দৌড়বিদ হিমশ্রী রায়, টেবল টেনিস খেলোয়াড় মেধা মৈত্র-সহ ৭ জন কলেজ পড়ুয়া এ বছর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ সম্মান পেলেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার হলে তাঁদের আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই সম্মান জানানো হয়। বাকিরা হলেন সীমন্তিনী মজুমদার, সুরজ মণ্ডল, তন্ময় বর্মন, রাসিদুল হক এবং জাহাঙ্গির আলম। প্রাক্তন ফুটবল তারকা অতনু ভট্টাচার্য এবং ক্রীড়াবিদ সোমা বিশ্বাস তাঁদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ওই সম্মান তুলে দেন। আগে সুযোগ সুবিধা কম থাকলেও এখন খেলাধূলাকে পেশা করলে সমাজে প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায় বলে পড়ুয়াদের উৎসাহী করেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমশ্রী এ বছর আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১০০ এবং ২০০ মিটার দৌড়ে সোনা জেতেন। সেই সুবাদে মস্কোয় আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক মিটে-ও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। হিমশ্রী জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের ছাত্রী।
এ বছর ইস্ট জোন টেবল টেনিস প্রতিযোগিতায় রুপো জেতেন মেধা এবং সীমন্তিনী। মেধা অবশ্য অন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শহরের বাইরে থাকায় এ দিন আসতে পারেনি। তাঁর হয়ে তাঁর মা ওই সম্মান গ্রহণ করেন। মেধা শিলিগুড়ি কলেজের এবং সীমন্তিনী শিলিগুড়ি কমার্স কলেজের ছাত্রী। ইস্ট জোন খো খো’তে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল যে দল তার সদস্য শিলিগুড়ি কমার্স কলেজের ছাত্র সুরজ, কোচবিহার কলেজের তন্ময় বর্মন এবং রাসিদুল হক, ফালাকাটা কলেজের জাহাঙ্গির আলম।
অতনুবাবু বলেন, “বিভিন্ন খেলাধূলায় অন্যান্য দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে এখন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। ক্রিকেটের আইপিএলের মতো ফুটবলের প্রতিযোগিতার চেষ্টা হচ্ছে। এটা ভাল দিক। তবে বর্তমানে উত্তরবঙ্গ টেবল টেনিসে রাজ্যে এগিয়ে। বাংলার যত টেবল টেনিস খেলোয়াড় নাম করছে তার বেশির ভাগই উত্তরবঙ্গ থেকে। এখানে এই খেলার পরিকাঠামো, পরিস্থিতি রয়েছে। তাই অন্যান্য খেলার চেয়ে উত্তরবঙ্গে টেবল টেনিসের উপর আরও বেশি জোর দিলে অনেক ভাল খেলোয়াড় উঠে আসবে।” বর্তমানে অতনূবাবু ফুড কর্পোরেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার। তিনি জানান, খেলার কোটায় চাকরি পেতে উত্তরবঙ্গ থেকে যে আবেদন তাঁর কাছে যায় তার মধ্যে ৯০ শতাংশ টেবল টেনিস খেলোয়াড়।” পড়ুয়াদের উৎসাহ দিতে সোমা জানান, খেলাধূলা করে তিনি অনেক কিছু পেয়েছেন। রানাঘাটের প্রত্যন্ত এক গ্রামে থেকে তিনি যখন ক্রীড়াবিদ হতে চেয়েছিলেন তাঁকে অনেক বাধা পার হতে হয়েছে। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। তিনি সেখানে যে কোচিং শুরু করেছেন তাতে গ্রামের অনেকে মেয়েই অংশ নিচ্ছে। এখন খেলাধূলার জগতে কেউ একবার সাফল্য পেলে, একটা জায়গায় পৌঁছতে পারলে তাঁকে আর ভাবতে হবে না। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমীর কুমার দাস, স্পোর্টস বোর্ডের চেয়ারম্যান মানস চক্রবর্তী-সহ অনেকেই। উপাচার্য জানান, খেলাধূলার উন্নয়নে একজন আলাদা আধিকারিক নিয়োগের জন্য তাঁরা সচেষ্ট। |