ঋণের টোপে চেক-চালিয়াতি, টাকা লোপাট
ত্তর কলকাতার টালার পরে দক্ষিণের যাদবপুর। ব্যাঙ্কঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে ফের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। দু’টি ক্ষেত্রেই চেকে কারচুপি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে দুষ্কৃতীরা। এবং দু’টি ঘটনাতেই একটি চক্রের হাত আছে বলে পুলিশের সন্দেহ।
পুলিশি সূত্রের খবর, ব্যাঙ্কঋণের আশ্বাস দিয়ে ‘ক্যানসেল’ চেক নিয়ে শুক্রবার তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন শিবময় চট্টোপাধ্যায় নামে বিজয়গড়ের এক বাসিন্দা। কী ভাবে হল এই জালিয়াতি?
শিবময়বাবু জানান, অজানা নম্বর থেকে তাঁর কাছে একটি ফোন এসেছিল। অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এজেন্ট বলে নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁকে অপেক্ষাকৃত কম সুদে চটজলদি ব্যাঙ্কঋণ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। পেশায় ব্যবসায়ী শিবময়বাবু দু’বার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। পরের মাসেই বেঙ্গালুরুতে গিয়ে তাঁর বাইপাস সার্জারি করানোর কথা। সেই জন্য টাকার দরকার থাকায় তিনি ঋণের ব্যাপারে আগ্রহ দেখান।
ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, এর পরে রাজীব রায় নামে এক ব্যক্তি শুক্রবার ঠিকানা নিয়ে বাড়িতে এসে তাঁর কাছ থেকে ঋণের আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করেন। রাজীবের কথামতো তাঁকে একটি ‘ক্যানসেল’ চেক দিয়েছিলেন শিবময়বাবু। তিনি জানান, সেই মুহূর্তে হাতের কাছে কোনও পেন না-থাকায় রাজীবই তাঁকে একটি পেন দেন। অভিযোগ, সেই ‘ক্যানসেল’ চেক দিয়েই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৬ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। শুক্রবার ১২টা নাগাদ নিজের প্রয়োজনেই ব্যাঙ্কে গিয়ে শিবময়বাবু জানতে পারেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে শুভাশিস দাস নামে এক ব্যক্তি ওই টাকা তুলে নিয়েছেন। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, ওই দিন বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে টাকা তোলা হয়েছে। তার পর থেকে তিনি অভিজিৎ ও রাজীবকে ফোনে পাননি। অবশেষে যাদবপুর থানায় অভিজিৎ, রাজীব ও শুভাশিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন শিবময়বাবু।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, শিবময়বাবু পেন চাওয়ায় রাজীব তাঁকে দু’টি পেন দিয়েছিল। একটিতে ছিল ‘ভ্যানিশিং ইঙ্ক’। যা দিয়ে লেখার ৩০ মিনিট পড়েই কালি উধাও হয়ে যায়। শিবময়বাবুকে কথাবার্তায় ব্যস্ত রেখে সেই পেন দিয়ে চেকের অন্যান্য অংশ লিখিয়ে নিয়েছিল রাজীব। তার পরে সই করার জন্য অন্য কোনও সাধারণ পেন এগিয়ে দেয় এবং ওই ব্যবসায়ী সেই পেন দিয়ে সই করেন। ফলে চেকের মধ্যে সই ছাড়া অন্য সমস্ত লেখাই গায়েব হয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, আগেও এই ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। দুষ্কৃতীরা এ-সব ক্ষেত্রে একই রকমের একাধিক পেন সঙ্গে রাখে এবং হাতসাফাই করে শিকারের অন্যমনস্কতার সুযোগে কাজ হাসিল করে। শিবময়বাবুর ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে শনিবার টালা থানা একই অভিযোগে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে। ওই তিন জনও প্রতারণার জন্য একই পন্থা অবলম্বন করেছিল। তাই তারাই শিবময়বাবুর টাকা হাতিয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করে শনাক্ত করার জন্য তাঁকে থানায় ডাকা হয়। তবে ধৃতদের মধ্যে কাউকে চিহ্নিত করতে পারেননি শিবময়বাবু।
ওই ব্যবসায়ী দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করতে না-পারলেও ধৃতদের সঙ্গে তাঁর টাকা হাতানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের সম্পর্কের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। তাদের অনুমান, এই ধরনের প্রতারণায় একটা বড় চক্র জড়িত। তারা ছক কষেই ঋণের টোপ দিয়ে ফোন করে। কেউ রাজি হলে তাঁর বাড়িতে গিয়ে একই ভাবে ‘ক্যানসেল’ চেকের চাল চেলে টাকা হাতায়।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.