অব্যাহতি চেয়ে অনড় উপাচার্য
সুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছিলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অচিন্ত্য বিশ্বাস। রাজ্যপাল তাঁকে অব্যাহতি দিতে চাইছেন না। রাজ্যপাল অচিন্ত্যবাবুকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। তবুও অচিন্ত্যবাবু অনড়। শুক্রবার দুপুরে কলকাতা থেকে ফোনে অচিন্তব্যবাবু বলেন, “অসুস্থতার কারণে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি চেয়ে ১১ জুলাই রাজ্যপালকে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। রাজ্যপাল ১৬ জুলাই চিঠি পাঠিয়ে আমাকে জানিয়েছিলেন কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য। রাজ্যেপালের চিঠি ২৬ জুলাই পেয়েছি।” তিনি বলেন, “রাজ্যপাল কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বললেও মালদহে গিয়ে আমার পক্ষে কাজ চালানো সম্ভব নয়।”
কেন সম্ভব নয়? গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “মালদহে যে সব রাজনৈতিক নেতা নেত্রী আছেন তাঁদের সম্পর্কে আমার উচ্চ ধারণা নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করার মতো ওঁদের সেই শিক্ষা আছে কি না, আমার সন্দেহ আছে। আমি ওই সব নেতা নেত্রীদের কাজে বিরক্ত। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও আমি আর মালদহে কাজে যোগ দেবো না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, আমি যেখানে কাজ করতাম, সেখানে আমি অনেক শান্তি পেতাম। আমি আবার সেখানে কাজে যোগ দেব।”
এদিকে উপাচার্যের কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলের সদস্যরাই নানা প্রশ্ন তুলেছেন। কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য দুলাল ঘোষ বলেন, “আমি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলাম। আমার অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যপাল উপার্চাযকে শো-কজ করেছিলেন। উপাচার্য অচিন্ত্যবাবু গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনসম্মত একটি কাজও করেননি। এর জন্য তাঁর জেল হওয়া উচিত। নিজের কুর্কীতির ধরা পড়ে গিয়েছে, সেই কারণে তিনি মালদহে আসতে ভয় পাচ্ছেন। সেই জন্যই কাজে যোগ দিতে চাইছেন না।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০১২ সালে ১৪ মে উপাচার্য গোপা দত্তের স্থলাভিষিক্ত হন অচিন্ত্যবাবু। ১৮ মাসের জন্য তাঁকে ওই পদে বসায় বর্তমান সরকার। দায়িত্ব পাওয়ার পরে নানা বেআইনি কাজ করার অভিযোগ ওঠে অচিন্ত্যবাবুর বিরুদ্ধে। অভিযোগগুলি এরকম, আইন অনুযায়ী তিন মাসে একটি করে কাউন্সিলের বৈঠক হওয়ার কথা। অথচ এখনও আইন সম্মতভাবে কাউন্সিলের একটি মিটিংও ডাকেননি তিনি। দ্বিতীয়ত, কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন অধিকারিককে বরখাস্ত করেছেন উপাচার্য। তৃতীয়ত, কাউন্সিলের অনুমোদন না নিয়ে সিলেকশন কমিটি তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর অবৈধ নিয়োগ করেছেন। চতুর্থত, রাজ্য সরকার ও আচার্যের প্রতিনিধি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিট অফিসার নিয়োগ করেছেন উপাচার্য। তা ছাড়া, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবিধি (স্ট্যাট্যুট) তৈরিতে উদ্যোগী হননি তিনি।
এ সব অভিযোগ আচার্য তথা রাজ্যপালকে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির কয়েকজন। ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “অচিন্ত্যবাবুর উপাচার্য হওয়ার কোনও যোগ্যতা ছিল না। আমরা রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু অচিন্ত্যবাবু দায়িত্ব নিয়েই রাজ্য সরকারের সমালোচনা শুরু করছেন। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। মালদহে আমরা ওঁকে এত সাহায্য করেছিলাম, কিন্তু উনি কোনও কাজ করলেন না। যা কাজ করলেন সবই বেআইনি। আসলে এই উপাচার্য শিক্ষিত নন।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, আগামী ১৪ নভেম্বর অচিন্ত্যবাবুর মেয়াদ শেষ হবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.