পাক গুলি চলছেই, বাঙ্কারে বন্দি মানুষ
নিয়ন্ত্রণ রেখার গায়ে কুপওয়ারার জেলার নওগাম সেক্টর। শ্রীনগর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তরের শুধু এই এলাকাটিতেই এপ্রিল থেকে মোট ৬ বার গোলাগুলি চালিয়েছে পাকিস্তানের সেনা। জবাব দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষীরাও। আতঙ্কের থমথম করছে গ্রামগুলি। তৈরি হয়েছে যুদ্ধের পরিস্থিতি।
নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষ বিরতি ভেঙে গুলিচালনা থামার লক্ষণ নেই। গত সপ্তাহের পরে আজ পাক পার্লামেন্টে ফের একটি প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। সেখানে পাক সেনবাহিনীর এক ক্যাপ্টেনের মৃত্যুর জন্য নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘আগ্রাসন’কে দায়ী করা হয়েছে। তবে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্কে ছেদ না ফেলার কথাও বলেছে পাকিস্তান।
এই মৌখিক চাপানউতোর আর গুলি বিনিময়ের মাঝে পড়ে ভয়ে কাঁপছেন শুধু সাধারণ মানুষ। তাঁদের একটাই প্রার্থনা শান্তি ফেরাও। ঘরবন্দি হয়েই তাঁরা কাটাচ্ছেন দিনের পর দিন। বৃহস্পতিবারও হামিরপুর ও মেন্ধর এলাকায় সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে পাক সেনা। প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র আর কে পালটা জানিয়েছেন, ১০ অগস্ট থেকে এই নিয়ে পুঞ্চ-রাজৌরি এলাকায় মোট ২৮ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটল।
তবে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়লেই তার আঁচ সবার আগে পড়ে নওগামে। ১৯৯০ ও ২০০০ সালের অভিজ্ঞতা এখনও টাটকা এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের মনে। সে সময়ে পাকিস্তানি রেঞ্জারদের কামানের গোলা যখন তখন এসে পড়ত বাড়ির ছাদে। সেই সময়েই গড়া হয়েছিল কিছু ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার। এ বারও আতঙ্কিত মানুষ প্রাণের ভয়ে সেখানেই আশ্রয় নিচ্ছেন। দুরুদুরু বক্ষে আশঙ্কার ঝড়, এ বারেও বোধ হয় তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
অতীতের অভিজ্ঞতার নিরিখেই নওগাম এলাকায় অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েন করেছে ভারত সরকার। এলাকার কিছু ক্ষুব্ধ মানুষের দাবি, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এখনই কড়া পদক্ষেপ করুক দিল্লি। কেউ কেউ আবার বলছেন, উত্তেজনা না-বাড়িয়ে এলাকায় যাতে শান্তি ফেরে সরকারের উচিত সেই পদক্ষেপই করা।
নিয়ন্ত্রণ রেখার ঠিক গায়েই লাউসা গ্রাম। সেখানকার বাসিন্দা প্রৌঢ় রশিদ বাজাদ বলছেন, “যখন তখন হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তানি সেনা। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? সরকারের উচিত মুখের মতো জবাব দেওয়া।” তাঁর দাবি, সংঘর্ষপ্রবণ এলাকাগুলি থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুক স্থানীয় প্রশাসন।
লাউসার বাসিন্দা তরুণ শিক্ষক মহম্মদ ইকবাল চীচি জানাচ্ছেন, “এপ্রিল থেকে মোট ছ’বার গুলি চালিয়েছে পাকিস্তানি রেঞ্জাররা। ভারতীয় জওয়ানদের আউটপোস্টগুলিই শুধু তাদের নিশানা নয়, গুলি এসে পড়ছে গ্রামেও। কিছুদিন আগেই একটি পাক গোলায় আহত হয়েছেন তিন জন গ্রামবাসী। বেপরোয়া মর্টারও চালাচ্ছে পাকিস্তানিরা।” ইকবাল জানাচ্ছেন, বাড়ির একতলার একটি ঘরে তাঁর পরিবারের সকলে আশ্রয় নিয়েছেন। পড়শিরা মাথা গুঁজছেন বাঙ্কারে।”
অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার আব্দুল রশিদ অবশ্য জানিয়েছেন, বাঙ্কার গড়ার জন্য নিয়ন্ত্রণ রেখার আশপাশের গ্রামে ইতিমধ্যেই পরিবারপিছু ১৫,০০০ টাকা করে বিলি করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই সে টাকায় বাঙ্কার গড়েননি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.