সমস্যা জিইয়েই থাকল। তবে ১৯ অগস্ট থেকে দু’দিনের বাস ধর্মঘট তুলে নিলেন বাস-মিনিবাস মালিকেরা। ২০ তারিখ থেকে অনির্দিষ্ট কালের স্কুলগাড়ি ধর্মঘট অবশ্য হচ্ছেই।
শনিবার বাস ও মিনিবাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের মহাকরণে বৈঠকে ডেকেছিলেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। ঘণ্টা দেড়েক আলোচনার পরে বেরিয়ে মালিকপক্ষ জানান, মন্ত্রীর কথায় তাঁরা বাস ভাড়া বাড়ানোর একটা ইঙ্গিত পেয়েছেন। তাই আপাতত ধর্মঘট হচ্ছে না। পরিবহণমন্ত্রী অবশ্য এমন কোনও ইঙ্গিত দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “বাস মালিকদের প্রতি আমি সহানুভূতিশীল। ওঁদের সমস্যা অবশ্যই গুরুতর, মানছি। সরকারি বাসও ভর্তুকিতে চলছে। তার পরেও বলছি, ভাড়া বাড়ানোর মতো পরিস্থিতি এখনও হয়নি।” বাস মালিকদের প্রতি মন্ত্রীর প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি, “আমি ওঁদের বলছি, জোর করে ধর্মঘটের পরেও যদি ভাড়া না বাড়ে, তখন কী হবে? ধর্মঘট বন্ধ্যা-পথ। ওই পথে না যাওয়া ভাল। আলোচনার টেবিলেই থাকুন।”
বাস-মিনিবাসের মালিকদের এ দিনের বৈঠকে ডাকা হলেও গরহাজির ছিলেন স্কুলগাড়ির মালিক সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কনট্রাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’। তারাই ২০ তারিখ থেকে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট ডেকেছে। ওই সংগঠনের নেতা হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের বৈঠকে ডাকা হয়নি। ধর্মঘট হচ্ছেই।” পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময়েই ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বাস-মিনিবাস মালিকেরা। এ কথা জানিয়ে মদনবাবু বলেন, “বাস মালিকেরা মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠি আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেব।”
বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠনের পক্ষে সাধন দাস, দীপক সরকার ও অবশেষ দাঁ বলেন, “এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ভাড়া বাড়ার একটা ইঙ্গিত পেয়েছি। বাস চালানোর ক্ষেত্রে আরও যে সব সমস্যা রয়েছে, সেগুলিও সরকার গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।” বাস মালিকরা বলেন, স্কুল-কলেজে পরীক্ষার কথা মনে রেখে এবং মন্ত্রীর অনুরোধে প্রস্তাবিত ধর্মঘট তাঁরা স্থগিত রাখছেন। মালিকপক্ষ বলেন, ডিজেল-সহ নানা সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই রাজ্যে ৪০ শতাংশ বাস বসে গিয়েছে। কলকাতায় আট হাজার বেসরকারি বাসের মাত্র চার হাজার চলছে। আর মিনিবাস চলছে ১৮০০-এর মধ্যে ১২০০টি। বেশির ভাগ মালিকই ব্যাঙ্কঋণ মেটাতে পারছেন না।
বাস-মিনিবাস মালিকেরা আপাতত ধর্মঘট তুললেও জয়েন্ট কাউন্সিল অফ লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ভাড়াবৃদ্ধি-সহ আট দফা দাবির ভিত্তিতে তারা আন্দোলনে নামতে চলেছে। ৭ সেপ্টেম্বর তাদের বার্ষিক সভায় এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত ঘোষ বলেন, “চলতি বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাড়া বাড়ানো না হলে আমাদের পক্ষে ব্যবসা চালানো অসম্ভব।” |