প্রেসিডেন্সির কাছ থেকে প্রত্যাশা অনেক এবং তা পূরণে উপাচার্যকেই সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে বলে মনে করেন আচার্য-রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে আচার্য বলেন, গত দু’বছরে প্রেসিডেন্সিতে পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। ভবিষ্যতে তার সুপ্রভাব মিলবে।
প্রেসিডেন্সির বর্তমান উপাচার্য মালবিকা সরকারের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে সম্প্রতি প্রেসিডেন্সির মেন্টর গ্রুপের সঙ্গে রাজ্য সরকারের মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল। শেষ পর্যন্ত আচার্যই মালবিকাদেবীর কার্যকালের মেয়াদ ছ’মাস বাড়িয়ে দেন। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গত দু’বছরে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনের সুপ্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ায় উপাচার্যের সক্রিয় ভূমিকার কথা উল্লেখ করে নারায়ণন কার্যত মালবিকাদেবীর প্রতিই আস্থা প্রকাশ করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, গত দু’বছর তিনিই উপাচার্য পদে রয়েছেন। প্রেসিডেন্সির বিজ্ঞান পঠনপাঠনের প্রশংসা করে আচার্য এ দিন বলেন, “দেশ আশা করে, প্রেসিডেন্সি থেকে সবচেয়ে সেরাটা পাওয়া যাবে।” এর পরেই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় উপাচার্যের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্সির আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবহার করে উপাচার্য এই কাজটা করতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।” গত ১৫ অগস্ট মালবিকাদেবীর ৬৫ বছর বয়স হয়ে যাওয়ায় তাঁর বদলে নতুন উপাচার্য বেছে নেওয়ার জন্য সার্চ কমিটি গড়েছিল রাজ্য সরকার। |
কিন্তু মেন্টর গ্রুপ মালবিকাদেবীর কাজের প্রশংসা করে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষেই মত দেয়। শেষ পর্যন্ত মেয়াদ ছ’মাস বাড়ানো হয়। এই ছ’মাসের মধ্যে নতুন উপাচার্য বাছাই হয়ে গেলে অবশ্য দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে মালবিকাদেবীকে। কিন্তু এ দিন সমাবর্তনের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নারায়ণন জানিয়ে দেন, বর্ধিত মেয়াদের পুরো সময়টাই কাজ করবেন মালবিকাদেবী। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও পরে জানান, পরবর্তী উপাচার্য নিয়ে এখনই কিছু ভাবছে না সরকার।
তবে প্রশংসার পাশাপাশি পশ্চিমী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা নিয়ে এ দিন উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন নারায়ণন। পরে অবশ্য নিজেই জানিয়েছেন, বিশ্বায়নের যুগে এই প্রবণতা অবশ্যম্ভাবী। তাঁর কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সংশোধন প্রয়োজন কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। দরকারে সেগুলি করে ফেলতে হবে।” যদিও কী ধরনের সংশোধনের কথা তিনি বলতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করেননি আচার্য।
এ দিন স্নাতকোত্তরের ৩৪০ জন ছাত্রছাত্রীকে ডিগ্রি দিয়েছে প্রেসিডেন্সি। শিক্ষামন্ত্রী জানান, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৩৩১টি পদ তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৫৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে বলে উপাচার্য জানিয়েছেন। বাকি পদগুলিও দ্রুত পূরণ হবে বলে জানান তিনি।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্যাম পিত্রোদা জানান, প্রয়োজনে প্রেসিডেন্সির মেন্টর গ্রুপকে সাহায্য করতে তিনি প্রস্তুত। বক্তৃতায় তিনি বলেন, “শিক্ষকতা আর গবেষণা আলাদা করলে চলবে না। ভবিষ্যতের শিল্পোদ্যোগী তৈরি করতে হবে। শিক্ষকদের হয়ে উঠতে হবে মেন্টর।” |