রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে ভারতের ভূখণ্ড ও জল পড়শি দেশের হাতে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার কেন্দ্রকে এই অভিযোগেই বিঁধলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুকে নিজের পোস্টে মমতা অভিযোগ করেছেন, এর আগে অসম ও ত্রিপুরার জমি এই পড়শি দেশের হাতে ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এই চুক্তি রূপায়িত হলে পশ্চিমবঙ্গের ১৭ হাজার একর জমি বাংলাদেশে চলে যাবে। বদলে আসবে মাত্র ৭ হাজার একর জমি।
তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ কেন্দ্রীয় বিদেশসচিবকে চিঠি লিখে স্থলসীমান্ত চুক্তিকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছিলেন। শনিবার আনন্দবাজার পত্রিকায় এই চিঠি প্রকাশিত হয়। মমতা এ দিন রাতেই ফেসবুকে অভিযোগ করেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার একটি চিঠি ফাঁস করেছে।’ মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘স্থলসীমান্ত চুক্তিটি নিয়ে রাজ্য সরকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও দুই বিদেশমন্ত্রীর (প্রাক্তন ও বর্তমান) সঙ্গে গত দু’বছরে বহু বার কথা বলেছে। জানানো হয়েছে, যাদের জমি হস্তান্তর করা হচ্ছে, তাদের মতামত নেওয়া দরকার। কিন্তু দেখা গেল রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে, বাসিন্দাদের মতামত ছাড়াই কেন্দ্র জমি বিনিময় করতে এগোচ্ছে।’ মমতার অভিযোগ, তিস্তা চুক্তির সময়েও একই জিনিস ঘটেছিল। চুক্তির খসড়া নিয়ে রাজ্যকে এক রকম কথা বলেছিল কেন্দ্র, পরে যখন তা চূড়ান্ত হয়ে সামনে এল দেখা গেল তাতে অন্য কথা রয়েছে। তৃণমূল নেত্রী জানিয়েছেন, এই জন্যই প্রথমে এগিয়েও পরে তিস্তা চুক্তি থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন তিনি। এর পরেই মমতা প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘কীসের এত তাড়াহুড়ো? রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্র কেন পড়শি দেশকে ভারতের ভূখণ্ড ও জল দিয়ে দিতে চাইছে? কী জন্য কেন্দ্র এই রাজনীতির খেলা খেলছে?’
ফেসবুকে কেন্দ্রের প্রতি মমতার বার্তা, ভারতে প্রচলিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে তারা যেন মেনে চলে। মমতা সাফ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক তিনিও চান। কিন্তু তা রাজ্যের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে নয়।
ঘটনাচক্রে তৃণমূল ছাড়া অসম ও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি শাখাও স্থলসীমান্ত চুক্তির বিরোধী। চুক্তি সমর্থন করেনি বিজেপি-শরিক অগপ-ও। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করে বিলটি সংসদে পাশ করাতে তৎপর হয়েছে। ধোঁয়াশা কাটাতে এ দিন অসমে দলের নেতা-সাংসদদের পাশে বসিয়ে সুষমা বলেন, “দেশের জমি বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না।” |