয়েছে রানিবাঁধের তৃণমূল নেত্রী বিভাবতী টুডুকে।
বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “দলের সর্বসম্মতিক্রমেই অরূপ চক্রবর্তীর হাতে এই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, তিনি এই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন।” আর সদ্য প্রাক্তন সভাধিপতি, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পার্থপ্রতিম মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, “নতুন সভাধিপতির কাছ থেকে আমাদের আশা, তিনি রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে জেলার স্বার্থে কাজ করেন।” |