প্রস্তাবিত জেলা পারিবারিক আদালতের স্থান নির্বাচন নিয়ে চুঁচুড়া এবং শ্রীরামপুর আদালতের আইনজীবীদের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। চুঁচুড়া আদালতের আইনজীবীদের দাবি, জেলা সদর চুঁচুড়াতেই ওই আদালত হওয়া যুক্তিসঙ্গত। এর পাল্টা শ্রীরামপুর আদালতের আইনজীবীদের দাবি, জেলার সব জায়গা থেকে সহজেই শ্রীরামপুরে আসা যায়। ভৌগোলিক কারণ ছাড়াও অন্য অনেক সুবিধা আছে। একমাত্র শ্রীরামপুর আদালতেরই নিজস্ব জায়গা রয়েছে। এই যুক্তিতেই ওই আদালত শ্রীরামপুরে থাকা যুক্তিসঙ্গত।
এই চাপান-উতোরকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই দু’টি আদালত এখন রীতিমতো সরগরম। বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর আদালতের কয়েকশো আইনজীবী কর্মবিরতি পালন করেন। এর আগে চুঁচুড়া আদালতে গত মাসে আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করেছিলেন। দুই আদালতের আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে বিচারপ্রার্থীরা বিপাকে পড়েন।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পারিবারিক আদালত ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে। আইনজীবীদের দাবি, এ রাজ্যে হুগলিতেই প্রথম ওই আদালত হতে যাচ্ছে। কিন্তু আইনজীবীদেরই একাংশের আশঙ্কা, এই চাপান-উতোরের মধ্যে পড়ে জেলা পারিবারিক আদালতের উদ্যোগ শুরুতেই ধাক্কা খাবে।
চুঁচুড়া আদালতের আইনজীবীদের বক্তব্য, বর্ধমান ডিভিশনের সদর চুঁচুড়া। সে জন্য জেলা পারিবারিক আদালতের পাষাপাশি ইনড্রাস্টিয়াল এবং জুভেনাইল আদালত চুঁচুড়াতেই হওয়া যুক্তিসঙ্গত। হুগলি জেলা বার লাইব্রেরির প্রাক্তন সহ-সভাপতি বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী বলেন, “এশিয়ার সব আদালতের মধ্যে চুঁচুড়া আদালত আয়তনের দিক থেকে সব চেয়ে বড়। তাই এখানে পারিবারিক আদালতের জায়গা পেতে অসুবিধা হবে না। এই দাবিতে আমরা দু’টি সংগঠনের আইনজীবীদের নিয়ে জয়েন্ট অ্যাকশান কমিটি তৈরি করছি। রাজ্যের জোনাল জজের পাশাপাশি রাজ্যের আইনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব।”
চুঁচুড়া আদালতের প্রবীণ আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ইতিমধ্যেই শ্রীরামপুরে একটি অতিরিক্ত জেলা জজের আদালত হয়েছে। জেলা পারিবারিক আদালত চুঁচুড়াতেই হোক।” ওই আদালতেরই অপর আইনজীবী স্বপন পাল বলেন, “জেলা সদর ছেড়ে অন্যত্র সব আদালত তৈরি হলে আইনজীবীরা আর্থিক কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
এর পাল্টা শ্রীরামপুর বার লাইব্রেরির সম্পাদক রামচন্দ্র ঘোষ বলেন, “শ্রীরামপুর আদালত দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত। ১৯৮০ সাল থেকে আমরা এখানে জেলা পরিবারিক আদালত তৈরির দাবি জানাচ্ছি। চলতি বছরের এপ্রিলে এখানে দু’টি নতুন আদালত চালু হয়। কিন্তু চুঁচুড়া থেকে কোনও নথি পাঠানো হচ্ছে না। জেলা পারিবারিক আদালত যখন এখানে তৈরির চেষ্টা চলছে, তখন বাধা দেওয়া হচ্ছে।”
|