হাসপাতাল কামদুনির আসামিকে তড়িঘড়ি ছাড়ল কেন, উঠছে প্রশ্ন
লায় বেল্টের মতো শক্ত কিছু জড়িয়ে চাপ দেওয়ার লাল দাগ। পিঠে আর হাতের বেশ কয়েকটি জায়গায় গভীর ক্ষত। ফুলে উঠেছে ঠোঁটের পাশ। চোখের নীচে গভীর কালশিটে। পায়ের হাড়ে চিড়।
এই আঘাতগুলি নিয়েই ৮ অগস্ট দমদম জেল থেকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আনসার আলি মোল্লা। বুধবার বিকেলে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ঠিকই। তবে জেলেই আরও বেশ কিছু দিন তার চিকিৎসা চালাতে হবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, চিকিৎসা যদি চালিয়ে যেতেই হয়, আনসারকে আর জি করে ভর্তি রেখেই সেটা করা হল না কেন? কেন সাততাড়াতাড়ি জেলে ফেরানো হল ওই অভিযুক্তকে?
আর জি করের অধ্যক্ষ পার্থজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই আসামি এখন বিপন্মুক্ত বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই।”
তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আনসারকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ার পরে আর কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চায়নি প্রশাসন। সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের যাতায়াত। সেই ভিড়ে কোনও ভাবেই যাতে ওই বন্দির নিরাপত্তা বিঘ্নিত না-হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে রাতের বাসে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাম সিংহকে জেলে পিটিয়ে মেরেছিল বন্দিরা। আনসারকেও জেলের অন্য বন্দিরা বেধড়ক মারধর করেছে বলে অভিযোগ তার আত্মীয়দের। দমদম জেলের কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, বন্দিদের নিজেদের বিবাদের জেরেই জখম হয়েছে আনসার। এর সঙ্গে কামদুনি কাণ্ডের কোনও যোগ নেই।
জেল-কর্তৃপক্ষ এ কথা বললেও জেলের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, গারদের ভিতরে কিছু সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার পরিবর্তে দুই তোলাবাজ বন্দিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। আনসারের কাছেও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছিল তারা। বলা হয়েছিল, তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যেন ওই টাকা পৌঁছে যায়। আনসার ওই টাকা দিতে অস্বীকার করায় মারধর শুরু হয়। আইজি (কারা) রণবীর কুমার বলেন, “দমদম থানাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা এ ব্যাপারে তদন্ত করছে।”
ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সইফুল রহমান মূল অভিযুক্ত বলে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি। কিন্তু নিহত ছাত্রীর পরিবার এবং আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আনসারই মূল অভিযুক্ত। আনসারকে ৮ অগস্ট হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও মারধরের বিষয়টি ১৩ তারিখের আগে তাঁদের জানানো হয়নি বলে ওই অভিযুক্তের ভাই আরশাদ আলি মোল্লা মঙ্গলবার অভিযোগ করেন। পুলিশ তাঁদের বলেছিল, অসুস্থ বলেই আনসারকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জেলে মারধরের বিষয়টিকে এ ভাবে আড়াল করা হচ্ছিল কেন?
জেলকর্মীদের একাংশ জানান, ওই বন্দি কামদুনির মতো স্পর্শকাতর মামলায় অভিযুক্ত বলেই জেল-কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। তাই জখম হওয়ার পরেও প্রথমে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়নি। কিন্তু ৮ অগস্ট ভোরে আনসারের অবস্থার অবনতি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.