‘শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (এসজেডিএ) সহকারী ইঞ্জিনিয়ার মৃগাঙ্কমৌলি সরকার-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে আরও একটি আর্থিক দুর্নীতির মামলা আনল পুলিশ।
শনিবার মৃগাঙ্কমৌলিবাবু ও ঠিকাদার সংস্থার কর্মী অমলকৃষ্ণ সাহাকে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো হয়। ওই দু’জনকে প্রায় তিন মাস আগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত চারটি প্রকল্পের প্রায় ৫০ কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে এসজেডিএ।
পুলিশ সূত্রের খবর, মালবাজার শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৯ কোটি টাকা কাজ না করিয়েই ঠিকাদার সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগে মৃগাঙ্কবাবুুকে এ দিন গ্রেফতার দেখানো হয়। বাকি তিনটি অর্থাৎ বাগডোগরা, ময়নাগুড়ি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো এবং ‘মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যান’-এ নিকাশি তৈরি নিয়ে যে অভিযোগ, তা নিয়ে অমলকৃষ্ণবাবুকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বিচারক দুজনকেই ২৬ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আদালতে মৃগাঙ্কবাবুর আইনজীবী পার্থ চৌধুরী এ দিন বলেন, ‘‘প্রায় একই ধরনের অভিযোগে আলাদা করে গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। |
মামলা দীর্ঘায়িত করে কাউকে আড়াল চেষ্টা হচ্ছে কি না সেটাও দেখা জরুরি।” তবে সরকারি পক্ষের আইনজীবী সুদীপ রায় বাসুনিয়া বলেন, “অভিযুক্ত সংস্থার তরফে অমলকৃষ্ণবাবু পুলিশকে চিঠি দিয়ে দাবি করেছিলেন, যে ক’টি প্রকল্প নিয়ে মামলা হয়েছে, সবক’টি ক্ষেত্রেই সরঞ্জামই সংশ্লিষ্ট জায়গায় রাখা আছে। তাই সব মামলায় তিনি জড়িয়ে পড়েছেন।”
মাস ছ’য়েক আগে বাগডোগরা শ্মশানে ঘটা করে বৈদ্যুতিক চুল্লি ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। এসজেডিএ-র তদন্তে ধরা পড়ে, কাজ না হলেও ঠিকাদার সংস্থাকে টাকা দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে ‘মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যান’-এর নিকাশি প্রকল্প ও ময়নাগুড়ি ও মালবাজারে শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর ক্ষেত্রেও কাজ না করিয়ে টাকা দেওয়া হয়েছে বলে এসজেডিএ-এর অভিযোগ। এখন পর্যন্ত ওই চারটি মামলায় ৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ওই মামলার নানা তথ্য ও অভিযোগের ব্যাপারে এসজেডিএ-র প্রাক্তন চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার তথা বর্তমানে মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমারকে একাধিক বার জেরা করা হয়। এসজেডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, সংস্থার তিন সদস্যমাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক তথা দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকার, তৃণমূলের শিলিগুড়ির কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার সভাপতি চন্দন ভৌমিককেও জেরা করেছে পুলিশ। প্রাক্তন সিইওর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ডিজির কাছে অনুমতিও চায় পুলিশ।
তবে প্রকল্পগুলির ব্যাপারে অন্য যাঁদের জেরা করা হয়েছে, তাঁদের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, সেই ব্যাপারে পুলিশ কী রিপোর্ট দেয় সে দিকেই এখন তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।
|