শুধু ভাড়া বাড়ানোই নয়, পরিষেবা চালু রাখার শর্ত হিসেবে এ বার আরও ট্যাক্সি-স্ট্যান্ড তৈরি, পুলিশ পাহারা এবং প্রি-পেড বুথের দাবি জানাল ট্যাক্সি-মালিকদের সংগঠন। ১০ দিনের মধ্যে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ট্যাক্সি-স্ট্যান্ড তৈরি না-হলে ট্যাক্সি বন্ধের হুমকি দিয়েছেন ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর (বিটিএ) সভাপতি বিমল গুহ। অন্য দিকে, সিটু-র অভিযোগ, ট্যাক্সির স্ট্যান্ডগুলিতে তৃণমূল ‘দাদাগিরি’ করছে। সেটা বন্ধ করতে স্ট্যান্ডগুলোয় পুলিশ-পিকেট বসানোর দাবি করেছে ‘ক্যালকাটা ট্যাক্সিড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (সিটিএ)।
পর্যাপ্ত স্ট্যান্ডের অভাবে যাত্রীর খোঁজে ট্যাক্সিচালকদের ধীর গতিতে রাস্তায় পাক খেতে হয়। এ কথা জানিয়ে বিমলবাবু বলেন, “এ সব ক্ষেত্রে বারবার সংশ্লিষ্ট চালককের বিরুদ্ধে পথ-আইন ভাঙার অভিযোগ আনছে পুলিশ। যার মাসুল গুনছেন ট্যাক্সির মালিকেরা।” এই অবস্থায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে দশ দিনের মধ্যে স্ট্যান্ড তৈরি করে না-দিলে পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র শুক্রবার বলেন, শীঘ্রই শহরের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এবং প্রি-পেড বুথ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, স্ট্যান্ড না-থাকায় অনেক জায়গায় যাত্রী এবং চালকদের অসুবিধা হচ্ছে। এর পাশাপাশি বিটিএ-র হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে সব জায়গায় স্ট্যান্ড নেই, ওঁরা চাইলে করুন না! আমরা বাধা দেব না। তবে, ছাউনি ভেঙে পড়লে বা অন্য জটিলতা হলে সেই দায় কিন্তু ওঁদেরই নিতে হবে।”
এ দিকে, সিটিএ-র সম্পাদক প্রমোদ ঝা দাবি করেন, স্ট্যান্ডের অভাবের চেয়েও বেশি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন স্ট্যান্ডে তৃণমূল-সমর্থকদের ‘দাদাগিরি’। তাঁর অভিযোগ, “স্ট্যান্ডে ট্যাক্সি-পিছু গড়ে ২০ টাকা করে চালকদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু দূরের, অর্থাৎ বেশি ভাড়ার যাত্রী পাচ্ছেন কেবল তৃণমূলের সমর্থক-চালকেরা। ওঁদের অনুগামী না-হলে পস্তাতে হচ্ছে চালকদের।” এই অবস্থায় স্ট্যান্ডগুলিতে পুলিশ-পাহারা এবং মহানগরীর বিভিন্ন অঞ্চলে ২০০টি প্রি-পেড বুথ খুলতে পরিবহণমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছে সিটিএ। তালিকায় বিভিন্ন হাসপাতাল এবং গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের উল্লেখও করা হয়েছে।
সিটু-র অভিযোগ অস্বীকার করে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “বাম আমলের নৈরাজ্য আমরা পর্যায়ক্রমে দূর করার চেষ্টা করছি। আর বুথে বুথে পুলিশি ব্যবস্থার অবকাশ কোথায়?” তা করতে গেলে অন্যত্র আইন-শৃঙ্খলা রাখার কাজে ব্যাঘাত ঘটবে বলে মন্তব্য করেন পরিবহণমন্ত্রী। |