ভবানী ভবনের চাপ কিছু কমাতে সাইবার থানা
বানী ভবনের ভার কমাতে এ বার প্রতিটি কমিশনারেটে সাইবার থানা খুলবে রাজ্য সরকার। সেই থানায় নিয়োগ করা হবে অতিরিক্ত কর্মীও। রাজ্য পুলিশের কর্তাদের মতে, ক্রমবর্ধমান সাইবার-অপরাধের ভারে জর্জরিত সিআইডি-র চাপ কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, নতুন তৈরি পাঁচটি কমিশনারেটে (বিধাননগর, ব্যারাকপুর, হাওড়া, দুর্গাপুর-আসানসোল ও শিলিগুড়ি) সাইবার থানা গড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্তারা জানান, মাসখানেকের মধ্যেই কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগে ওই থানা গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কমিশনারেটে এখন একটি করে সাইবার শাখা রয়েছে। সেগুলিকেই থানা হিসেবে গড়া হবে। বর্তমানে একমাত্র কলকাতা পুলিশেরই পৃথক সাইবার থানা রয়েছে।
কেন নতুন থানা গড়ার পরিকল্পনা? পুলিশ সূত্রের খবর, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা-সহ শহরতলি ও জেলায় সাইবার-অপরাধ বাড়ছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর হিসেবে, ২০১১-র তুলনায় ২০১২-এ রাজ্যে সাইবার অপরাধ প্রায় সাত গুণ বেড়েছে। তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না রাজ্য পুলিশের থানাগুলি। পুলিশকর্তারাই বলছেন, সাইবার অপরাধের তদন্তে যে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা দরকার, তা থানাগুলিতে নেই বললেই চলে। নেই উপযুক্ত পরিকাঠামোও। তাই প্রায় সব মামলাই সিআইডি-র কাছে আসছে।
সিআইডি-র এক কর্তা জানান, বছরখানেক আগে ফেসবুকে নিজের ছবি ও অশালীন মন্তব্য-সহ একটি প্রোফাইল দেখে জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হন বারাসতের এক তরুণী। সাইবার-অপরাধের তদন্তের অভিজ্ঞতা না থাকায় তদন্ত কী করে হবে, তা-ই ঠিক করতে পারেনি পুলিশ। শেষে মামলাটি সিআইডি-কে পাঠিয়ে হাঁফ ছাড়েন তাঁরা। তাতেও সহজে স্বস্তি মেলেনি ওই তরুণীর। পুলিশকর্তারা জানান, সিআইডি-র সদর দফতরে সাইবার শাখা থাকলেও যথেষ্ট কর্মী নেই। ১ জন ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে ৩ জন এসআই, ৪ জন এএসআই ও এক জন কনস্টেবল নিয়ে কোনও মতে ওই শাখা চলছে। দু’বছর আগে ঘোষণা হলেও এখনও তৈরি হয়নি সাইবার ল্যাব। ল্যাবের জিনিসপত্র ডাঁই হয়ে পড়ে ভবানীভবনে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, একে লোকবল প্রায় নেই, তাতে প্রতিদিন সিআইডি-তে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত ৮-১০টি করে অভিযোগ জমা পড়ে। সিআইডি-র এক কর্তা বলছেন, ‘‘মামলার জেরে কার্যত নাভিশ্বাস উঠছে আমাদের।”
রাজ্য পুলিশের খবর, সিআইডি-র থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিশনারেটের থানায় লোক বাড়ানো হচ্ছে। ওই সব থানায় দু’জন করে ইনস্পেক্টর দেওয়া হবে। তৈরি হচ্ছে সাইবার ল্যাবও।
নতুন সাইবার থানা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের একাংশেই। তাঁরা বলছেন, রাজ্যের বিভিন্ন থানার অফিসারদের বেশির ভাগেরই সাইবার অপরাধ তদন্তের প্রশিক্ষণ নেই। তা ছাড়া, অন্য মামলার সঙ্গে সাইবার অপরাধের কিছুটা আইনগত ফারাক রয়েছে। আইন অনুযায়ী, অন্যান্য মামলায় এক জন সাব-ইনস্পেক্টর তদন্তকারী অফিসার হতে পারেন। কিন্তু সাইবার-অপরাধে ইনস্পেক্টর পদের অফিসারেরাই তদন্তকারী অফিসার হন। ফলে এক বা দু’জন ইনস্পেক্টর দিয়ে সাইবার থানা কতটা চলবে, প্রশ্ন কর্তাদেরই একাংশের।
রাজ্যের এক পুলিশকর্তার কথায়, “সাইবার-অপরাধের তদন্তে কলকাতা পুলিশই এগিয়ে। তাদের সাফল্যের অন্যতম কারণ লোকবল।” লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের সাইবার থানায় ১০টি ইনস্পেক্টরের পদ আছে। আছেন সাব-ইনস্পেক্টররাও।
অতিরিক্ত ইনস্পেক্টর যে সাইবার অপরাধ মোকাবিলার অন্যতম হাতিয়ার, তা মানছেন কমিশনারেট কর্তারাও। তবে তাঁদের যুক্তি, এখন সাইবার অপরাধের অভিযোগ থানা হয়ে সিআইডি-র কাছে যায়। কমিশনারেটের থানা চালু হলে মানুষ সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। তা ছাড়া, পাঁচটি কমিশনারেটে নতুন থানা হলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলেও আশা। সত্যিই কী তাই?
“নেই জামার চেয়ে ছেঁড়া জামা ভাল।”—মন্তব্য এক গোয়েন্দাকর্তার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.