প্রতি দিনের মতো সে দিনও বাড়ির ডাক বাক্সটি খুলে হাতড়াচ্ছিলেন জু হল। হাতে ঠেকল একটা খাম। চোখ বোলাতে গিয়ে প্রথমেই নজরে এল খামের বাইরে বাকিংহাম প্যালেসের সিলমোহর। রানির চিঠি এসেছে এ যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না ব্রিটেনের
ইস্ট সাসেক্সের বাসিন্দা জু-র। কিন্তু চমকের আরও বাকি তখন। খাম খুলতেই বেরিয়ে এল ‘থ্যাঙ্ক ইউ কার্ড’। প্রেরক? কেট এবং উইলিয়াম। ছেলের জন্মের পর শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁদের কার্ড পাঠিয়েছিলেন জু। ধন্যবাদ জানিয়ে তাই চিঠি দিয়েছেন স্বয়ং ডিউক এবং ডাচেস অফ কেমব্রিজ। |
এ হেন চিঠিতে অভিভূত জু। তবে শুধু তিনি-ই নন, ব্রিটেন জুড়ে এমনই বহু শুভার্থীকে কার্ড পাঠিয়েছেন কেট-উইলিয়াম। তাতে লেখা, “রাজকুমার জর্জের জন্মের সময় আপনারা যে ভাবে চিঠি লিখে তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন, তা পড়ে ডিউক এবং ডাচেস অফ কেমব্রিজ ভীষণ আনন্দিত। সুন্দর সেই বার্তাগুলি পেয়ে অভিভূত রানিও। অনেক ধন্যবাদ আপনাদের।” ঠিক ২২ অগস্ট চিঠি পেয়েছেন শুভার্থীরা। অর্থাৎ যে দিন এক মাস পূর্ণ হল ছোট্ট জর্জের। কেনসিংটন প্যালেসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই আনন্দের সময়ে যাঁরা চিঠি এবং উপহার পাঠিয়ে কেট এবং উইলিয়ামকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বাড়ি যাবে রানির চিঠি। আসলে তাঁদের প্রত্যেকের শুভেচ্ছা ও ভালবাসাকে সম্মান জানাতেই কেট-উইলিয়ামের এই অভিনব উদ্যোগ।
সে উদ্যোগের আওতায় রয়েছেন এসেছেন স্ব-নিযুক্ত রাজ ঘোষক চিকি টোনি অ্যাপলটনও। ২২ জুলাই জর্জের জন্মের পরে ইনিই সেন্ট মেরি’জ হাসপাতালের লিডো উইংয়ের বাইরে জড়ো হওয়া জনতা এবং সংবাদমাধ্যমকে সুখবরটি জানান। তখন অবশ্য অনেকই জানতেন না টোনি রাজ ঘোষকের দায়িত্বটি নিজেই তুলে নিয়েছিলেন, তা-ও রাজ পরিবারের অজান্তে। পরে অবশ্য কেট-উইলিয়ামের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি পাঠান তিনি। তাঁর কাছেও এসেছে থ্যাঙ্ক ইউ কার্ড। স্বাভাবিক ভাবেই অভিভূত টোনি। |
ঠিক যেমন আনন্দিত জু। বলেছেন, “জুলাইয়ে জর্জের জন্মের দিন চিঠিটা পাঠিয়েছিলাম। এত তাড়াতাড়ি এর উত্তর পাব ভাবিনি। কার্ডটা ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখব।” আসলে জু এবং জু-র মতো আরও অনেকেই কেট-উইলিয়ামকে নিজেদের জীবনের অঙ্গ বলে ভাবতে শুরু করেছেন। তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্মে তাই এই ‘রয়্যাল ফ্যান’দের প্রত্যেকেই ভীষণ খুশি। সেই আনন্দ ও শুভেচ্ছাকে সম্মান জানাতে ভোলেননি রাজকুমার উইলিয়াম এবং রাজবধূ কেট। তাই বোধহয় কার্ডের উপরে শুধু ধন্যবাদের বয়ান
লিখেই শেষ করেননি রাজ দম্পতি। পাঠিয়েছেন নিজেদের ছবিও। হালকা নীল পোশাকে দাঁড়িয়ে কেট। কোলে জর্জ। পাশেই উইলিয়াম। পরনে হালকা নীল শার্ট। সুন্দর হাসি ছড়িয়ে দম্পতির মুখে। কার্ডটি দেখার সঙ্গে সঙ্গে সেই হাসি ‘সংক্রামিত’ হচ্ছে প্রাপকদের মধ্যেও। আসলে রানির ঘরে যে আনন্দ আছে, সে আনন্দ এখন যে রানির প্রজাদের ঘরেও। |