জামুড়িয়ায় বোর্ড গঠনেও কোন্দলে জেরবার তৃণমূল
লের তরফে মনোনীত করা হয়েছে এক জনকে। কিন্তু প্রধান বা উপপ্রধান নির্বাচনের সময়ে দলেরই একাংশ প্রস্তাব করলেন অপর এক জনের নাম। বোর্ড গঠনের সময়ে এমন দৃশ্য দেখা গেল জামুড়িয়ার নানা পঞ্চায়েতেই। পুরো বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলে জামুড়িয়া ২ ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
জামুড়িয়ার পাঁচটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের কথা ছিল ১৬ অগস্ট। দোবরানা পঞ্চায়েতে তৃণমূল চার ও সিপিএম তিনটি আসন দখল করে। তৃণমূল নেতৃত্ব প্রধান পদে ছন্দা পাত্র ও উপপ্রধান পদে সুরেশ পণ্ডিতকে মনোনীত করে। কিন্তু প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরেই ছন্দাদেবী উপপ্রধান পদের জন্য হিরালাল বাউড়ির নাম প্রস্তাব করেন। ভোটাভুটিতে হিরালালবাবু এক ভোটে জেতেন। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, হিরালালবাবুকে ভোট দেন তাঁর খুড়তুতো বোন তথা পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য লক্ষ্মী মুক্তি।
পরাশিয়া পঞ্চায়েতে সাতটি আসনের মধ্যে চারটিতে জিতে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। কিন্তু সেখানেও দ্বন্দ্বে জেরবার তারা। প্রধান নির্বাচনের সময়ে দলীয় নেতৃত্ব মনোনীত সন্তোষ বাউড়ির বিরুদ্ধে লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলের নাম প্রস্তাব করে তৃণমূলেরই একাংশ। বিরোধীরা ভোটদানে যোগ না দেওয়ায় ভোটের ফল দাঁড়ায় ২-২। ফলে, ১৬ তারিখ আর বোর্ড গঠন করা যায়নি। সোমবার বোর্ড গঠন সংক্রান্ত বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, কোন্দলের জন্যই বৈঠক হয়নি।
মদনতোড় পঞ্চায়েতে আটটি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৬টি এবং সিপিএম দু’টি পেয়েছে। উপপ্রধান পদটি তফসিলি জাতি সংরক্ষিত। একই অবস্থা পরাশিয়াতেও। কিন্তু দু’টি পঞ্চায়েতেই তৃণমূলের তফসিলি জাতির কোনও সদস্য নেই। ফলে, উপপ্রধান পদ দু’টি সিপিএমের দখলে যাওয়ার কথা। কিন্তু সিপিএমের অজয় জোনাল সম্পাদক মনোজ দত্তের দাবি, তাঁরা পঞ্চায়েত পরিচালন সমিতিতে যোগ দেবেন না। তাঁর কথায়, “পঞ্চায়েত দখল করতে পারিনি। তাই পরিচালন সমিতিতে যাব না। বিরোধী আসনে বসব।” দোবরানায় তাঁদের প্রার্থী লক্ষ্মী মুক্তি কেন তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীকে ভোট দিল, সে প্রশ্নে মনোজবাবুর বক্তব্য, “এই বিষয়টি পর্যালোচনা করে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”
তৃণমূলের জামুড়িয়া ২ ব্লক সভাপতি তাপস চক্রবর্তী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুকুমার ভট্টার্চাযদের গোষ্ঠীর সঙ্গে রথীন কুণ্ডু, গোপীনাথ পাত্র ও কল্যাণ ঘোষেদের গোষ্ঠীর বিবাদ বেশ কিছু দিনের। যদিও গত বিধানসভা ভোটের ছ’মাস পরেও রথীনবাবুরা তাপসবাবুদের সঙ্গে ছিলেন। আবার ব্লক সভাপতি পদটি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তাপসবাবুর অনুগামীদের সঙ্গে মুকুলবাবুদের গোষ্ঠীর রীতিমতো মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শেষে দল তাপসবাবুকেই ব্লক সভাপতি পদে বহাল রাখার পরে মুকুলবাবুরা তাপসবাবুর ঘনিষ্ঠ হন। তখন থেকেই গোপীনাথবাবুদের সঙ্গে তাপসবাবুদের দূরত্ব বাড়ে। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই চিচুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দশটি আসনে সিপিএম প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিলেও তৃণমূল প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই হয় তৃণমূলেরই টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে দাঁড়ানো প্রার্থীদের। ছ’টি আসনে প্রার্থী হন নির্দলেরা। তিনটি আসনে তাঁরা জেতেন।
চিচুড়িয়ায় প্রধান নির্বাচিত হন রথীনবাবুর স্ত্রী চামেলি কুণ্ডু। কিন্তু উপপ্রধান পদে দল মনোনীত পল্টু মণ্ডলের পরিবর্তে জিতেন গড়াইয়ের নাম প্রস্তাব করে ভোট দেন তৃণমূল থেকে জয়ী তিন জন ও নির্দলের তিন জন সদস্য। ফলে, জিতেনবাবুই উপপ্রধান হন। রথীনবাবুর বক্তব্য, “দু’তিন জনের কথায় দলের ব্লক সভাপতি একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রার্থী নির্বাচনের সময়েই তাপসবাবুর ব্লকের কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত তিনি তা করেননি। ফলে, এই অবস্থা।” তাপসবাবু অবশ্য বলেন, “পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। যা করার তাঁরাই করবেন।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.