মৎস্যজীবীদের কিষান ক্রেডিট কার্ড দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কিষাণ ক্রেডিট কার্ড এত দিন শুধু কৃষিজীবীরাই পেতেন। এ বার মৎস্যজীবীদেরও এই সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। শুধু তা-ই নয়, ওই কার্ডের মাধ্যমে ঋণের অঙ্ক বাড়ানো, বীজ কেনা-বপনের জন্য ঋণ দেওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের জন্য ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর মতো একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত হয়েছে রাজ্যস্তরের ব্যাঙ্কার্স কমিটির (এসএলবিসি) বৈঠকে। বৃহস্পতিবার মহাকরণে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এ খবর জানান।
অমিতবাবু জানান, ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে ১০ লক্ষেরও বেশি কিষাণ ক্রেডিট কার্ড বিলি হয়েছে। এ দিন সকালে এসএলবিসি-র বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে চলতি অর্থবর্ষে আরও ২ লক্ষ (মোট ১২ লক্ষ) কার্ড বিলি করা হবে।
এই কার্ডের মাধ্যমে ৫৭ হাজার টাকা পর্যন্ত চাষিরা ঋণ পান। এ জন্য সম্পত্তি বন্ধক বা গচ্ছিত রাখতে হয় না। ব্যাঙ্কগুলির কাছে ঋণের এই অঙ্ক বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা করার আবেদন করেছে রাজ্য এবং তা গৃহীতও হয়েছে। রাজ্য সরকারের অনুরোধে একই সুবিধা এ বার মৎস্যজীবীদেরও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা।
এ ছাড়া বীজ কেনা, বপন ইত্যাদির জন্য ব্যাঙ্কগুলি গত অর্থ বছরে ১৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়। চলতি অর্থবর্ষে এই ঋণের পরিমাণ ২৬ হাজার ৫০০ কোটি করার অনুরোধ রেখেছিল রাজ্য। তা-ও ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা মেনে নিয়েছেন।
রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ঋণ পাওয়ার হিসেবও বৈঠকে আলোচিত হয় বলে অর্থমন্ত্রী জানান। তিনি জানান, ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে ১,০৮,৯২৪টি গোষ্ঠীকে ৬৭৪ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি। চলতি বছরে তা ১,১৬৩ কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘এসএলবিসি’। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য আরও একটি সুখবর হল, এত দিন এই গোষ্ঠীগুলি ৬২ হাজার টাকার বেশি ঋণ পেত না। সরকারের অনুরোধ রেখে ব্যাঙ্কগুলি এ বার থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অর্থমন্ত্রী জানান।
রাজ্যে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পে গত অর্থবর্ষে ঋণ দেওয়া হয়েছিল ১৫ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। চলতি বছর ঋণদানের পরিমাণ ১৮ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান অমিতবাবু।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামোন্নয়নে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড-সহ অন্য বিষয়ে বিনিয়োগের উপরে জোর দিয়ে আসছেন, যাতে কৃষক সমাজ আরও বেশি স্বনির্ভর হয়ে ওঠে। ব্যাঙ্কগুলি তাতে সহযোগিতা করছে। এতে আমরা খুশি।” |