শিক্ষককে মারধরে অভিযুক্ত শিক্ষক, তালা পড়ুয়াদের
স্কুলের সিনিয়র শিক্ষককে স্কুল চলাকালীন স্কুলের মধ্যেই মারধর করেছেন এক জুনিয়র শিক্ষক, এই অভিযোগ তুলে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি ও বদলির দাবিতে পড়ুয়ারা তালা দিল স্কুলের গেটে। বৃহস্পতিবার রামপুরহাট থানার তারাপীঠ রোড বামদেব বিদ্যাপীঠের ঘটনা।
স্কুলের পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রীর ওই বিক্ষোভের জেরে স্কুলের শিক্ষক কিংবা অশিক্ষক কর্মী কেউই এ দিন স্কুলে ঢুকতে পারেননি। স্কুল কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে মিড-ডে মিলের রান্নাও হয়নি। দাবি মানা না হলে ওই পড়ুয়ারা লাগাতার বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। এ দিকে রামপুরহাট মহকুমা সহকারি স্কুলপরিদর্শক (মাধ্যমিক) মৈত্রী ভট্টাচার্যকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বলেন, “ঘটনার কথা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।” অন্য দিকে, স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ অঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, “পড়ুয়াদের বিক্ষোভে এ দিন শিক্ষকেরা স্কুলে ঢুকতে পারেননি। সেই জন্য স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলের সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা হবে।”
বিক্ষোভ দেখাচ্ছে রামপুরহাটের তারাপীঠ রোড বামদেব বিদ্যাপীঠের পড়ুয়ারা। ছবি: অনির্বাণ সেন
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি মঙ্গলবার স্কুল ছুটি হওয়ার আগে ঘটে। ঘটনাচক্রে ওই সময়ে পরিচালন কমিটির সম্পাদক ও সভাপতি দু’জনেই স্কুলে উপস্থিত ছিলেন। স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক উত্তম সূত্রধর জানিয়েছেন, মঙ্গলবার স্কুল ছুটি হওয়ার আগে অফিসরুমে নানা বিষয়ে আলোচনা ছাড়াও টিচার-ইন-চার্জের সঙ্গে কর্মশিক্ষা-শারীর শিক্ষার ক্লাস নিয়ে আলোচনা চলছিল। তাঁর দাবি, “ওই সময় স্কুলের এক সহ-শিক্ষিকার নামে অপূর্ব সরকার অভিযোগ করে বলেন, তিনি পরিবেশ পরিচিতি ক্লাসের পরিবর্তে পড়ুয়াদের খেলাধুলা করাচ্ছেন। এর জন্য অপূর্ববাবু টিচার-ইন-চার্জের কাছে ওই সহ-শিক্ষিকার নামে অভিযোগ করেছেন বলেও জানান।” ওই কথা বলার সময় অপূর্ববাবু জানতে পারেন যে, স্কুলের আরেক শিক্ষক রামনারায়ণ ঘোষ হাজরা আগেই তাঁর ওই অভিযোগ সম্পর্কে সহ-শিক্ষিকাকে অবহিত করেছেন। উত্তমবাবু বলেন, “অপূর্ববাবু সে কথা শোনার পরই রামনারায়ণবাবুকে ডাকতে যান। এর পরে তাঁদের মধ্যে কী হয়েছে দেখিনি। পরে রামনারায়ণবাবু মৌখিক ভাবে অপূর্ববাবুর বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের অভিযোগ এনেছেন।” মঙ্গলবারই এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অপূর্ববাবু অভিযোগ অস্বীকার করেন বলে উত্তমবাবু জানিয়েছেন।
এ দিন অবশ্য স্কুলে আসেননি অভিযুক্ত শিক্ষক অপূর্ব সরকার। যাঁর সঙ্গে অপূর্ববাবুর ঝামেলা হয় বলে অভিযোগ, সেই সিনিয়র শিক্ষক রামনারায়ণ ঘোষ হাজরা অবশ্য এসেছিলেন। তিনি বলেন, “ঘটনা সবিস্তারে স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ, স্কুল পরিচালন কমিটি, স্কুলশিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি। তাঁরা যেটা ভাল বুঝবেন, সেটাই করবেন। তবে বিনা দোষে ছাত্রছাত্রীদের সামনে অপূর্ববাবু আমাকে মেরেছেন, এ কথা জোর গলায় বলব।” অন্য দিকে, ফোনে যোগাযোগ করা হলে অপূর্ববাবু বলেন, “রামনারায়ণবাবু আমার সিনিয়র টিচার। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি। ওঁকে মারিনি।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “স্কুলের হয়ে ভাল কাজ করতে গিয়েই রাজনীতির স্বীকার হলাম। কিছু ঘটে থাকলে, তা স্কুলের স্টাফ কাউন্সিল, পরিচালন সমিতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত ছিল। নাটক করে কয়েক জন অভিভাবকের মদতে পড়ুয়াদের এই বিক্ষোভ মোটেই স্কুলের পঠনপাঠনের দিক থেকে ভাল দৃষ্টান্ত তৈরি করল না।”
এ দিন বিক্ষোভের কথা শুনে স্কুলে হাজির হয়েছিলেন পরিচালন কমিটির সম্পাদক ও সভাপতি। সভাপতি প্রসাদ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “মঙ্গলবারই রামনারায়ণবাবুর কাছে লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু উনি অভিযোগ না করে চলে যান। বুধবার তো স্কুল ছুটি ছিল।” তাঁর অভিযোগ, “আসন্ন স্কুল পরিচালন কমিটির ভোটে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই বিরোধীরা মদত দিয়ে এ দিনের কাণ্ডটি ঘটালেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.