রিপোর্ট নিয়েও রয়েছে সংশয়
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই মর্গে, ময়না-তদন্তও রেফার কলকাতায়
য়না-তদন্তের জন্য কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা অটোপসি সার্জন নেই। তাই ময়না-তদন্তের কাজ সারতে হচ্ছে হাসপাতালের সাধারণ মেডিক্যাল অফিসার বা অন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের। অভিযোগ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় কখনও দেহ রেফার করে দেওয়া হচ্ছে কলকাতার নানা হাসপাতালে। কখনও সাধারণ মেডিক্যাল অফিসারদের তৈরি ময়না-তদন্তের রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও তৈরি হচ্ছে সংশয়। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের পুলিশ-মর্গের ছবিটা এরকমই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন জেলা হাসপাতালের ‘মেডিকোলিগাল’ মেডিক্যাল অফিসার অজিত বিশ্বাস। পরবর্তী কালে তাঁকে আবার ওই পদে পুনর্নিয়োগ করা হয়। চলতি বছরেই ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ময়না-তদন্তের জন্য কোনও মৃতদেহ কলকাতায় রেফার করা হয়নি। মে মাসে মাত্র একটি, জুন মাসে তিনটি মৃতদেহ রেফার করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৯ জুলাই কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ওই মেডিক্যাল অফিসারের। তারপর থেকে কোনও রকম বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই ময়না-তদন্ত চলছে। পরিসংখ্যান বলছে ৯ জুলাই থেকে ২৪ অগস্ট পর্যন্ত ৫টি মৃতদেহ কলকাতায় পাঠানো হয়ে গেছে বলে জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলে এত মৃতদেহ রেফার করার প্রয়োজন হত না।
শুধু কি রেফার? এই রিপোর্ট কতটা আইনোপযোগী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকরাই। এখন নিয়মিত ময়না-তদন্ত করতে হচ্ছে জেলা হাসপাতালের সার্জন রাহুল গুপ্তকে। রাহুলবাবু বলেন, “ছাত্র জীবনে ময়না-তদন্ত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছি মাত্র। কিন্তু আমরা কেউ বিশেষজ্ঞ নেই। তাই আমাদের কাছ থেকে আইনোপযোগী মতামত আশা করাটা অন্যায়।” তিনি বলেন, “অনেক সময় আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় আইনজীবীর কাছ থেকে নানারকম অসম্মানজনক কথা শুনতে হচ্ছে।”
প্রশ্ন তুলছেন আইনজীবীরাও। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না হওয়ায় ওই চিকিৎসকদের মতামত আইনের চোখে সব সময় গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। কৃষ্ণনগর জেলা আদালতের আইনজীবী সামসুল ইসলাম মোল্লা বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে ময়না-তদন্ত না হওয়ায় সেই সব রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে। সেই রিপোর্টের কতটা যথাযথ তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকে যাচ্ছে।” জেলার ২১টি থানার মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালের পুলিশ মর্গে কৃষ্ণনগর (সদর), তেহট্ট ও রানাঘাট মহকুমার ১৩টি থানার ময়না-তদন্ত হয়। মৃতদেহ কলকাতায় পাঠালে মৃতের পরিবারের সময় ও অর্থই শুধু খরচ হয় না, রিপোর্ট আসতেও দেরি হয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন মৃতের পরিবার।
জেলা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দত্ত বলেন, “বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ফলে সাধারণ মেডিক্যাল অফিসার বা অন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে ময়না-তদন্ত করাতে বাধ্য হচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “একটু জটিলতা থাকলেই মৃতদেহটি ময়না-তদন্তের জন্য কলকাতায় স্থানান্তরিত করতে হচ্ছে। কখনও বা মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে হচ্ছে।”
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অধীপ ঘোষ বলেন, “এটা সত্যি যে, জেলা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতর জানে।” বিষয়টি নিয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরিন্দম দত্ত চৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও জেলাশাসক পি বি সালিম বলেন, “জেলা সদর হাসপাতালের পুলিশ মর্গে ময়না-তদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের জন্য যা করণীয় জেলা প্রশাসনের তরফে তা করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.