এক দিকে, নির্বাচনী বৈঠকে ‘ব্রাত্য’ হয়ে পড়ায় বাংলা নির্বাচকদের ক্ষোভ। রীতিমতো তাঁরা ফুটছেন। অন্য দিকে, ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট তুলে দেওয়া নিয়ে কমিটি সদস্যদের কারও কারও প্রবল অসন্তোষ প্রর্দশন।
আলাদা দুই বিষয়। কিন্তু তাতে কী? দু’টো ভিন্ন বিষয়কে সামলাতে আচমকাই প্রশাসনিক সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে সিএবি।
ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট কমিটি তুলে দেওয়া নিয়ে একদফা প্রশ্ন ও অসন্তোষের মাঝে যে আরও একটা ব্যাপার সিএবি প্রশাসনকে সঙ্কটপূর্ণ পরিস্থিতির মুখে ফেলে দিতে চলেছে, বোঝা যায়নি। আন্দাজ পাওয়া যায়নি, আপাত-নিরামিষ সিএবি-র ঘরোয়া চ্যালেঞ্জার ট্রফির দল নির্বাচনকে ঘিরে আবহাওয়া এমন গরম হয়ে উঠতে পারে!
দল নির্বাচন এখনও হয়নি। আগামী দু’এক দিনে হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই সেটা নিয়ে যেন দু’টো পক্ষ তৈরি হয়ে গিয়েছে। এক দিকে, সিএবি যুগ্ম সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়। অন্য দিকে, অসন্তুষ্ট নির্বাচন কমিটি। প্রকাশ্য বিরোধিতা এখনও হয়নি। কিন্তু কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচনী বৈঠকের দিন সেটা হলে বিশেষ অবাক হওয়ার থাকবে না।
জটটা কোথায়?
বুচিবাবু টুর্নামেন্টের দল নির্বাচনী বৈঠকে নির্বাচকদের ‘ব্রাত্য’ করে দেওয়ার পর থেকে দু’পক্ষে ঝামেলা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সিএবি সচিব স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছিলেন, বার্ষিক সাধারণ সভার পর নির্বাচন কমিটি নতুন করে এখনও গঠন হয়নি, বর্তমানে যেহেতু কমিটির সরকারি অস্তিত্ব নেই, তাই ডাকা হয়নি। তার আগেও নির্বাচকদের কেউ কেউ সিএবি সচিবের কাজকর্মে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রেসিডেন্ট ডালমিয়া পর্যন্ত গেলেও অসূয়া এই পর্যায়ে পৌঁছয়নি। জানা গেল, চ্যালেঞ্জার ট্রফির দল নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে চাইছেন নির্বাচকরা। সিএবি সচিবের তরফ থেকে কোনও সরকারি আমন্ত্রণ না এলে নাকি যাওয়া হবে না। চ্যালেঞ্জারের দলও সেক্ষেত্রে তাঁদের নির্বাচিত হবে না। ১৫ সেপ্টেম্বরের পরে নতুন নির্বাচন কমিটি গঠনের সময় কয়েকটা প্রশ্নের সদুত্তর চাওয়া হচ্ছে। যেমন সচিব যদি কোনও ক্রিকেটারের নাম প্রস্তাব করেন, তা হলে তাঁকে বলতে হবে কেন সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের নাম প্রস্তাব করা হচ্ছে। ঠিক তেমনই জানাতে হবে, নির্বাচকদের দায়িত্ব কী সারা বছরের? নাকি যত দিন কমিটির অস্তিত্ব থাকবে শুধু তত দিন?
এবং এখানেও শেষ নয়। আরও আছে। যেটা শেষ পর্যন্ত ঘটলে সিএবি-র সঙ্কট আরও বাড়বে।
এক নির্বাচক রবিবার পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, চ্যালেঞ্জার ট্রফির দল নির্বাচনী বৈঠকে তিনি যদি আমন্ত্রণ না পান, তা হলে ইস্তফা দিয়ে দেবেন! তাঁর বক্তব্য, বর্তমানে বাংলা নির্বাচকদের স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। যা আগে দেখা যায়নি। আর নির্বাচকদের দূরে রেখে বারবার সচিবের টিম করে ফেলা তাঁর পক্ষে আর হজম করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং কোনও কিছু বদল না হলে সরে যাওয়া ভাল!
পরিস্থিতি দেখেশুনে কোনও কোনও সিএবি কর্তার মনে হচ্ছে, নির্বাচকদের ক্ষোভ সামলাতে খুব তাড়াতাড়ি না স্বয়ং সিএবি প্রেসিডেন্টকে নামতে হয়। এবং শোনা গেল, ঘটনার গতিপ্রকৃতিও নাকি সে দিকেই। |