কখনও ঝিরঝিরে, কখনও মুষলধারে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া। বুধবার দিনভর এমন আবহাওয়ায় রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকল বর্ধমান শহরে। বাড়িতে থেকে রাখি পূর্ণিমার ছুটি কাটালেন অনেকেই। জনজীবন বিপর্যস্ত হলেও এই বৃষ্টি চাষাবাদে সহায়ক হবে বলে কৃষি ও সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার ধীরেন ধর জানান, ডিভিসি-র মাইথন জলাধার থেকে মঙ্গলাবর রাত থেকে ১২ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। বুধবার রাত থেকে তা ২০ হাজার কিউসেকে ওঠার কথা। তবে তাতে আপাতত বর্ধমান, হুগলি বা হাওড়া জেলার জলবন্দি হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই বলে তিনি জানান। তাঁর কথায়, “অন্তত এক থেকে দেড় লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়া হলে নিম্ন দামোদর এলাকায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে আপাতত সেই পরিমাণ জল ছাড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার সন্নিহিত এলাকায় তেমন ভারী বর্ষণ হয়নি। দুই জলাধারেই জলতল সংরক্ষণ সীমার নীচে রয়েছে।” অজয়, দামোদর বা ভাগীরথীর মতো জেলার সব ক’টি বড় নদী বিপদসীমার নীচ দিয়েই বইছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।
এই বৃষ্টি চাষের পক্ষে সহায়ক হবে বলে ধীরেনবাবু জানিয়েছেন। বুধবার তিনি বলেন, “প্রচুর বৃষ্টিতে ধানচাষের যথেষ্ট সুবিধা হয়েছে। তাই বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়ায় গত কয়েক দিন ধরে লেফ্ট ও রাইট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানালের মাধ্যমে ডিভিসি-র যে সেচের জল পাঠানো হচ্ছিল, তা আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” জেলা কৃষি দফতরের সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় খরিফ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা প্রতি বছরই দু’লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর। অগস্টের মাঝামাঝি তার ৭৫ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এই চাষের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে শতকরা ৯৫ ভাগে।
তবে এত দিনে চাষ করা ধান চারা জমিতে রোয়া হলেও তা থেকে উপযুক্ত ফলন মেলে না বলে দাবি করে থাকেন চাষিরা। তবে এ কথা মানতে চাননি কৃষিকর্তারা। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “এই জেলায় সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত খরিফ ধান চাষ করা যায়। কিন্তু এ বার অগাস্টের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই শতকরা ৯৫ ভাগ জমিতে ধান চাষ হয়ে যাচ্ছে।” |