পাওনা টাকা চাওয়ায় এক যুবককে মারধর করে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের সোলাদানা বাজারে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই যুবকের নাম সিরাজুল মণ্ডল (২৮)। বাড়ি স্থানীয় হরিহরপুর গ্রামে। মৃতের বাবা তকিম মণ্ডলের অভিযোগ, মারধর করে ছাদ থেকে শুধু ফেলে দেওয়াই নয়, সিরাজুলকে যাতে হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়া হয়, সে জন্য তার চার বন্ধুকে হুমকিও দেয় অভিযুক্ত সেকেন ঢালি। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সেকেন ঢালির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে
|
সিরাজুল মণ্ডল। |
পুলিশ। ঘটনার সময়ে থাকা বাকিদেরও তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইট তৈরি ও লরিতে ইট বোঝাইয়ের কাজ করত সিরাজুল। অবৈধ ভাবে মানুষ পারাপারের কাজে যুক্ত সেকেন মাসখানেক আগে তার কাছে ৮০০ টাকা ধার নেয়। বুধবার রাতে লরিতে ইট বোঝাই করতে যাওয়ার সময়ে সোলাদানা বাজারে সিরাজুলের সঙ্গে দেখা হয় সেকেনের। সে সময়ে সিরাজুলের সঙ্গে ছিল তার আরও চার বন্ধু। বাজারের মধ্যে একটি চায়ের দোকানের ছাদে সকলে মিলে কথা বলার সময়ে সিরাজুল তাঁর পাওনা টাকার কিছুটা ফেরত দেওয়ার জন্য বলে সেকেনকে। কিন্তু টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে সেকেন। কথা কাটাকাটির সময়ে হঠাৎই সেকেন সিরাজুলকে মারতে আরম্ভ করে। অভিযোগ, মারতে মারতে ছাদের ধারে নিয়ে গিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। তাঁর বন্ধুরা জখম সিরাজুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেকেন হুমকি দেয়। তার জেরে ঘটনার দেড় ঘণ্টা পরেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়নি সিরাজুলকে। পরে ঘটনাস্থলে থাকা সিরাজুলেরই এক বন্ধুর কাছ থেকে খবর পেয়ে আত্মীয়েরা সিরাজুলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের ভাই তরিকুল মণ্ডল, মামা জোহর আলি বলেন, “গত কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে এ দেশে ঢুকে রীতিমতো বাড়ি ফেঁদে বসেছে সেকেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক কুকর্মের অভিযোগ আছে। সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেঁচে যেত সিরাজুল।”
এ দিন নিহত সিরাজুলের স্ত্রী আমেনা বলেন, “মেয়েকে মানুষ করা, সংসার চালানো এবং আমার চিকিৎসার জন্য দিনরাত খাটত মানুষটা। আটশো টাকা পাওনা থাকলেও মাত্র দু’শো টাকা চাওয়ার অপরাধে মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে খুন করল।” |