|
|
|
|
জলে ভাসছে নদী-পাড়ের দখল এলাকা, চোখ বুজে প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
বেআইনি বসবাসকে ‘প্রশ্রয়’ দিয়েছে প্রশাসনই। আর তার জেরেই ফি বছর ভারী বৃষ্টিতে ভাসে জামশেদপুর সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অঞ্চল। আর নাস্তানাবুদ হতে হয় প্রশাসনকে।
পূর্ব সিংভূমের জামশেদপুরের গা ঘেঁষে গিয়েছে সুবর্ণরেখা ও খরকাই নদী। গত পঞ্চাশ বছরে খরকাই নদীর দু’পাশের নিচু জমিতে গড়ে উঠেছে বসতি। তুলনামূলকভাবে নিম্নবিত্ত মানুষের বসবাসের জায়গা হলেও বর্তমানে দোতলা, তিনতলা বাড়ির ছড়াছড়ি এই সব এলাকায়। ওই সব বাড়ি বেআইনিভাবে সরকারের অনুমতি ছাড়াই গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
খরকাই নদীর ধারে জুগসলাই, বাগবেরা, মানগো, ডাইগুট্টু, শাস্ত্রী নগরের মতো বিভিন্ন এলাকায় এ ভাবেই অলিখিত কলোনি গড়ে উঠেছে। ভারী বৃষ্টিতে ঘরে জল ঢুকে গেলে এই সব কলোনির মানুষ উঁচু জায়গায় উঠে গিয়ে সাময়িকভাবে থাকতে শুরু করেন। জল ফের নেমে গেলে ফিরে আসেন নিজেদের কলোনিতে। মঙ্গলবার ও বুধবারের ভারী বৃষ্টিতে খরকাই নদীর জলে ফের একবার ভাসল ওই সব এলাকা। কাছাকাছি উঁচু রাস্তায় ছাউনি ফেলেছেন এই এলাকার বহু বাসিন্দাই। |
|
জামশেদপুরের খরকাই নদীতে জল কমলেও পার্শ্ববর্তী কদমা-শাস্ত্রীনগর এলাকায় জল
এখনও
নামেনি। বাধ্য হয়ে বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু রাস্তায়। শুক্রবার পার্থ চক্রবর্তীর তোলা ছবি। |
নিচু জমিতে জবর-দখল করে বসবাস করা নিয়ে প্রসাসনের তরফে কখনও কিছু বলা হয়নি বলেই দাবি এখানকার মানুষের। শাস্ত্রী নগরের কাছে যাদবনগরের বাসিন্দা পেশায়, অটোচালক বাপি মণ্ডলের কথায়, “ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ বছর ধরে এ ভাবেই রয়েছি। প্রশাসন তো কখনও কিছু বলেনি। নদীর জল ঘরে ঢুকলে অন্যত্র চলে যাই। মাঠে-ময়দানে তাঁবু খাটিয়ে থাকি। জল নামলে আবার ফিরে আসি।”
এই বেআইনি জবরদখলের জেরে খরকাই নদীর দুই পাড়ই কার্যত দখল হয়ে গিয়েছে। খরকাইয়ের একদিকে পূর্ব সিংভূম। অন্য দিকে, সরাইকেলা-খরসঁওয়া। আর নদীর ধার বরাবর দু’টি জায়গাই মঙ্গলবার ও বুধবার জলে ভেসেছিল। প্রশাসনের একাংশের অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের মদত থাকায় ওই সব এলাকা কখনও খালি করা যায়নি। অনেকবার পুলিশ কিংবা পুর প্রশাসন বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে গোলমালের জেরে প্রশাসনকে পিছু হটতে হয়েছে। শুধুই বাড়ি করা নয়, সরকারি জমি অনেক জায়গায় বিক্রিও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। পূর্ব সিংভূমের জেলাশাসক অমিতাভ কৌশল জানান, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় প্রশাসনকেই তৎপর থাকতে হয়। তিনি বলেন, “আমরা প্রতি বছর এই সময় জায়গা খালি করে অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য এলাকায় মাইকে ঘোষণা করি। কারণ বান এলে শিশুদের তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।” তা সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কোনও ব্যবস্থা কেন নেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন এড়িয়ে কৌশল জানান, প্রশাসন জবর-দখল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। |
|
|
|
|
|