দীর্ঘদিন পরে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ব্লকের রামকিশোর গ্রাম পঞ্চায়েতটি দখল করল সিপিএম।
পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯৮২ সালের পর থেকে ওই পঞ্চায়েত কংগ্রেস এবং পরে তৃণমূলের দখলে ছিল। এতদিন জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও তার প্রভাব পড়েনি এখানে। কিন্তু এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ওই পঞ্চায়েতটির ক্ষমতা দখল করেছে সিপিএম। পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ১৯। তার মধ্যে সিপিএম পেয়েছে ১১টি আসন। তৃণমূল ৮টি। গত নির্বাচনে তৃণমূলের দখলে ছিল ১২টি আসন। ৪টি পেয়েছিল সিপিএম। এ বার নির্বাচনে তাঁদের দল যে এভাবে ঘুরে দাঁড়াবে তা ভাবতে পারেননি জেলার বাম কর্মী-সমর্থকরাও। পাশাপাশি একইভাবে হতাশ তৃণমূল নেতৃত্বও।
তবে এ বার নির্বাচনে তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানোর পিছনে ‘নতুন মুখ’-কেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন সিপিএম নেতৃত্ব। এ বার নির্বাচনে ১৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনই ছিলেন নতুন। এঁরা প্রত্যেকেই প্রথমবারের জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। ভোটাররাও যে নতুন মুখ চাইছেন, এই ঘটনাই তাঁর প্রমাণ বলে মনে করছেন রাজনীতিকদের একাংশ। এই পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হওয়া অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ নাসিমা বিবি এ বছরই প্রথম ভোট দেওয়ার অধিকার পান। দলের নির্দেশে ভোটের ময়দানে লড়াইয়ে নামেন তিনি। ১৭ নম্বর বুথ কালিতলা গ্রাম থেকে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে তিন ভোটে হারিয়ে জয়ী হন। উপপ্রধান হয়েছেন ১৩৮ নম্বর বুথ রামকিশোর গ্রাম থেকে জগন্নাথ প্রামাণিক। তাঁরও ভোটের ময়দানে লড়াই এই প্রথম।
কুলপি ব্লকের সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য সমীর সর্দার বলেন, “নতুন মুখই আমাদের ভাল ফলের মূল কারণ। ২০ বছর পরে আমরা ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ফিরলাম।” অন্যদিকে, এই হার নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রধান কার্তিক মণ্ডলের বক্তব্য, “নির্বাচনে হার জিত তো আছেই।” যদিও ব্লকের তৃণমূলের যুব সভাপতি প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “এমন ফল কী ভাবে হল বুঝতে পারছি না। একবারও ভাবিনি পঞ্চায়েতটি হাতছাড়া হতে পারে। দলীয় ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
গত মঙ্গলবার বোর্ড গঠনের পর স্বভাবতই উচ্ছ্বাস দেখা যায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও বিজয় মিছিল করে সিপিএম। |