একাদশ শ্রেণির ছাত্রদের রেজিস্ট্রেশনকে কেন্দ্র করে গোলমালে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল। সেই তালা ঘোলাকে কেন্দ্র করে দু’দল ছাত্র ও বহিরাগতদের মারামারিতে ধন্ধুমার ঘটে গেল হাসনাবাদে। ভাঙচুর করা হল স্কপলের দরজা-জানলা। ভাঙচুর চালানো হয় স্কুলের কাছে একটি ক্লাব ও দোকানেও। পরে হাসনাবাদ থানার ওসি বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিত সামাল দেন। শুক্রবার হাসনাবাদের তকিপুর রাজলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ে ওই ঘটনা ঘটে। স্কুলের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মারামারি এবং সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগে স্কুলের সামনে থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্কুল সূত্রের খবর, উচ্চ শিক্ষা সংসদের নির্দেশ মতোই নির্দিষ্ট বিষয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছিল। ১৪৯ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে মধ্যে ১৩৬ জন ফর্ম ফিলাপ করলেও ১৩ জন তাতে আপত্তি জানান। তাঁদের দাবি, পছন্দমতো বিষয় না পেলে তাঁরা রেজিস্ট্রেশন করাবেন না। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে একাধিকবার আলোচনা হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এ দিন ফের একই দাবি তুলে স্কুল শুরুর পরে তিনটি গেটে তালা ঝুলিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একাদশ শ্রেণির বেশ কিছু ছাত্র। বেলা ১২টা নাগাদ টিফিনের সময়ে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের বাইরে বেরোতে গিয়ে দেখে তালা ঝুলছে। তারা তালা খুলতে বললেও বিক্ষোভকারীরা রাজি হয়নি। এই নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রদের বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। |
এতে নীচু ক্লাসের পড়ুয়ারা ভয় পেয়ে চীত্কার শুরু করে দেয়। হইচই শুনে স্কুললাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা স্কুলে চলে আসেন। পুলিশ জানায়, শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিবদমান ছাত্রদের বোঝান,। কিন্তু ক্রমশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রমের বাইরে চলে যায়। এরই মধ্যে কিছু ছাত্র গেট টপকে বাইরে আসতে গেলে ছাত্রদের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র মোবাইল ফোনে অন্যদের জানায় তাকে মারধর করা হচ্ছে। এর পরই বেশ কিছপ বহিরাগত এসে স্কুলের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকলে ফের দু’দলে মারামাকরি বাধে। হাসনাবাদা থানার ওসি বলেন, “ছাত্রদের মধ্যে মারামারি এক সময় আশপাশের এলাকার লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। একদল লোক স্কুললাগোয়া একটি ক্লাবে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। এক দোকানদার প্রতিবাদ করায় তাঁর দোকানেও ভাঙচুর করা হয়।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসামঞ্জস্য ভট্টাচার্য বলেন, “সংসদের নির্দেশ আমরা অমান্য করতে পারি না। ছাত্রছাত্রীদের বার এ কথা বোঝালেও ১৩ জন ছাত্র ফর্ম ফিলাপ করতে রাজি হয়নি। তারা স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তারপর স্কুলের বাইরে কি হয়েছে বলতে পারব না। তবে একদল বহিরাগত স্কুলে ঢুকে যে ভাবে ভাঙচুর করেছে তাতে পড়ুয়ারা আতঙ্কিত। সেই কারণেই পুলিশ ডাকা হয়। থানায় লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে।”
বিক্ষোভকারী ছাত্রদের বক্তব্য, “গত চার মাস ধরে পড়ানোর পর এখন শিক্ষকেরা বলছেন আমরা যে বিষয়গুলি চাই সেগুলিতে সংসদের অনুমোদন নেই। পড়ানো বিষয়গুলি রাখার দাবিতেই আমরা স্কুলে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাই। টিফিনের সময় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা আমাদের আন্দোলন নষ্ট করতে বহিরাহতদের ডেকে এনে তালা ভেঙে মারধর, স্কুলে ভাঙচুর চালায়। তবে ক্লাবে ও দোকানে কারা ভাঙচুর করেছে তা জানি না। |