শহরের মানুষের কাছে শুধুই জঙ্গল সাফারি। কিন্তু ওদের কাছে বাঁচার রসদ। জীবনের সঙ্গে ওতপ্রতোভাবে জড়িত বাঁচার নির্ভরতা, খুব কাছের এক অস্তিত্ব। বুধবার রাখি বন্ধনের দিন ইছামতীর চরে মিনি সুন্দরবনে সকালবেলা কেওড়া গাছে রাখি পরিয়ে সুন্দরবন রক্ষার অঙ্গীকার নিল টাকি গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা। সাক্ষী রইল হাজার দশেক গাছ। টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “২১ অগস্ট রাখি পূর্ণিমা। এ দিনই আবার সুন্দরবন দিবস। বোনেরা যেমন ভাইদের হাতে রাখি পরিয়ে তার দীর্ঘায়ু কামনা করে, তেমনই এ দিন আমরা গাছের ডালে রাখি পরিয়ে সুন্দরবনের দীর্ঘায়ু কামনা করলাম।”
ইছামতী বিজ্ঞানমঞ্চের তরফে টাকি পুরমঞ্চে রাখিবন্ধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘সুন্দরবন উৎসব’ পালন করা হল এ দিন। ছিলেন টাকির পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, টাকি গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মনীষা মুখোপাধ্যায়, পার্থ মুখোপাধ্যায়, সৌরভ চক্রবর্তী, সফল সেন, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। আর ছিলেন অভিভাবক, শিক্ষকশিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা। কী ভাবে সুন্দরবন, নদীবাঁধ আর ম্যানগ্রোভ রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। |
ইছামতীর ধারে জালালপুর গ্রামে ৪০ বিঘা জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে মিনি সুন্দরবন। সুন্দরী, কেওড়া, হোগলা, কাঁকড়া, বাইন, গোল, গেঁও, হরকচা, হেতাল গাছের সারি সেখানে। অন্য দিকে, বাংলাদেশের ভাতসালা। গ্রামের পাড় থেকে খালের উপর দিয়ে সোজা চলে গিয়েছে জঙ্গল। রয়েছে একটি ছোটখাটো ‘ওয়াচটাওয়ার’ও। চারপাশে ছোট ছোট খাঁড়ি। সোমনাথবাবু বলেন, “নৌকা বিহারের ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।” পরে পুরপ্রধান যান টাকি সীমান্তে। সঙ্গে যান ছাত্রীরাও। সীমান্তরক্ষীদের হাতে রাখি পরিয়ে দেন ছাত্রীরা। তাঁদের মিষ্টিমুখ করান জওয়ানরা। বললেন, “এমন দিনে বাড়ির কথা, বোনের কথা খুব মনে পড়ছে। এই বোনেরা সেই অভাব মিটিয়ে দিল।” |