রাত দশটা নাগাদ এসএমএস পেয়ে চমকে উঠেছিলেন সল্টলেকের বাসিন্দা নবকুমার চৌধুরী। ব্যাঙ্ক থেকে পাঠানো সেই এসএমএসে লেখা, সল্টলেকে থাকা অবস্থাতেই তিনি নয়ডার একটি দোকান থেকে ডেবিট কার্ডে জিনিস কিনেছেন! তড়িঘড়ি ইন্টারনেটে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে তিনি দেখেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে কয়েকশো টাকা পড়ে রয়েছে এবং তাঁর ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেই প্রায় ৪২ হাজার টাকার জিনিস কেনা হয়েছে।
এর পরেই বিষয়টি নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন স্টেট ব্যাঙ্কের গ্রাহক নববাবু। এন্টালি থানাতেও একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। বিষয়টি জানান কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষকেও। নববাবু বলছেন, ৬ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত দফায় দফায় তাঁর ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে জিনিস কেনা হয়েছে। কিন্তু ১০ জুলাই রাত দশটার আগে একটি এসএমএস-ও পাননি তিনি। সাধারণত, ডেবিট কার্ড দিয়ে কোনও কেনাকাটা করলে এসএমএস মেলে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা তিনি পাননি বলেই নববাবুর দাবি। তাঁর অভিযোগ, এসবিআই কর্তৃপক্ষও বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
তদন্তে নেমে গোয়েন্দাদের অনুমান, এটি স্কিমিং। অর্থাৎ একটি ডেবিট কার্ডের তথ্য চুরি করে তা দিয়ে অবিকল নকল একটি ডেবিট কার্ড তৈরি করা। সাধারণত, বিভিন্ন ছোটখাটো দোকানে ‘কার্ড কপিয়ার’ নামে একটি যন্ত্র ব্যবহার করে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নেয় জালিয়াতেরা। তার পরে বিশেষ একটি সফ্টওয়্যার দিয়ে তা ব্ল্যাঙ্ক কার্ডে ভরে তৈরি করে ফেলা হয় নকল ডেবিট কার্ড। এক গোয়েন্দা অফিসারের বক্তব্য, “এটি নকল না বলে ডুপ্লিকেট বলা ভাল। কারণ, এটি দিয়ে জিনিস কেনা বা টাকা তোলা হলে তা আসল গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকেই বাদ যাবে।” তদন্তকারীদের অনুমান, ইন্টারনেটে ট্রোজান জাতীয় ভাইরাস ছড়িয়েও কার্ডের তথ্য হাতানো যায়।
ঘটনাচক্রে, কলকাতা থেকেই বছর খানেক আগে কার্ড স্কিমিং চক্রের চাঁই হিসেবে তিন জন নাইজেরীয় যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় কয়েক জন বিদেশি নাগরিকের ডুপ্লিকেট ক্রেডিট কার্ডও। |