কয়লা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত নথি হারিয়ে যাওয়া নিয়ে সংসদ অচল করে দিলেন বিরোধীরা। ফলে, খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে সংসদে এগোতেই পারল না আলোচনা। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে কয়লাখনি বণ্টন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তা নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই। ওই সময়ের কয়লাখনি বণ্টন সংক্রান্ত কিছু ফাইল কয়লা মন্ত্রক থেকে উধাও হওয়ার খবর প্রকাশিত হয় সংবাদমাধ্যমে। ফলে, কেন্দ্রকে কোণঠাসা করার সুযোগ পেয়ে যান বিরোধীরা।
যে সময়ের কয়লাখনি বণ্টন নিয়ে বিতর্ক তখন কয়লা মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ফলে, বিরোধীদের অভিযোগের তির সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দিকে।
আজ লোকসভায় বিষয়টি তোলেন বিরোধী দলনেতা সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন, “ওই সময়ে কয়লা মন্ত্রকের সব সিদ্ধান্তের দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাই এখন তাঁর সংসদে বিবৃতি দেওয়া উচিত।” সুষমার বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন বিরোধী সাংসদরা। সুষমা দাবি করেন, কয়লা মন্ত্রকের হারিয়ে যাওয়া ফাইলগুলিতে কয়লাখনির জন্য পেশ করা আবেদনপত্র ছিল। কংগ্রেসের কিছু শীর্ষ নেতা বিষয়টিতে জড়িত বলেই ফাইল অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে বিবৃতি দেওয়ার নির্দেশ দিতে স্পিকারকে অনুরোধ করেন সুষমা।
রাজ্যসভায় কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জায়সবাল জানান, হারিয়ে যাওয়া ফাইলের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। ফাইল খুঁজে পেতে চেষ্টার ত্রুটি হবে না। জায়সবাল বলেন, “আমি যদি এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হই তবে যে কোনও শাস্তি মাথা পেতে নেব।”
তবে জায়সবালের মন্তব্যে সন্তুষ্ট হননি বিরোধীরা। রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি প্রশ্ন তোলেন, “ফাইল হারানো নিয়ে কয়লা মন্ত্রক এফআইআর করেছে কি?”
রাজ্যসভাতেও প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি চেয়ে গোলমাল শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশনই। পরে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “সরকার স্বচ্ছতার পরিচয় দিচ্ছে না কেন? প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়া উচিত।” তাঁর দাবি, ইউপিএ সরকারই সংসদ চালাতে আগ্রহী নয়। আবার তারাই দাবি করছে, বিরোধীরা নাকি খাদ্য বিল পাশ করাতে দিচ্ছেন না।
|