পরিচয়...
বিলায়েতি বাঙালনামা
কটু গল্প করেই শুরু করি? শাস্ত্রবিরোধী এক গল্পলেখকের জীবনে ঘটা।
বৌ-বাচ্চা নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছিলেন শিলং। গুয়াহাটি থেকে বাসে করে পাহাড়ের দিকে উঠতে তুমুল তর্ক বাধল স্যুটেড-বুটেড এক শিক্ষিত অবাঙালি ভদ্রলোকের সঙ্গে।
মামলা কী? না, সে ভদ্রলোকের মতে গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বম্বেনিবাসী (তখনও মুম্বই হয়নি) অবাঙালি। সারা রাস্তা ধরে তর্ক করেও সেই লেখক তাঁকে বোঝাতে পারেননি, হেমন্তকুমার আসলে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং ষোলো আনা তিন পয়সা বাঙালি।
অমনি ধারা সিতার নওয়াজ উস্তাদ বিলায়েৎ হুসেন খান সাহেবকে নিয়েও।
মাত্র ন’বছর বয়েসে তবলার প্রবাদপুরুষ উস্তাদ আহমেদজান খেরাকুয়া সাহেবকে নিয়ে মঞ্চে আবির্ভূত হয়ে অচিরে এইসান ভারতজোড়া খ্যাতিতে পৌঁছলেন যে, সেতারের এই জাদুকর যে কলকাতার পার্কসার্কাস পাড়ার ছোকরা, তা দিব্যি ঘেঁটেমেটে গিয়েছে শ্রোতার স্মৃতিতে। ক’জনই বা জানেন অপূর্ব উর্দুমেশানো বাংলা বলেন, বাল্যে সেরা সেতারি পিতা উস্তাদ এনায়েৎ খানের সঙ্গে দেখতে গিয়েছিলেন রবিঠাকুরকে, এবং আসর শেষ করেন ভাটিয়ালি বলে অ্যানাউন্স করে একটি বাংলা বাউল বাজিয়ে।
জীবনের প্রান্তবেলায় এসে একদিন আমায় বলেছিলেন, “এখন পিস্টা বাজালে ভাবতে ভাল লাগে, রবিঠাকুরের ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি’ বাজাচ্ছি।”
শেষ দিকে এক দুর্মর বাঙালিয়ানায় ধরেছিল খান সাহেবকে। থেকে থেকেই বলতেন, “বাবু, আমি তো শুধু বাঙালিই নই, আমি বাঙাল!”
বাঙাল, কেননা ওঁর পিতা উত্তর ভারতের এটাওয়া ঘরের শিল্পী হলেও পূর্ববাংলার গৌরীপুর এস্টেটের সভাসঙ্গীত রত্ন ছিলেন। এবং ওঁর পরম বিস্ময়কর তিন মিনিটের খাম্বাজ রেকর্ডে নিজের নাম ঘোষণা করেছিলেন ‘দিস ইজ্ উস্তাদ এনায়েৎ খান অব গৌরীপুর’। গৌরীপুর নিয়েও বেশ শ্লাঘা ছিল বিলায়েৎ খানেরও।
আশির দশকের মাঝামাঝি যখন আনন্দবাজার-য়ের জন্য সাক্ষাৎকার নিচ্ছি, তখনও বারাসাতের নীল সুতোর বিড়ি পাঁচ তারা হোটেলের অ্যাশট্রেতে টিপে নেভাতে নেভাতে এক ফাঁকে বলেছিলেন, “কী ইচ্ছে করে জানো? নর্থ ইন্ডিয়ার আমির খুসরু সাহেবের পায়ের কাছে যদি কবর পেয়ে যাই।” আর মৃত্যুর কিছু আগে, ২০০১-য়ের ৭ মার্চ, ভুয়ালকা পুরস্কার গ্রহণ করে কী বললেন?
বললেন, “তো আজ এসব বলতেই ইচ্ছে হচ্ছে যখন এতখানি আপনারা আমাকে দিলেন আর গভর্নর সাহাব আমাকে এত গৌরব দিলেন বাঙালি বলে। আমি বাঙালি হয়ে জন্মে সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ালাম, সারা দুনিয়া টো টো করলাম, কিন্তু শেষে, এই বুড়ো বয়েসে জানি না কত দিন আর বেঁচে থাকব ভাবলাম, চলো, বাংলাতেই ফিরে যাই। আমেরিকা ন্যাশনালিটি দিতে চেয়েছে। ইংল্যান্ড দিতে চেয়েছে, ফ্রান্স-জার্মানি তারাও দিতে চেয়েছে, কিন্তু ভাবলাম এই বুড়ো বয়েসে কী আর নেব? থাক আমার ভারতীয় পাসপোর্ট।
অঢেল আলোর চমকে তো সব কিছুই ভাল হয়ে দেখায় ওখানে। কিন্তু আমার এই দেশের মাটি, এই পপুলেশন, রাস্তার এই সব গর্ত, খন্দ, এই সব গরম ঠান্ডা ... আমি এরই টানে রিলিজিয়াসলি ছ’মাস এখানে থাকি, ছ’মাস বিদেশে যাই। প্রত্যেক বছরে। হজকা লিয়ে মক্কা যানা পড়তা হ্যায়, ইসি তরহ্ ম্যাঁয় হিন্দোস্তান ভি আতা হু।ঁ আর আপনাদের কাছে মিনতি যে আপনারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন যেন আমার মৃত্যুও এই বাংলার মাটিতেই হয়।”
বাঙালির প্রার্থনা বোধহয় ঈশ্বর শুনেছিলেন, তাই মুম্বইয়ের হাসপাতালে তাঁর ইন্তেকাল হলেও তাঁর ইচ্ছেমতো খানসাহেবের দেহ কলকাতায় এনে গোর দেওয়া হয়েছিল ওঁর আব্বার পায়ের কাছে।
তবে বাঙালির স্মৃতিও হালফিল বেশ দুর্বল, না হলে একই চত্বরে শায়িত আছেন ভারতীয় রাগসঙ্গীতের সর্বকালের তিন শ্রেষ্ঠ উস্তাদ এনায়েৎ খান, উস্তাদ আমির খান এবং উস্তাদ বিলায়েৎ খান অথচ তাঁদের সমাধিক্ষেত্র তো তীর্থ হল না।
তাতে অবিশ্যি খানসাহেবের কিছু এসে যায় না, উনি হামেশাই একটাই কথা বলতেন, “আমি নিউজ পেপারের হেড লাইনে নেই, হিস্ট্রিতে আছি।” মৃত্যুর আগে জেনেও গিয়েছিলেন যে উনি শুধু বাংলার মাটিতেই নয়, অক্ষয় স্থান পেয়েছেন বাঙালি হৃদয়ে। সেই অভিযাত্রার আরম্ভ রবিঠাকুরের দর্শনে। ওঁর মুখেই শুনুন...
“পাথুরিয়াঘাটার বাড়িটা। বাড়ির নম্বরটা অ্যাদ্দিনে ভুলে গিয়েছি। ৭ নম্বর, কি ৪ নম্বর। নাকি ৩ নম্বর? মনে আছে, ও বাড়ির বাইরেটায় খেলাধুলো করেছি, খুব ছোট তখন। মন্মথবাবু (মন্মথ ঘোষ) ডাকছেন, ছোট ভাইকে যেমন ডাকে। ভেতরে বসে রবিঠাকুর, ভূপেনবাবু আর আমার আব্বা। ভূপেনবাবু দূরে ঘরের এক কোণে বসে হুঁকো খাচ্ছেন। আর রবিঠাকুরের হাফ ফিনিশড ছবি ... সেখানে শোভা পাচ্ছে। আমি থেকে থেকে সেই ঘরের মধ্যে আসছি, ছবির সামনে দাঁড়াচ্ছি, তার পর চলে যাচ্ছি। তো হঠাৎ শুনি রবিঠাকুর ডাকছেন ... ওঁর আওয়াজ খুব সরু, একেবারে বীণের মতন... ‘ও খোকা! তুমি কী দেখছ হে?’
আমি ভয় পেয়ে গেছি। কিন্তু উনি বললেন, ‘না, না, এসো।’ আমি এগিয়ে আসতে বাবা বললেন, ‘ক্যা দেখ রহে হো? বাতাও! ক্যা রহে হো বার বার আকে?”
আমি আস্তে আস্তে বললাম, “ইয়ে তো ভৈরবকি তসবির হ্যায়।’ বাবা জিজ্ঞেস করলেন, ‘ক্যা? ভৈরবকা ক্যা হ্যায় ইস্ মেঁ?’ আমি তখন বেশি কিছু না বলে শুধু বললাম, ‘আব্বা! আপনে বতায়া মুঝে কি ভৈরবকা এক আঁখ হ্যায় তিসরি আঁখ, আউর ও যো আঁখ হ্যায় ও ঋষভকা? তো ইয়ে আঁখে দেখকর ভি মুঝে অ্যায়সিই লগা কি ও ভৈরবকা আঁখ যৈসা দিখাই দেতা। অউর ইয়ে যো আঁখ হ্যায় না... ম ম রে সা ... বলে এইটা শোনালাম।
রবিঠাকুর তখন পাশে মুখ ঘুরিয়ে বললেন, ‘শুনলাম। এনায়েৎ খান! এই ছেলেটাকে সামলে রাখবে।’ সব মনে আছে।”
পার্ক সার্কাসেরই ইস্কুলে পড়েছেন বিলায়েৎ খান। নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু পড়াশোনায় মন লাগেনি। সব সময় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ঠাকুরদাদা এমদাদ খানের জৌনপুরি, আব্বার খাম্বাজ, ভৈরব কী বাগেশ্রী। দাদামশায় বন্দে হুসেন খাঁ সাহেবের কেদার আর কামোদ। অথবা ফৈয়জ খানের কী মস্তার হোসেন খানসাহেবের মালকোষ। গভীর রাত পর্যন্ত মা পাহারা দিচ্ছেন রেওয়াজরত ছেলেকে। ক্লান্তিতে চোখের পাতা জুড়ে গেলে টেবিল ফ্যানের তারের ছ্যাঁকা দিয়ে সিধে করে দিচ্ছেন।
এসব বলতে বলতে কেমন আনমনা হয়ে পড়েছিলেন খান সাহেব। যেন স্মৃতির শহর ভর করেছে মগজে, হৃদয়ে। অথচ সদ্য যৌবনে বেজায় নাম হয়ে মুম্বইতে থাকা শুরু হয়ে গেল। পরের পর পর প্রেমে পড়া শুরু হল।
বললেন, “ইউ সি নাইনটিন ফর্টি সিক্স, ফর্টি সেভেন থেকে আমার পার্সোনাল লাইফে কতগুলো ঘটনা ঘটল। চলল ১৯৫৮ পর্যন্ত। তিন চারটে ঘটনা ভেরি পার্সোনাল।
লাভ অ্যাফেয়ারের মতো। কয়েকটা ক্ষেত্রে বাসনা বাসনাই থেকে গেল। পূর্ণ হল না।
তখন তো প্রতি বছর কলকাতায় আসতাম। ওই রকম একটা ট্রিপে আমার প্রথম স্ত্রী মনীষার সঙ্গে সোশ্যালি এক জায়গায় দেখা হয়ে গেল। তখন গ্রেট ইস্টার্ন ছিল, প্রিন্সেপ ছিল, গ্র্যান্ড ছিল, ফিরপো ছিলদারুণ দারুণ বড় বড় সব হোটেল। তখন ডিনার জ্যাকেটে সেজেগুজে যাওয়ার যুগ। খেলা চলছে বিলিয়ার্ডস, স্নুকার এই সব। আর মুম্বইতে থেকে আমি তো রীতিমতো উড়ছি। কাপ্তান বলতে তখন যা বোঝায় তাই।...সেখানকার হেন স্টার নেই যাঁর সঙ্গে ওঠাবসা আমার না হয়েছে। হামদর্দি চলছে আমার। দিলীপকুমার, নৌশাদ, মদনমোহন...এঁরা আমার সব সময়ের সঙ্গী। ইংল্যান্ড থেকে যে জাগুয়ার স্পোর্টস কার এনেছি, তাই চড়ছি। ফ্রেঞ্চ বুশ শার্টের স্টাইল ধরেছি। যে দু’তিন মাস কলকাতায় থাকি তার মধ্যে কিছু প্রোগ্রাম করি। আর বাকি সময় কাপ্তানি করে বেড়াই,” বলছেন বিলায়েৎ।
“তো এই ভাবে একদিন দেখা হয়ে গেল মনীষার সঙ্গে।”
তখন বিলায়েৎ খানের বাইরের দিকটা ঠিক কীরকম? বিশুদ্ধ ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সেতারি। সন্ধে নামলে বল ডান্সে প্রায় আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। বড় বড় সব হোটেলের ডান্স ফ্লোরে। হেসে বলেছিলেন, “তখন হাতে সেতার গাইত। আর পায়ের স্টেপিংসে কথা বলত ওয়াল্টজ, ফক্সট্রট কত কী!” বাজনার বেদম দম বুকে আর কৌটো ধরে সিনিয়র সার্ভিস কী ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট সিগারেট ফুঁকে যাচ্ছেন একের পর এক। বললেন,“সেই সব দিন ছিল। এখন ফাইভ স্টার হোটেলে বসে এইটুকু এইটুকু করে বারাসতের বিড়ি খাচ্ছি।”
আর কী দিন ছিল! মার্সেডিস ছাড়া চড়তেনই না। এত জানকারি ছিল গাড়ির ব্যাপারে যে নিজের গাড়ি নিজের হাতে সারাতেন। সেতারের মতো গাড়িও ওঁর কাছে ছিল টিউনিং নির্ভর। সেতার কিংবা স্টিয়ারিং হাতে তুললেই যন্ত্রের উষ্ণতা বা কবোষ্ণতা টের পেতেন। শুধু টের পাননি, ওঁর জীবনসঙ্গিনী কতটা সুরে ওঁর ঘরে বাঁধা পড়বেন।
বলছেন, “মনীষা প্রেসিডেন্সির মেয়ে ছিল। খুবই বুদ্ধিমতী। ওর সাবজেক্ট ছিল ইংরেজি। কিন্তু আমার পরিবারে এসে, আমাদের ঘরের কনজারভেটিজম স্বীকার করে নিয়ে সুন্দর করে সংসার করবে এটাই আমার আশা ছিল। সেটা যে হল না তাতেই বড় ধাক্কাটা খেয়ে গেলাম।”
যখন বিয়ে করছেন কলকাতায়, তখন আরও একটা কাজে হাত দিচ্ছেন। সত্যজিৎ রায়ের ‘জলসাঘর’ ছবিতে সুর করা। বলছেন, “ছবি করার আগে থেকেই আমাদের সম্পর্ক। উনি আমাদের পার্ক সার্কাসের বাড়িতে অনেক আসতেন। আসতেন। বসতেন। আলাপ হত। শেষে আমিই এক সময় বলতে শুরু করলাম, মানিকদা তুমি প্লিজ তোমার ছবি করা আরম্ভ করো। তোমার চিন্তাধারা এত ভাল, এত চমৎকার, তুমি ছবি না করে থাকছ কেন? এতটাই বন্ধু ছিলাম আমরা যে ওঁর ছবি করা নিয়ে আমি এক্সাইটেড হচ্ছিলাম।”
এ সব প্রাক ‘পথের পাঁচালী’ সময়কার কথা। কিন্তু ‘জলসাঘর’ হতে আরও ক’বছর কাটল। খানসাহেবের বিয়ের সময়ের গায়ে গায়ে। ছবিটা তো এমনি রাগে রাগে, সুরে সুরে আচ্ছন্ন। তার মধ্যে একটি সুর—বেহাগী গৎ—নিয়ে খুব রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল সেই সময়। তার গল্পটা এই রকম...দৃশ্য হল উঠতি বড়লোকের মোটরগাড়ির সঙ্গে নায়ক বিশ্বম্ভর রায়ের হাতির রেস। সত্যজিৎ চাইছিলেন একটা জম্পেশ বাজনা দিয়ে দৌড়ের মজাটা জমিয়ে দিতে।
বিলায়েৎ খান একটার পর একটা কম্পোজিশন বাজিয়ে যাচ্ছেন। সত্যজিৎ মুগ্ধ হয়ে শুনে শুনে শেষে বলছেন, আরেকটু শুনি। শেষে আস্তিন থেকে তুরুপের তাস বার করলেন খান সাহেব। বেহারির ওই গৎ। শোনামাত্র নিজের কপালে একটা চাপড় মেরে সত্যজিৎ বলে উঠলেন, ব্যস্, ব্যস্! এইটিই আমার চাই। এবার হাতি দৌড়বে।
নতুন শতাব্দীর শুরুতে যখন জিজ্ঞেস করলাম, “তা’হলে কলকাতায় ফিরে এলেন তো? আর যাবেন না তো?’ খুব উচ্ছ্বাসের সঙ্গে জবাব দিলেন, কেন আমি তো এই শহরেরই লোক। শেষ বয়েসে এসে ভাবলাম, যাই কলকাতা, ওখানেই থাকব।”
বলতে বলতে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে নদীর পাড়ে রাইচকের গাছবাড়ির বারান্দায় উঠে গিয়ে বলতে থাকলেন, “এর আগে অনেক অনেক কথা উঠেছে অটোবায়োগ্রফি করার। ইংরেজিতে, ঊর্দুতে, হিন্দিতে। আমি শুধু বলেছি, আগে বাংলায়, তারপর অন্য কিছু।’ কারণ? ‘আমি বাঙাল! অনেক বাঙালিই আমাকে চেনে, জানে, ভালবাসে। আমি গৌরীপুর, কলকাতায় মাখামাখি হয়ে আছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.