গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বা সহ-সভাপতির পদ নিয়ে জটিলতা কাটাতে হুগলির প্রতিটি ব্লকে দলীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করল শাসক দল তৃণমূল। জেলা বামফ্রন্ট অবশ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে সব জায়গায় তারা ক্ষমতায় এসেছে, সেখানে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে শরিকদের মধ্যে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাদের মধ্যে থেকেই প্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্দিষ্ট করা হবে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান এবং সভাপতি পদের দাবিদার স্থির করতে দলের বর্ষীয়ান নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভোটের সময়ে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় বিধায়কদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে ব্লক স্তরের নেতারা উপেক্ষিত হচ্ছেন বলে দলের অন্দরেই অভিযোগ ওঠে। সেই কারণে এ বার যাতে তেমন অভিযোগ না ওঠে সেই কারণে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের নির্দেশে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা স্থানীয় বিধায়ক ও দলের ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা করেই পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি নির্বাচন করবেন। যে ক্ষেত্রে একাধিক নাম উঠে আসবে, সে ক্ষেত্রে যাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা বেশি তিনিই সংশ্লিষ্ট পদের দাবিদার হবেন।
পক্ষান্তরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, “যে সব জায়গায় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এসেছে, সেখানে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে শরিকদের মধ্যে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাদের মধ্যে থেকেই প্রধান, উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি নির্দিষ্ট করা হবে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, হুগলিতে আজ, শনিবার থেকে তিন দিন ধরে পঞ্চায়েত প্রধান এবং চলতি মাসের ৩০ এবং ৩১ তারিখে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচন হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে, আপাতত সেপ্টেম্বর মাসের ৭ থেকে ১৪ তারিখের মধ্যে সভাধিপতি নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জেলার চারটি মহকুমাতেই দলের পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি নির্বাচন করতে তৃণমূলের আহ্বায়কেরা হিমশিম খাচ্ছেন। কারণ, প্রতিটি এলাকা থেকেই একই পদের দাবিদার হিসেবে একাধিক জয়ী সদস্যের অনুগামীরা নেতাদের কাছে দরবার করছেন। আরামবাগে প্রধান পদের দাবিদার নিয়ে তৃণমূলের বিরোধ জটিল আকার নিয়েছে। এখানে ছ’টি ব্লকের অধিকাংশ পঞ্চায়েতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। কিন্তু প্রতি পঞ্চায়েতেই দু’-তিন জন প্রধান পদের দাবিদার হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তা নিয়ে বিবাদও শুরু হয়েছে। আরামবাগের বিডিও প্রণব সাঙ্গুই শুক্রবার বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা পঞ্চায়েতগুলি থেকে প্রধান পদের দাবিদারদের নাম পাইনি। বোর্ড গঠনের দিনই পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |