অবশেষে বাঁশদ্রোণীর কালীতলা সেতু এবং রথতলার বান্টি সেতু সংস্কারের কাজ শুরু করল রাজ্য সেচ দফতর। পুরনো সেতু দু’টি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় দু’দশকের বেশি পুরনো এ দু’টি সেতু দীর্ঘ দিন বেহাল অবস্থায় ছিল। অনেক দিন ধরে বাঁশদ্রোণীর রাইফেল ক্লাব সংলগ্ন চাকদহ, তালতলা, বন্দিপুর, জয়শ্রী, কংগ্রেস নগর, দীনেশ নগর, বিধান পল্লি, ব্রহ্মপুর এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা সেতু দু’টির সংস্কারের দাবি করছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কালীতলা সেতুটি আশির দশকের প্রথম দিকে পায়ে হেঁটে টলিনালা পারাপারের জন্য তৈরি হয়েছিল। বান্টি সেতুও তৈরি হয়েছিল একই উদ্দেশ্যে। গত তিন দশকে টলিনালার পশ্চিম পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় জনবসতি ব্যাপক হারে বেড়েছে। সেতুর উপর দিয়েই শুরু হয় অটো ও পণ্যবাহী গাড়ির যাতায়াত।
|
এই দুই সেতুর উপর দিয়েই গিয়েছে টালিগঞ্জ থেকে গড়িয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত মেট্রোর লাইন। সেতু দু’টি টলিনালার পশ্চিম পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে এনএসসি বোস রোডের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।
১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের অনিতা কর মজুমদার বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে এলাকার বাসিন্দারা কালীতলা সেতুটির সংস্কারের দাবি জানাচ্ছিলেন। সেচ দফতর সেই কাজ শুরু করেছে।” বান্টি সেতুর হাল এমন হয়েছিল যে দীর্ঘ দিন গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। এটি কলকাতার ১০০ এবং ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। কালীতলা সেতুর উপরে কোনও বড় গাড়ি উঠলে ব্রিজটি কাঁপত। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল হাঁটতেও ভয় হত। সারা দিন এই সেতুতে যানজট লেগেই থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা সুতনু ঘোষের কথায়: “দু’টি সেতু যে ভেঙে পড়েনি সেটাই আশ্চর্যের বিষয়। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।” বাসিন্দারা জানান, দু’টি সেতুর উচ্চতা বেশি থাকার কারণে যাতায়াতে অসুবিধে হত। |
সেচ দফতর সূত্রে খবর, পুরনো সেতু দু’টি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন সেতু। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তা ঢিমেতালে চলছে। ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়: ‘‘বান্টি সেতুর বেহাল দশার কথা উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। তার পরেই কাজ শুরু হয়।” ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের চয়ন ভট্টাচার্য বলেন, “কাজ শুরু হলেও অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। কত দিনে শেষ হয় সেটাই দেখার।”
টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তৃণমূলের অরূপ বিশ্বাস বলেন, “এলাকার কাউন্সিলররা আমাকে সেতু দু’টির সংস্কারের কথা একাধিক বার বলছিলেন। আমি সেচ দফতরকে সংস্কারের জন্য অনুরোধ জানাই।” সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাসিন্দাদের পুরনো সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যই দুই সেতুর খোলনলচে বদল করা হচ্ছে। তাই কাজে
সময় লাগছে।” |