ডিজিটাল কেব্ল টিভি পরিষেবার আবেদনপত্র জমা না-দেওয়ার জন্য টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ট্রাই)-র নির্দেশ মেনে কলকাতায় শনিবার কলকাতায় প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলেন মাল্টি সার্ভিস অপারেটরেরা (এমএসও)।
নিয়ম অনুযায়ী, এই পরিষেবার জন্য গ্রাহকের একটি আবেদনপত্র পূরণ করে স্থানীয় কেব্ল অপারেটরের কাছে জমা দেওয়ার কথা। কেব্ল অপারেটর সেটি জমা দেবেন এমএসও-র কাছে। ওই আবেদনপত্রে গ্রাহক সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের পাশাপাশি তিনি কোন চ্যানেল বা চ্যানেলের প্যাকেজ নিচ্ছেন, তারও উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক। এই সব কিছু জানিয়ে আবেনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৩ অগস্ট বেঁধে দিয়েছিল ট্রাই। ট্রাই-সূত্রের খবর, কলকাতার গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩২ লক্ষ হলেও ওই সময়সীমার মধ্যে মাত্র ৫০ শতাংশের মতো গ্রাহক আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। যাঁরা তা দেবেন না, শনিবার থেকেই তাঁদের কেব্ল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। আবেনপত্র জমা না-দেওয়া গ্রাহকের সংযোগ বন্ধ না-করলে সংশ্লিষ্ট এমএসও-র বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে ট্রাই।
শহরের অন্যতম এমএসও মন্থনের কর্তা সুদীপ ঘোষ বলেন, “যাঁরা এখনও আবেনপত্র জমা দেননি, ট্রাই-এর নির্দেশ মেনে আমরা এ দিন থেকেই তাঁদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করতে বাধ্য হয়েছি। তবে অনেকেই সংযোগ বন্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবেনপত্র জমা দিয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের সংযোগ ফের চালু করে দেওয়া হচ্ছে।” বস্তুত, শুক্রবার থেকেই কেব্ল অপারেটরের অধিকাংশের কাছে আবেনপত্র জমা দেওয়ার হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, তাঁদের চ্যানেল সংক্রান্ত কোনও তথ্যই যথাযথ ভাবে জানানো হয়নি। ফলে একেবারে শেষে মুহূর্তে আবেনপত্র জমা দিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এমনকী কোথাও কোথাও কেব্ল অপারেটরেরা গ্রাহকদের বলছেন, তাঁদের আদৌ কিছু জমা দিতে হবে না।
যদিও এমএসও এবং কেব্ল অপারেটরদের পাল্টা দাবি, এ নিয়ে যথেষ্ট প্রচার করা হয়েছে। টিভির পর্দায় নিয়মিত ‘স্ক্রোল’-ও চলেছে বহু দিন ধরে। আবেদনপত্র ও চ্যানেলের দরও জানানো হয়েছে। বরং গ্রাহকেরা এখন যতটা যত্পরতা দেখাচ্ছেন, আগে তা দেখা মেলেনি।
এই বিতর্ক চললেও ট্রাই অবশ্য সময়সীমা শিথিল করার কোনও রকম ইঙ্গিত দেয়নি। ট্রাই-এর এক কর্তা এ দিন বিকালে বলেন, “গ্রাহকদের কোনও অসুবিধা হোক, আমরা তা চাই না। কিন্তু বারবার সময়সীমা পিছোলে এই ব্যবস্থা সুষ্ঠু ভাবে চালুই করা যাবে না। বরং গ্রাহকের স্বার্থেই এই ব্যবস্থা দ্রুত চালু হওয়া দরকার। কারণ তা হলে গোটা ব্যবস্থায় আরও স্বচ্ছতা আসবে। গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে কি না, তাও সহজে বোঝা যাবে। তাই গ্রাহকেরও উচিত এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে এগিয়ে আসা।”
তিনি জানান, আবেনপত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় তাঁরা প্রতি দিন নজরদারি করছেন। আজ, রবিবারও নজরদারি চলবে। আগামী কাল সোমবার, গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ফের তাঁরা বৈঠকে বসবেন। |