দেখতে পাননি মাওবাদীর ক্ষত, তিরস্কৃত তিন পুলিশ
পুলিশি হেফাজতে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল। ডাক্তারি পরীক্ষায় সেই অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু মাওবাদী নেতা জাকির হোসেনের শরীরে একটি পুরনো আঘাতের চিহ্ন নজর এড়িয়ে যাওয়ায় তিরস্কৃত হলেন স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফের তিন অফিসার।
ওই মাওবাদী নেতাকে আদালতে তোলার আগে তাঁর বাঁ ঊরুর পুরনো আঘাতের চিহ্ন পুলিশের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। আর সেই গাফিলতির জন্যই এসটিএফের তিন অফিসারকে ভর্ৎসনা করেছে লালবাজার। তাঁদের মধ্যে এক জন আবার জাকিরের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন। তাঁকেও সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
লালবাজার এই সব ব্যবস্থা নেওয়ায় সন্তুষ্ট রাজ্য মানবাধিকার কমিশন বিষয়টির নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। জাকিরের অভিযোগ পাওয়ার পরে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মানবাধিকার কমিশনকে এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কমিশন আবার কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে গোটা ঘটনার তদন্ত করতে বলে।
পুলিশি সূত্রের খবর, যে-তিন অফিসারকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন এসটিএফের মাওবাদী দমন শাখার (কলকাতা) ওসি গৌতম দাস, ওই মামলার তদানীন্তন তদন্তকারী অফিসার অশোক ঘোষ এবং ওই শাখার সাব-ইনস্পেক্টর রবীন ভাঙ্গি। এসটিএফের যে-দলটি জাকির-সহ দুই মাওবাদী নেতাকে গ্রেফতার করেছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন রবীন। ওসি হিসেবে গৌতমবাবুর উপরে ছিল গোটা বিষয়টির তত্ত্বাবধানের ভার।
মাওবাদীদের কলকাতা সিটি কমিটির সদস্য জাকির এবং মাওবাদীদের রাজ্য কমিটির সদস্য সব্যসাচী গোস্বামীকে গত ১৮ এপ্রিল দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোড থেকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। পরের দিন সিএমএম কোর্টে ধৃত দুই মাওবাদীকে হাজির করানো হয়। জাকির এজলাসে ট্রাউজার নামিয়ে বাঁ ঊরুতে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁকে বেধড়ক মেরেছে। তদন্তকারী অফিসারের কাছে বিচারক জানতে চান, ওই আঘাতের চিহ্ন কীসের? তদন্তকারী অফিসার ওই কালশিটে পড়ার কারণ জানাতে পারেননি।
এসটিএফের ডেপুটি কমিশনার বাস্তব বৈদ্যকে গোটা ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় লালবাজার। সেই অনুসারে ২৭ এপ্রিল এসএসকেএম হাসপাতালের ফরেন্সিক ও স্টেট মেডিসিন বিভাগের প্রধান বিশ্বনাথ কাহালিকে দিয়ে জাকিরকে পরীক্ষা করায় এসটিএফ। মানবাধিকার কমিশনে জমা পড়া ডিসি (এসটিএফ)-র রিপোর্ট অনুযায়ী কাহালি পরীক্ষা করে দেখে জানান, ওই আঘাত সপ্তাহ দুয়েকের পুরনো। জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ১৮ এপ্রিল। সে-ক্ষেত্রে তার আগে তাঁর বাঁ ঊরুতে ওই আঘাত লেগেছিল।
ডিসি তদন্ত রিপোর্টে বলেছেন, জাকিরকে গ্রেফতার করার সময় এবং পরে তদন্ত চলাকালীন তিন অফিসার অভিযুক্তের শরীরে ওই আঘাত খেয়াল করেননি। এটা তাঁদের ব্যর্থতা এবং সেই জন্যই তাঁদের ভর্ৎসনা করা হয়েছে।
লালবাজারের এক শীর্ষ অফিসার বলেন, “জাকিরের ঊরুর ওই আঘাত যে পুলিশি হেফাজতে লাগেনি, ডাক্তারি পরীক্ষায় তা প্রমাণিত। কিন্তু অভিযুক্তকে আদালতে তোলার আগে ঊরুর ওই আঘাত খেয়াল না-করাটা আমাদের তরফে গাফিলতি। তাই ওই তিন অফিসারকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.