পতনের ফাঁদ থেকে বার করে আনা যাচ্ছে না টাকাকে। সোমবার ফের প্রতি ডলারে টাকা পড়ল ১১০ পয়সা। ফলে এক ধাক্কায় মুছে গেল শুক্রবারের ১৩৫ পয়সা বৃদ্ধির বেশির ভাগটাই। বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৪.৩০ টাকা।
মাসের শেষে আমদানিকারীদের অতিরিক্ত ডলারের চাহিদা মেটাতে গিয়েই ডলারের জোগান কমে গিয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে বাজার সূত্রের খবর। ছিল বিদেশি লগ্নিকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপও। গত ছ’দিনের লেনদেনে তারা ৭৫ কোটি ডলারের (৪৮০০ কোটি টাকা) শেয়ার বিক্রি করেছে। বিদেশি সংস্থার লগ্নি ফিরিয়ে নেওয়া এবং টাকার নিম্নগতিই এ দিন উত্থান ধরে রাখতে দেয়নি সেনসেক্সকেও। লেনদেনের শুরুতে প্রায় ২০৯ পয়েন্ট বাড়লেও সেনসেক্স দিন শেষ করে মাত্র ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে। তবে সূচক বন্ধ হয় ১৮,৫৫৮.১৩ অঙ্কে, যা গত প্রায় এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ।
এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস, আরও নীচে নামবে টাকা। রয়টার্সের সমীক্ষায় ১৭ জন অর্থনীতিবিদদের মধ্যে ১১ জনেরই মত, ডলারে টাকা নেমে যাবে ৬৯-এ। সেপ্টেম্বরেই এই তলানি ছুঁয়ে তারপর অবশ্য টাকা ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে ইঙ্গিত দেন তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নয়া গভর্নর রঘুরাম রাজন ডলারে টাকার স্থিতি ফেরানোকেই অগ্রাধিকার দেবেন। মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানো এবং আর্থিক বৃদ্ধিকে টেনে তোলার উপরেও তিনি টাকার অত্যধিক পতন ঠেকানোকেই স্থান দেবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থনীতির এই টালমাটাল অবস্থায় রেটিং নিয়ে এ দিনই হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ-ও। সংস্থার বিশ্লেষক আর্ট উ সোমবার জানান, চলতি ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ভারতের ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকবে না বলেই তাঁদের ধারণা। ভারতের বৃদ্ধির হার, মূল্যবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতির উপরেও নজর রাখছে তারা। এর ভিত্তিতেই ফিচ জানিয়েছে, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই ভারতের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে রেটিং কমানো হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন উ। এই মুহূর্তে স্থিতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভারতের জন্য ফিচ-এর রেটিং ‘বিবিবি মাইনাস’। এর ঠিক পরের ধাপেই রয়েছে ‘জাঙ্ক’ রেটিং, যা দেখে সচরাচর কোনও দেশে লগ্নি করা বা ঋণদানের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে আন্তর্জাতিক মহল। |