পাশে দাঁড়ায়নি সরকার, ক্ষুব্ধ মলয়ের পরিবার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
ঘটনার পরে সপ্তাহ ঘুরল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে কেউ তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি বা পাশে দাঁড়াননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন আইএনএস সিন্ধুরক্ষকে দুর্ঘটনার শিকার মলয় হালদারের বাবা মৃণাল হালদার। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “কোনও আর্থিক সাহায্য বা চাকরি চাই না। কিন্তু আমাদের এই কঠিন সময়ে কেউ পাশে দাঁড়ালে আমরা জোর পেতাম।” এ দিনই নৌবাহিনীর দুই আধিকারিক তাঁর ডিপিএল কলোনির বাড়িতে এসে ডিএনএ-র নমুনা নিয়ে যায়।
১৩ অগস্ট ভোররাতে মুম্বইয়ে নৌবাহিনীর বন্দরের অদূরেই বিস্ফোরণ ঘটে আইএনএস সিন্ধুরক্ষকে। বছর বাইশের মলয়ও ছিলেন সেই ডুবোজাহাজটিতে। মোট ১৮ জনের মধ্যে ১৭ অগস্ট দুপুর পর্যন্ত চার জনের দেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু দেহগুলির অবস্থা এমন ছিল যে চোখে দেখে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। সেগুলি পাঠানো হয় নৌবাহিনীর হাসপাতাল আইএনএস অশ্বিনীতে। ১৪ অগস্ট দুপুরেই স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে মুম্বই রওনা হয়েছিলেন মলয়ের বাবা ডিপিএলের কর্মী মৃণালবাবু। কিন্তু ছেলেকে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা কার্যত ত্যাগ করে শনিবার তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন। |
বাড়িতে নৌবাহিনীর আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র। |
খবর শোনার পর থেকেই শোকের আবহ মৃণালবাবুদের পাড়ায়। আশপাশের বাসিন্দারা মাঝে-মাঝেই যাওয়া-আসা করছেন তাঁদের বাড়িতে। ছেলের শোকে মৃণালবাবুর বাড়িতে প্রায় অরন্ধনের পরিস্থিতি। প্রতিবেশীরাই খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার দুপুরে নৌবাহিনীর দুই আধিকারিক এলে ভিড় বেড়ে যায়। তাঁরা এ দিন উদ্ধার হওয়া চারটি দেহের মধ্যে মলয়ের দেহও আছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
মলয়ের ভাই কলকাতার একটি কলেজের স্নাতকের পড়ুয়া। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নৌবাহিনীর তরফে ইতিমধ্যে ফোন করে মলয়দের বাড়ির সদস্যদের সম্পর্কে নানা তথ্য নেওয়া হয়েছে। তবে মলয়ের ভাইকে নিয়োগ বা অন্য কোনও রকম আশ্বাস এখনও মেলেনি। এ দিন তাঁদের বাড়িতে আসা নৌবাহিনীর আধিকারিকেরাও কোনও বিষয়ে মুখ খোলেননি।
তবে ঘটনার পর থেকে রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ না করায় ক্ষুব্ধ মৃণালবাবু। তিনি যে সংস্থার কর্মী, সেই ডিপিএলের আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাসের বক্তব্য, “আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।” বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ সাইদুল হক বলেন, “আমি খবর পেয়েই ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁদের পাশে আছি।” আজ, বুধবার বিকেলে দিল্লি থেকে ফিরে মৃণালবাবুর বাড়িতে যাবেন বলেও জানান তিনি।
|