আইবিএল বদলে দেবে ভারতের গ্রাফ, বলছেন মধুমিতা
‘ব্যাডমিন্টনের সচিন-সৌরভকে পেয়ে গেল ভারত’
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়ার পর তাঁর সম্পর্কে বলা হচ্ছিল, সাইনা নেহওয়ালের কেরিয়ার হয়তো শেষের দিকে।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেই তাঁর ব্রোঞ্জ জয় দেখে বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, এ বার বোধহয় ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে সিন্ধু-যুগ শুরু হয়ে গেল। শনিবার টাইন বাউনের বিরুদ্ধে জেতার পর যে রব আরও জোরদার হল।
শনিবার রাতে কোর্টের ধারে বসে সিন্ধুর ম্যাচ দেখতে দেখতে আট বারের মেয়েদের জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন মধুমিতা সিংহ বিস্তের উপলব্ধি, ভারতের সৌভাগ্য যে ব্যাডমিন্টনে একই সঙ্গে সাইনা-সিন্ধুর মতো দু’জন সুপারস্টারকে পেয়েছে। “ঠিক যেমন ভারতীয় ক্রিকেট এক সময় একসঙ্গে পেয়ে গিয়েছিল সচিন-সৌরভকে। ওরা যেমন ভারতীয় ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ করেছিল, ঠিক তেমনই ভারতীয় ব্যাডমিন্টন উজ্জ্বল হবে সাইনা-সিন্ধুর জৌলুসে। আমি কারও তুলনা করছি না, তবে এটুকু বলব, ভারতীয় ব্যাডমিন্টনেও সচিন-সৌরভ এসে গিয়েছে।”
গোপীচন্দ অ্যাকাডেমির আর এক ‘প্রোডাক্ট’ পুসরলা বেঙ্কট সিন্ধুর হাতে টাইন বাউনের হার দেখার পর বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কোনও এক আপাত নির্জন অংশ থেকে মোবাইলে কথাগুলো বলার সময়ও বেশ চিৎকার করতে হচ্ছিল মধুমিতাকে। তিন বারের অল ইংল্যান্ড খেতাবজয়ীকে এ ভাবে কোনও ভারতীয়র হাতে নাস্তানাবুদ হওয়ার দৃশ্য দেখে স্টেডিয়ামের হাজার চারেক দর্শক যে তখন প্রবল উত্তেজিত।
চারপাশের তুমুল আওয়াজের সঙ্গে লড়াই করে আনন্দবাজারকে মধুমিতা বললেন, “টাইন বাউনের এখন বয়স হয়ে গিয়েছে ঠিকই। অবসর ভেঙে এখানে এসে খেলছে ও। কিন্তু ওর বেসিক আর অভিজ্ঞতার কথা তো অস্বীকার করা যাবে না। সে দিক থেকে দেখতে গেলে সিন্ধু দারুন একটা মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলল।” এর আগে সাইনাও প্রাক্তন বিশ্বসেরা বাউনকে হারিয়েছেন পাঁচ বার। এতদিন সেই স্বাদ পাননি সিন্ধু। এ বার পেলেন। তা হলে কি সাইনাকে ছোঁয়ার দিকে ছুটে চলেছেন সিন্ধু? মধুমিতার বক্তব্য, “ও যে ভাবে এগোচ্ছে, সে রকমই যদি এগোতে থাকে, তা হলে এমনটা হলেও অবাক হব না। সিন্ধুর মধ্যে সেই মশলা আছে। মালয়েশিয়ার গ্রাঁ প্রি জেতার পরই তো বোঝা গিয়েছে সে কথা। তবে আবার বলছি, কে কাকে টপকে যাবে, সেটা বড় কথা নয়। দু’জনকেই একসঙ্গে পেয়ে গেলাম আমরা।”

সিন্ধু: অপ্রতিরোধ্য।

সাইনা: আইবিএলে অপরাজিত।
সাইনা বা সিন্ধুর মধ্যে কাউকে এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখতে রাজি নন মধুমিতা। বললেন, “দু’জনের মধ্যে তুলনা করতে আমি রাজি নই। দু’জনের দুর্বলতা যেমন এক নয়, শক্তিও তেমন ভিন্ন। তাই ওদের মধ্যে তুলনা করা যাবে না।”
সিন্ধুর শক্তি তাঁর অলরাউন্ড গেম, মনে করেন মধুমিতা। বললেন, “সব দিক থেকেই নিজেকে তৈরি করে ফেলেছে ও। দুর্দান্ত স্ম্যাশ করছে যেমন, তেমন রিটার্নও। বাউনের বিরুদ্ধে দেখলাম, কী জাজমেন্ট। তা ছাড়া দুর্দান্ত ফিটনেস। এখনকার ব্যাডমিন্টনে যা গতি, তা সামলাতে গেলে ফিটনেস সর্বোচ্চ জায়গায় থাকা দরকার। সেই জায়গাতেই আছে ও।”
উঠে এল আইবিএল প্রসঙ্গ। মধুমিতা বলছেন, “আন্তর্জাতিক সার্কিটের চেয়ে আইবিএলে তো আবার বেশি গতি। ২১-২০ হলেও গেম জেতা যায়, শেষ গেম ১১-য়। এগুলো আইবিএল-কে আরও গতি এনে দিয়েছে। এখানে সাফল্য পেতে হলে সেরা রাস্তা সেরা ফিটনেস।”
নিয়ম-কানুনে অদল বদল করে নিয়ে খেলাটাতে আরও গতি বাড়িয়ে দিয়ে ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে যে বিপ্লব আনা হল, তাতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই প্রাক্তন জাতীয় তারকার। বরং তিনি খুশি, তাঁর সময়ে যা পাননি, এখনকার ব্যাডমিন্টন প্লেয়াররা তা ভরপুর পাচ্ছেন। “দুনিয়ার সেরা প্লেয়ারদের সান্নিধ্য পেয়ে তাদের কাছ থেকে আমাদের খেলোয়াড়রা কত সমৃদ্ধ হতে পারছে বলুন তো? নিয়ম বদল হোক, গতি বাড়ুক, তাতে অসুবিধা নেই। ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে যে বিপ্লব এল, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। দেখবেন, ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের গ্রাফটা এ বার বদলে যাবে,” বললেন মধুমিতা।
ব্যাডমিন্টন দেখতে গ্যালারি ভর্তি লোক, এমন দৃশ্য বহু যুগ দেখেননি তিনি। “এটাই আইবিএলের সবচেয়ে বড় সাফল্য। ব্যাডমিন্টন আসলে কত জনপ্রিয়, তা বোঝা গেল এ বার,” বললেন এককালের সেরা মহিলা ব্যাডমিন্টন তারকা।

পুরনো খবর:

লি জিতলেও মুম্বই হারল
স্টেডিয়ামে এয়ারকন্ডিশনিং ব্যবস্থা বিকল হয়ে যাওয়ায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন লি চং উই। শনিবার আইবিএলেও তেমনই অবস্থা ছিল বেঙ্গালুরুর স্টেডিয়ামে। তবু লি খেললেন এবং জিতলেন। কিন্তু হেরে গেল তাঁর মুম্বই মাস্টার্স। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত মুম্বইকে ৩-২-এ হারিয়ে আইবিএলের সেমিফাইনালে ওঠার আশা উজ্জ্বল করে তুলল পিভি সিন্ধুর আওয়াধি ওয়ারিয়র্স। পাঁচ ম্যাচের টাই ২-২ হয়ে যাওয়ার পর শেষে মিক্সড ডাবলসে জিতে টাইয়ে জয়ী হয় পি ভি সিন্ধু, গুরুসাই দত্তদের দল। এ দিন শুরুতে ভ্লাদিমির ইভানভের কাছে গুরুসাই দত্ত হেরে যাওয়ায় পিছিয়ে পড়ে আওয়াধি। ইভানভ জেতেন ২১-১৮, ২০-২১ ও ১১-৯-এ। মেয়েদের সিঙ্গলসে টাইন বাউনকে ২১-১২, ১৯-২১ ও ১১-৮-এ সিন্ধু হারানোর পর সমতা আনে আওয়াধি। পুরুষদের ডাবলসে আওয়াধির জুটি মার্কিস কিদো ও ম্যথিয়াস বো জিতে এগিয়ে গেলেও এর পর বিশ্বের এক নম্বর মুম্বইয়ের লি চং উই ২১-১৫, ২০-২১, ১১-৫-এ শ্রীকান্তকে হারিয়ে টাই ২-২ করে দেন। শেষ পর্যন্ত কিদো ও বার্নাদেথ জুটি মিক্সড ডাবলস জিতে আওয়াধিকে জিতিয়ে দেন। চার ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পেয়ে আওয়াধি এখন চার নম্বরে। হায়দরাবাদ ও মুম্বই ১৫ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম দুই স্থানে। মুম্বই অবশ্য একটি বেশি (৫) টাই খেলেছে। তিনে পুণে পিস্টন (১৪)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.