স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সামনেই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। রবিবার কৃষ্ণনগরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে যান চন্দ্রিমাদেবী। তার কিছুক্ষণ আগে নদিয়ার চাপড়ার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা নয় মাসের তৃষা পালের মৃত্যু হয়। তার বাড়ির লোকের দাবি, চিকিৎসার গাফিলতির জন্যই মৃত্যু হয়েছে তৃষার। শিশুটির খুড়তুতো দাদা রিন্টু পাল বলেন, “বোনের ঠাণ্ডা লেগেছিল। শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল। তাই চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারা এই হাসপাতালে রেফার করে। কিন্তু এই হাসপাতালের ডাক্তাররা যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়ায় বোন মারা গিয়েছে।” হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দত্ত অবশ্য বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখেছি চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ সত্যি নয়।”
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বক্তব্য, শিশুটিকে অনেক দেরি করে হাসপাতালে নিয়ে আসায় চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায়নি। তবে যতটুকু সম্ভব করা হয়েছে। তৃষার পরিবারের দাবি, মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে চেয়েছিলেন। চন্দ্রিমাদেবী যে ঘরে বসে বৈঠক করছিলেন সেই ঘরের বন্ধ দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু চন্দ্রিমাদেবী তাঁদের সঙ্গে দেখা না করেই চলে যান। চন্দ্রিমাদেবীর বক্তব্য, “কেউ মারা গেলে পরিবারের লোকেরা নানাভাবে আবেগ প্রকাশ করেন। আমি সেই আবেগকে সম্মান জানাই।” |
শক্তিনগর হাসপাতালে আলোচনায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।— নিজস্ব চিত্র। |
চন্দ্রিমাদেবী এ দিন হাসপাতালের রোগীদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটির নদিয়া জেলার সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “রোগীদের সঙ্গে কথা না বললে হাসপাতালের প্রকৃত সমস্যা জানবেন কী করে? কিন্তু মন্ত্রী তা করেননি। তিনি হাসপাতালের সমস্যা সমাধানে কতটা আন্তরিক তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেল।” চন্দ্রিমাদেবীর জবাব, “আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা সমস্যার কথা বলেছেন।” চন্দ্রিমাদেবীর সঙ্গে এ দিন ছিলেন রাজ্যের কারিগরী শিক্ষা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসও। তিনি বলেন, “এই বৈঠকটা ছিল মূলত হাসপাতালের পরিকাঠামো বিষয়ে। তাই রোগীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি।” এই হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ, দাললারাজ বন্ধ করার বিষয়েও জানান তিনি।
অন্য দিকে, রাজ্যে শীঘ্রই আরও ৫২টি হাসপাতালে ফেয়ার প্রাইস শপ চালুর কথা জানান চন্দ্রিমাদেবী। রবিবার রানাঘাটে এক চক্ষু শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে তিনি বলেন, “প্রথম পর্যায়ে ৩৫টি ফেয়ার প্রাইস শপ চালু হয়েছে। এর ফলে গরীব মানুষ অনেক টাকায় ওষুধ কিনতে পারছেন। এ ব্যাপারে টেন্ডার ডাকার কাজও শেষ হয়েছে।” |