পঞ্চায়তের বোর্ড গঠন নিয়ে দিনভর উত্তেজনা ছড়াল ডুয়ার্সের বাগরাকোটে। বুধবার বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ডের দখল নিয়েছে তৃণমূল। ঘটনার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, সিপিএম এবং ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার সমর্থকেরা। তাঁরা প্রায় আড়াই ঘন্টা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। এতে জাতীয় সড়কে যানজট দেখা দেয়। সমস্যা পড়েন যাত্রীরা। উল্লেখ্য, মোট ২০ আসনের বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯টিতে তৃণমূল, ১০টি মোর্চা ও ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার জোট প্রার্থীরা জয়ী হন। একটি আসন সিপিএম দখল করে। এদিন বোর্ড গঠনের দিন ধার্য করা হয়েছিল। |
চলতি সপ্তাহেই মোর্চা জোট দাবি করে, সিপিএমের সাহায্যে তাঁরা বোর্ড গঠন করবেন। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার থেকে পঞ্চায়েত দফতরের সামনে অবস্থান শুরু করে তৃণমূল। শাসক দলের দাবি, রাজ্য ভাগের দাবিদারদের বিরুদ্ধে এলাকার অশান্তি ছড়ানোর প্রতিবাদে তাঁদের এই আন্দোলন। এদিন অবস্থান বিক্ষোভ চলতে থাকে। এই অবস্থায় মোর্চার তরফে পুলিশি পাহারার দাবি জানানো হয়। মোর্চার অভিযোগ, এদিন পুলিশ সাহায্য না করে উল্টে গোলমালের আশঙ্কার কথা বলে পঞ্চায়েত দফতর থেকে ২ কিমি আগে বাগরাকোট মিনামোড়ে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। কোনও জয়ী সদস্য এতে দফতরেই যেতেই পারেননি। এক তরফাভাবে তৃণমূলের সদস্যরা বৈঠকে হাজির হয়ে ‘কোরাম’ গঠন করে বোর্ডের দখল নিয়ে নেয়। তৃণমূলের সুচিত্রা মিন্জ এবং শরণ ঘিমিরে যথাক্রমে প্রধান ও উপপ্রধান হয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। এই খবরে বাগরাকোট জুড়ে উত্তেজনা ছড়ায়। দুপুর ১২ টা থেকে জাতীয় সড়কে অবরোধ শুরু হয়। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বিনোদ ঘাতানি বলেন, “বোর্ড গঠনের নামে প্রহসন হয়েছে। দুই দিন ধরে পঞ্চায়েত দফতরে তৃণমূল সমর্থকেরা আমাদের ঢুকতে না দেওয়ার জন্যে অবস্থান বিক্ষোভ করলেও প্রশাসন কিছুই করেনি। উল্টে এদিন আমাদের নিরাপত্তা না দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সব করা হল।” সিপিএমের মালবাজার-১ লোকাল কমিটি সম্পাদক বলবাহাদুর থাপা বলেন, “অন্যায় ভাবে তৃণমূল বোর্ডের দখল নিয়েছে।” বেলা ৩টা নাগাদ মালবাজারের বিডিও তাসি ডোমো শেরপা অবরোধস্থলে আসলে তাঁকে ১১ জয়ী প্রার্থীর সই সংবলিত লিখিত অভিযোগপত্র বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। পুনরায় বোর্ড গঠন করার দাবিও তোলা হয়। যদিও তৃণমূলের মালবাজার ব্লক সভাপতি শুভাশিস ঘোষ বলেন, “মোর্চা শিবির কেন আসতে পারেনি। সেটা আমাদের জানার কথা নয়। আমরা রীতি মেনে বোর্ড গঠন করেছি।” জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্রকেও অভিযোগ জানান মোর্চা নেতারা। জেলাশাসক বলেন, “কেন অন্য জয়ী সদস্যরা পঞ্চায়েত দফতরে আসতে পারেননি, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |