আনন্দplus এক্সক্লুসিভ
স্বস্তিকা পাওলির রঙিন অ্যালবাম
“আচ্ছা শোনো, একটা স্টোরি আছে। আমি একটা ফিল্ম করছি, ‘ফ্যামিলি অ্যালবাম’। ডু ইউ নো দ্য কাস্ট? স্বস্তিকা আর পাওলি একসঙ্গে এ বার,” ফোনের ওপার থেকে বলেন পরিচালক মৈনাক ভৌমিক।
স্বস্তিকা এবং পাওলি! একসঙ্গে? একই ফিল্মে? দু’জনকে রাজি কী করে করলেন? প্রশ্ন করি মৈনাককে।
“ইয়েস ইয়েস। একই ছবিতে দু’জন। শুধু তাই নয়। এই ছবিতে দে প্লে লাভার্স। পাওলি ইজ দ্য ম্যান। স্বস্তিকা ইজ দ্য ওম্যান। তা বলে কিন্তু ওরা লেসবিয়ান নয়। দে আর জাস্ট হ্যাভিং ফান,” সিরিয়াসলি বলেন পরিচালক।
একে স্বস্তিকা-পাওলি একসঙ্গে। তার ওপর একে অপরের প্রেমিক। স্টোরি হিসেবে তো ব্রিলিয়ান্ট। কিন্তু হবে তো ছবিটা? স্বস্তিকা-পাওলি যে একে অপরের বন্ধু এমন ‘অভিযোগ’ তো কোনও দিন শুনিনি।
মৈনাকের সঙ্গে সেই কথোপকথনের কথা ভাবতে ভাবতেই পৌঁছনো গেল ফটোশ্যুটে।

দু’জনে আলাদা আলাদা মেক আপ রুমে
সেই স্টুডিয়োতেই এর আগে অনেকের ফটোশ্যুট করিয়েছি। একটাই মেক আপ রুম অনায়াসে শেয়ার করতে দেখেছি রচনা, শ্রাবন্তী, গার্গী রায় চৌধুরীদের।
কিন্তু এইবার যেন পরিস্থিতি একটু আলাদা।
ওপরের মেক আপ রুমে স্বস্তিকা। নীচে পাওলি। স্টুডিয়োতে একটা চাপা টেনশন সবার মধ্যে।
এবং কেনই বা হবে না?

‘ফ্যামিলি অ্যালবাম’ ছবির ফার্স্ট লুক
মৈনাকের আনরিলিজড ছবি ‘টেক ওয়ান’য়ের বিষয়বস্তু, ‘ছত্রাক’য়ের সেই এমএমএস ক্লিপের পরে পাওলির জীবন কী ভাবে পাল্টে গিয়েছিল তাই নিয়ে। পরদায় সেই চরিত্রেই আবার অভিনয় করছেন স্বস্তিকা। শোনা যায় এই নিয়ে নাকি পরিচালক মৈনাকের কাছে এক সময় যথেষ্ট অসন্তোষও প্রকাশ করেছিলেন পাওলি।
এই রকম ‘কোল্ড’ যেখানে সম্পর্ক তাতে মেক আপ রুম আলাদা হবে তাতে আর আশ্চর্য কী?

মোটেই আমরা ভাল বন্ধু নই
তখন ক্যামেরাম্যান লাইট করছেন। এমন সময় স্বস্তিকাকে জিজ্ঞেস করলাম, শোনা তো যায় আপনার আর পাওলির মধ্যে খুব রাইভ্যালরি। সেটা কি সত্যি?
“হি হা হি হা! আমি না এগুলো শুনে খুব হাসি। আসলে কী বলুন তো? পাওলি আমার থেকে অনেক জুনিয়র। আমি ধরছি ২০০৮-য়ের ‘কালবেলা’ থেকে শুরু করেছে ও। তার আগে কোন কোন হিরোইনের বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছে সেগুলো ধরছি না। তাই ২০০৮এ যদি ও শুরু করে থাকে, আমি তো সেই ২০০২ থেকেই চুটিয়ে কাজ করছি। রাইভ্যালরিটা কোথা থেকে হবে? আর যদি বন্ধুত্বের কথা বলেন, আমি ওকে চিনি, আমরা এক ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি কিন্তু মোটেই আমরা খুব ভাল বন্ধু নই,” নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বললেন স্বস্তিকা।
আচ্ছা এই ছবিটা করতে রাজি হলেন কেন?
“মৈনাকের জন্য। ও আমাকে সব সময় এমন রোল দেয় যা আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে চ্যালেঞ্জ করে। দর্শকদের চিন্তাধারাকেও চ্যালেঞ্জ করে।
তাই জন্য করা। আর কে কী বলল তাতে কিছু এসে যায় না। এটুকু বলব ‘টেক ওয়ান’য়ে কিন্তু আমি পাওলির চরিত্রে নয়, একজন অভিনেত্রীর চরিত্র করছি,” বলেন স্বস্তিকা।

টেনশন করলে কাজ করব কী করে
পাওলিও স্বীকার করছেন ‘ফ্যামিলি অ্যালবাম’ ছবিটি তিনি মৈনাকের জন্যই করেছেন। “মৈনাক এর আগে তিনটে ছবি অফার করেছিল। কিন্তু ডেটের সমস্যার জন্য আমি করতে পারিনি। কিন্তু এই ছবিটা এত মিষ্টি একটা ছবি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলাম।”
স্বস্তিকার সঙ্গে যে কাজ করতে কোনও টেনশন নেই সেটাও স্পষ্ট করেই বললেন পাওলি। “ধুর, টেনশন করলে কাজ করতে পারব নাকি! আমরা দু’জনেই প্রফেশনাল। নিজেদের কাজ করে বাড়ি যাব। স্বস্তিকার সঙ্গে রাইভ্যালরি আছে কি নেই এ সব নিয়ে ভাবি না। আর ইন্ডাস্ট্রিতে তেমন কেউ আমার বন্ধু নয়। সুতরাং স্বস্তিকাকে খুব ভাল বন্ধু কী করে বলব বলুন?” জানলার দিকে তাকিয়ে বলেন পাওলি।
স্বস্তিকার মেকআপ রুমে এসি ফুল চলছে। পাওলিরও তাই।
কিন্তু তাপমাত্রা যে ক্রমশ বাড়ছে মৈনাকের ঘনঘন সিগারেট খাওয়া দেখেই বোঝা যায়।
আমি আর পাওলি কী ভাবে লেসবিয়ান হব, উই লভ মেন
এ রকম একটা পরিবেশে ফটোশ্যুট শুরু হল বলে। তার আগে পরিচালককে জিজ্ঞেস করলাম এই ছবিতে কি দুই নায়িকা লেসবিয়ান?
“না, না। একেবারেই লেসবিয়ান নয় ওরা। দু’জনেই সাধারণ বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। স্বস্তিকার চরিত্রের নাম মৈত্রেয়ী। পাওলির নাম আত্রিকা। দু’জনেই এক্সপেরিমেন্ট করছে তাদের জীবন নিয়ে। কিন্তু এটা মোটেই ‘ফায়ার’য়ের মতো সিরিয়াস ছবি নয়। আবার সস্তা হিন্দি ছবির মতো চিপ নয়। এটা একটি মিষ্টি প্রেমের ছবি,” বলছেন মৈনাক।
স্বস্তিকাও স্বীকার করছেন এটা মোটেই লেসবিয়ানদের নিয়ে ছবি নয়।
“ধুর একেবারেই লেসবিয়ান ফিল্ম নয়। আমি আর পাওলি লেসবিয়ান কি কেউ বিশ্বাস করবে? উই বোথ লভ মেন,” হাসতে হাসতে বলেন স্বস্তিকা।
পাওলিও বলছেন একই কথা। “লেসবিয়ানিজমের গল্প নয়। এখানে দুটি মেয়েই তাদের জীবন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছে। নিজেদের চেনার চেষ্টা করছে। ইট ইজ এ সুইট লভ স্টোরি,” বলছেন পাওলি।

একটু কি চুমু খাওয়া যায়
এই রকম নানা টেনশন, আর টুকরো কথাবার্তার মধ্যেই শুরু হল ফটোশ্যুট।
পরিচালক মৈনাক তখন পেছন থেকে বলছেন, “পাওলি একটু কি চুমু খাওয়া যায় স্বস্তিকার গালে?”
“গালে? কিন্তু তা হলে আমাকে তো আরও ঝুঁকতে হবে, চুলটা নষ্ট হয়ে যাবে না তো?” প্রশ্ন করেন পাওলি।
“ও কে, তা হলে ছেড়ে দাও। যেটা করা যেতে পারে, স্বস্তিকাকে একটু কাছে টেনে নিতে পারবে? যেমন ছেলেরা করে থাকে, হঠাৎ করে,” সিগারেট খেতে খেতে বলেন পরিচালক।
স্বস্তিকা তখন হাসছেন। “আরে মৈনাক, পাওলি আমাকে টানতে পারবে না। তার থেকে ভাল, আমি এগিয়ে যাই ওর দিকে,” চশমা ঠিক করতে করতে বলেন স্বস্তিকা।
প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে দুটো চেঞ্জ সমেত অবশেষে শেষ হল ফটোশ্যুট।
পাওলি, স্বস্তিকা, ছাড়াও ছবিতে থাকছেন রিয়া সেন এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নাতি রণদীপ বসু। ছবিটি প্রযোজনা করছেন ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন। ছবিটির সঙ্গীত পরিচালনা করছেন অনুপম রায়।
যতই চাপা টেনশন থাকুক, ফটো শ্যুটের সময় কিন্তু দুই নায়িকাই দেখালেন তাঁদের প্রফেশনালিজম। কোনও আড়ষ্টতা দেখলাম না তাঁদের।
ফটোশু্যট শেষ হতেই অবশ্য দু’জনে আলাদা আলাদা বেরিয়ে গেলেন। এটা বুঝলাম অক্টোবর থেকে যখন শ্যুটিং শুরু হবে, দুই নায়িকার এই চাপা টেনশন কিন্তু মাঝেমধ্যেই মাথাচাড়া দিতে বাধ্য।
এ ছাড়াও সব ফ্রেমের নেপথ্যেই নিশ্চয়ই থাকবে অনেক অনেক গল্প।
যেমন থাকে সব ‘ফ্যামিলি অ্যালবাম’-এ।

ধুর, একেবারেই
লেসবিয়ান ফিল্ম নয়। আমি
আর পাওলি লেসবিয়ান এটা
কি কেউ বিশ্বাস করবে?
উই বোথ লভ মেন

এটা মোটেই ‘ফায়ার’য়ের
মতো সিরিয়াস ছবি নয়।
আবার সস্তা হিন্দি ছবির
মতো চিপ নয়। এটা একটি
মিষ্টি প্রেমের ছবি

টেনশন করলে কাজ করতে
পারব নাকি! নিজেদের কাজ
করে বাড়ি যাব। স্বস্তিকার সঙ্গে
রাইভ্যালরি আছে কি নেই
এ সব নিয়ে ভাবি না

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় মৈনাক ভৌমিক পাওলি

ছবি: সোমনাথ রায়; স্বস্তিকার স্টাইলিং: অজপা মুখোপাধ্যায়
মেক আপ: নবীন দাস, হেয়ার স্টাইল: সীমা,
পাওলির স্টাইলিং: নেহা পণ্ডা মেক আপ: অনিরুদ্ধ চাকলাদার, হেয়ার স্টাইল: নুর



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.