নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
র্যাগিংয়ের বিরোধিতা করায় কিছু সহপাঠীর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হত ছেলেটি। শেষে আর মাথার ঠিক রাখতে না পেরে ফল কাটার ছুরি হাতে সে এক বন্ধুর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ।
দুর্গাপুরের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এনআইটি) ওই ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ডও করেছে কলেজ। ছুরিতে জখম ছাত্রটি দুর্গাপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। দু’জনেরই বাড়ি রাজস্থানে।
আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের র্যাগিং করা হবে কি না, তা নিয়েই বুধবার রাতে দুই দল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের মধ্যে বচসা বেধেছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। তখনই ছুরি মারার ঘটনাটি ঘটে। ধৃত ছাত্রের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে।
কিছু দিন ধরেই র্যাগিং নিয়ে দ্বিতীয় বর্ষের দুই দল ছাত্রের মধ্যে বিরোধ বাড়ছিল। আগে কলেজে বহু র্যাগিংয়ের ঘটনায় তা রুখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি হয়েছে। প্রথম বর্ষের ছাত্রদের হস্টেলও বাকিদের থেকে আলাদা করা হয়। তবু চোরাগোপ্তা র্যাগিং চলছে বলে অভিযোগ।
পুলিশ এবং এনআইটি সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে কয়েক জন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ইলেকট্রনিক্স বিভাগের এক সহপাঠীর ঘরে গিয়ে নানা তির্যক মন্তব্য করছিলেন। ওই ছাত্রটি প্রথম বর্ষ থেকেই র্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করে আসছেন এবং সে কারণে মাঝে-মধ্যেই তাঁকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয় বলে পড়ুয়াদের একাংশের দাবি। কিন্তু এ দিন আচমকাই তিনি টেবিলে পড়ে থাকা ফল কাটার ছুরি তুলে নিয়ে সামনে বায়ো-টেকনোলজির এক ছাত্রের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। ছাত্রটির বুক, গলার ধার, পেটের ডান দিক জখম হয়।
খবর পেয়ে হস্টেলের ওয়ার্ডেন চলে আসেন। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে জখম ছাত্রকে হাসপাতালে পাঠিয়ে ইলেকট্রনিক্সের ছাত্রটিকে গ্রেফতার করে। সহপাঠীদের একাংশের ধারণা, র্যাগিং-পন্থীদের বিদ্রুপ সহ্য করতে না পেরেই তিনি মেজাজ হারিয়েছিলেন। যদিও সহপাঠীরা তাঁকে ব্যঙ্গ করত, এমন কোনও অভিযোগ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তিনি পুলিশকে জানাননি। এনআইটি-র রেজিস্ট্রার পিএস সাধু জানান, দুই ছাত্রের বাড়িতেই খবর দেওয়া হয়েছে। কলেজের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিও বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। |