অজানা জ্বরের প্রকোপ, মিলছে ডেঙ্গির জীবাণুও
জানা জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে দুর্গাপুরের বেশ কিছু এলাকায়। গত কয়েকদিনে অনেকেই অজানা জ্বর নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্টে অন্তত ১৩ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে বলে দাবি করেছেন রোগীর পরিজনেরা। যদিও আক্রান্তেরা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় স্বাস্থ্য দফতরের কাছে খবর পৌঁছায়নি। দুর্গাপুরের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শকুন্তলা সরকার জানিয়েছেন, ডেঙ্গি আক্রান্তের কোনও খবর এখনও তাঁর কাছে আসেনি। তিনি বলেন, “অজানা জ্বরে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি ডেঙ্গি আক্রান্তের কোনও ঘটনা ঘটেছি কি না।”
খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, শহরের সিটি সেন্টার, নব ওয়ারিয়া, অঙ্গদপুর, নেপালি পাড়া প্রভৃতি এলাকায় অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বাসিন্দারা। দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতাল, ইএসআই হাসপাতাল, বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং সিটি সেন্টারের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২৭ জন। রক্ত পরীক্ষার পরে তাঁদের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্টে ১৩ জনের ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। ‘এনএস ওয়ান এজি’ পরীক্ষার রিপোর্টে তা জানানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। কারণ, এখনও পর্যন্ত সবার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছায়নি।
অজানা জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে রানিগঞ্জের সিহারশোল-সহ বেশ কিছু এলাকাতেও। ইসিএল
আবাসন এলাকায় জমা আবর্জনায় ওষুধ ছড়ানো হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। —নিজস্ব চিত্র।
নব ওয়ারিয়ার বাসিন্দা কাজল ঘোষ জানান, তাঁর বছর দুয়েকের ছেলের রক্ত পরীক্ষার প্রাথমিক রিপোর্টে ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। সিটি সেন্টারের মাইকেল ফ্যারাডে রোডের বাসিন্দা প্রশান্ত গোস্বামী জানান, তাঁর ছেলে প্রতীকও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা ২৭ হাজারের নীচে নেমে গিয়েছে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে ছোট ছেলে সৌমিকও। দুজনেই বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই বেসরকারি হাসপাতালেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন সিটি সেন্টারের নন-কোম্পানি এলাকার বুদ্ধদেব দত্ত। ইএসআই হাসপাতালেও বেশ কয়েকজন অজানা জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এলে তাঁদের রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরসভার কাছে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
পুরসভার দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কোমর বেঁধে নেমেছেন তাঁরা। এতদিন বছরে মশার লার্ভা নিধনে ৩ বার স্প্রে করা হতো। এ বার মোট সাতবার স্প্রে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েক দফা স্প্রে করার কাজ হয়ে গিয়েছে। এছাড়া সাড়ে তিনশো অঙ্গনওয়ারি কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিটি ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাগরিকদের সচেতন করছেন বলেও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েক বছরে শহরে মশার উপদ্রব বেশ বেড়েছে। গত বছরও মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে বাসিন্দারা পুরসভার দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রথমে খুব একটা উদ্যোগ না করলেও ডেঙ্গি ছড়াতেই পুরসভার তৎপরতা শুরু হয় বলে জানান তাঁরা। বিভিন্ন ওয়ার্ডে মাইক নিয়ে সচেতনতা বিষয়ক প্রচার, আগাছা পরিস্কার, মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানো, মশা-নাশক রাসায়নিক স্প্রে করার কাজ শুরু হয়। তবু ডেঙ্গিতে মৃত্যু ঠেকানো যায়নি। গত বছর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১০ জন। ২০১১ সালেও নঈমনগর এলাকায় বেশ কয়েকজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে কেউ মারা যাননি। এ’বছরও জুলাই মাসের মাঝামাঝি অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অন্ডালের দীর্ঘনালা গ্রামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন এর পক্ষ থেকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দীর্ঘনালা গ্রামে গিয়েছিলেন দুই চিকিৎসক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.