আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে বহরমপুর পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ড এখন বেড়ে ২৮টি। ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর বহরমপুরে পুরভোট হয়েছিল। আগামী নভেম্বরে, শহরে ফের পুর নির্বাচন। তার আগে আসন বিন্যাসের ফলে বহরমপুরের রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ কিছুটা বদলে যাবে বলেই মনে করছেন রাদনীতির কারবারিরা।
ফলে ভোটের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে কিছুটা সংশয়ই তৈরি হয়েছে শহর জুড়ে। রয়েছে কৌতূহলও। অনেকেই মনে করছেন, পুরনো প্রার্থীরা তাঁদের ‘নির্দিষ্ট’ বা চেনা ওয়ার্ডে এ বার আর দাঁড়াতে পারবেন না। ফলে বেশ কিছু অভাবিত ফলের ‘আশঙ্কা’ করছেন কংগ্রেস, সিপিএম নেতা কর্মীরা। এই সুযোগে শহরে ‘অতি দুর্বল’ তৃণমূল কি কিঞ্চিৎ সুবিধা পাবে? কৌতূহল রয়েছে তা নিয়েও। আসন বিন্যাসের ফলে পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্যের পরিচিত ওয়ার্ড ১৯ নম্বর এ বার হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর। বদলে গিয়েছে উপ-পুরপ্রধানের ওয়ার্ডটিও। তাঁর ৪ নম্বর ওয়ার্ড এখন ঠিকানা বদলে ২৩ নম্বর। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৭টি পার্টের মধ্যে ৫টি-র ভোটারা এ বার চলে গিয়েছেন পাশের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে ৩০ এবং ৪৯ পার্টের ভোটাররা চলে গিয়েছেনন ৭ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে। ফলে নিজের এলাকাতেই কিঞ্চিৎ ‘অচেনা’ হয়ে গিয়েছেন খোদ পুরপ্রধান। একই ভাবে ৩ নম্বর ওয়ার্ডটি ভেঙে ৮ এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ড দু’টি তৈরি হয়েছে। একেবারেই নবাগত পরিধি নিয়ে তৈরি ওই ওয়ার্ড দু’টি নিয়েই কৌতূহল রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় তিন রাজনৈতিক দলও সেকানে কী হয় দেকার জন্য মুখিয়ে। এ ছাড়াও ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ১৯, ২০, ২২ নম্বর ওয়ার্ডগুলি ভেঙে, পুর্নবিন্যাস করে গঠন করা হয়েছে নতুন দু’টি ওয়ার্ড। সব মিলিয়ে গত বারের তুলনায় বাড়তি তিনটি ওয়ার্ড সংযোজন হওয়ায় পুরসভা এলাকায় যে নতুন আসন পুনর্বিন্যাস হয়েছে, তাতে ভোটারদের মধ্যেও কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। গত বারের ১ নম্বর ওয়ার্ড এ বারে ২ নম্বর। ২ নম্বর ওয়ার্ড আবার উল্টে গিয়েছে ১ নম্বরে। একই ভাবে ৩ নম্বর ওয়ার্ড ভেঙে ৮ নম্বর, ৪ নম্বর হয়ে গিয়েছে ২৩। অন্যগুলিও বদলেছে ক্রম পর্যায়ে।
১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বহরমপুর পুরসভা। শুরু তে শহরে ছিল মাত্র ১৪টি ওয়ার্ড। সেই সময়ে জনসংখ্যা ছিল ২৭ হাজার ১১৩ জন। গত ৩০ বছর ধরে পুরবোর্ড কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। ২০০৮ সালে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৩০ জন। এ বার সেখানে ২৮টি ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৯২৭ জন। সবচেয়ে বেশি ৫৭৯১ জন ভোটার রয়েছেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। সবচেয়ে কম ২৫৫৮ জন ভোটার রয়েছেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। গত বার ৫০জন প্রার্থীর মধ্যে মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২০ জন। তার মধ্যে কংগ্রেসের ১১ জন এবং বামফ্রন্টের ৯ জন। ১৯৯৮ ও ২০০৩ সালের ২৩টি আসনের মধ্যে ২৩টি আসনে এবং ২০০৮ সালে ২৫টি আসনের মধ্যে ২৫টি আসনে জয়ী হয়ে বিরোধী শূন্য পুরবোর্ড দখল করে কংগ্রেস। |