লিফটে আটকে পড়েও পুরকর আদায়ে ‘সফল’
কেয়া সাড়ে ন’কোটি টাকার বেশি সম্পত্তিকর আদায় করতে এক সংস্থায় গিয়েছিলেন ওঁরা। লিফট আসতেই হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়লেন সবাই মিলে। লিফটের দরজাও বন্ধ হল। কিন্তু উপরে আর উঠল না। এ দিকে, দরজাও খোলে না। উধাও লিফটমম্যানও। ভয়ে-ভাবনায় প্রায় সাড়ে চার মিনিট কাটার পরে শাবলের চাড় মেরে দরজা খুলে বার করে আনা হল পুরকর বিভাগের ওই কর্মীদের। বৃহস্পতিবার সকালের ওই অভিযানে শুরুতেই এমন ধাক্কা খেলেও অবশ্য কর আদায়ের কাজ আটকায়নি। বিবাদী বাগের ওই সংস্থাটি ড্রাফট ও চেকে কিছু টাকা মিটিয়েছে। বাকি টাকা এক মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
পুরকর্মীদের ওই দলটির অভিযোগ, লিফটে ইচ্ছাকৃত ভাবেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার এক অফিসার বলেন, “ওই ঘটনার পিছনে চক্রান্ত রয়েছে। পুর কমিশনারকে লিখিতভাবে তা জানানোও হয়েছে।” যদিও পুলিশের বক্তব্য, নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে বেশি লোক উঠে পড়াতেই ওই বিপত্তি।
পুরসভা সূত্রে খবর, ওই সংস্থাকে বার বার নোটিস দিয়েও কোনও ফল হয়নি। এ দিন পুর আইনের বিশেষ ক্ষমতা বলে বিবাদী বাগ এলাকায় ১৫ বি এবং ১৫ সি হেমন্ত বসু সরণিতে ওই সংস্থার অফিসে হানা দেন কর বিভাগের একদল কর্মী। উদ্দেশ্য ছিল, ওই বিল্ডিংয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া। অবশ্য সেই অভিযান ঠেকা দিতে এ দিন এক কোটি টাকা পুরসভাকে মেটায় ওই সংস্থা।
পুরসভার কমিশনার খলিল আহমেদ বলেন, “ওই সংস্থা আজ ৭০ লক্ষ টাকার ড্রাফট ও ৩০ লক্ষ টাকার চেক দিয়েছে। বাকি টাকা এক মাসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।”
সম্পত্তিকর আদায়ে এই সাফল্যে খুশি পুর-প্রশাসন। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ রকম আরও কয়েক জন রয়েছেন। প্রত্যেককেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাতে কাজ না হলে এমন অভিযান সে সব ক্ষেত্রেও হবে।”
পুরসভার কর মূল্যায়ন দফতরের এক অফিসার জানান, মাস খানেক আগেই ওই সংস্থাকে ডিমান্ড নোটিস পাঠানো হয়েছিল। ওদের মোট বকেয়া ৯ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। ২০০১ সাল থেকে বাড়তে বাড়তে এই বিশাল অঙ্কে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে তিন বার ওয়েভার স্কিম করা হয়েছে। তাতে ওরা যোগ দেয়নি। ওদের পাঠানো নোটিসে বলা হয় এক মাসের মধ্যে বকেয়া না দিলে তার পরে যে কোনও সময়ে সংস্থার অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। কলকাতা পুর আইন অনুসারে ডিমান্ড নোটিস পাঠানোর পরে সংস্থার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়। এ দিন তা-ই করা হয়েছে।
পুর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে শহরে এক কোটিরও বেশি টাকা সম্পত্তিকর বাকি রাখার তালিকায় ৩০৯টি সংস্থা রয়েছে। তাঁদের কাছে মোট বকেয়া টাকার পরিমাণ ১০২৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা বাকি রয়েছে বিবাদী বাগ এলাকারই একটি সংস্থার। পরিমাণ প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। পুরসভার কর মূল্যায়ন বিভাগের এক অফিসার জানান, ন’কোটিরও বেশি টাকা বকেয়া, এমন সংস্থার সংখ্যা ২৪।
এ দিন বি বা দী বাগের ওই সংস্থায় বকেয়া আদায় নিয়ে ঘণ্টা তিনেক ধরে আলোচনা চলে। তাতে নিষ্পত্তি না হওয়ায় আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে পুর-কমিশনারের কাছে যান সংস্থা-কর্তৃপক্ষ। অফিসের পাহারায় রাখা হয় পুরসভার কর্মী, পুলিশ এবং সিভিক পুলিশকর্মীদের। পুর-কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পরে এক কোটি মেটানোর সিদ্ধান্ত হয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.