|
|
|
|
গ্রামে-গ্রামে পৌঁছচ্ছে ব্যাঙ্ক, ৫০টি ক্ষুদ্র শাখা খুলছে আজ
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
দেশের প্রতিটি গ্রামে ব্যাঙ্ক পরিষেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্যে ওই আলট্রা স্মল ব্রাঞ্চ (ক্ষুদ্র শাখা) চালু হওয়ায়, তাতে ব্যাপক সাড়াও মিলেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন, নারায়ণগড়, মোহনপুর-সহ বিভিন্ন ব্লকের একাধিক গ্রামে এই ক্ষুদ্র শাখা চালু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। আজ ১৫ অগস্ট, জেলায় আরও ৫০টি নতুন শাখা খোলা হবে।
লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার (এল ডি এম) সমরেন্দ্র সান্নিগ্রাহী জানান, “সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের সব শাখা খোলা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।” এল ডি এম দফতর সূত্রে খবর, জেলায় প্রাথমিক ভবে ২৮৫টি গ্রামে ওই আলট্রা স্মল ব্রাঞ্চ খোলা হবে। কিন্তু কীসের ভিত্তিতে? জানা গিয়েছে, প্রথম ধাপে যে গ্রামে দু’হাজার থেকে পাঁচ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে সেখানেই আগে তা চালু হবে। আর যেখানে জনসংখ্যা দু’হাজারের কম সেখানে দ্বিতীয় ধাপে ধীরে ধীরে আরও ৩৬০০টি কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট চালু করা হবে। জানা গিয়েছে, এমন গ্রামের সংখ্যা ৭১৩৬। পাঁচ থেকে সাতটি গ্রামকে নিয়ে একটি করে ওই সার্ভিস পয়েন্ট খোলা হবে। আলট্রা স্মল ব্রাঞ্চ এবং কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট দু’টিরই কার্যকারিতা এক।সরকারি হিসাবেই, জেলার সমস্ত গ্রামের মানুষ এখনও ব্যাঙ্ক পরিসেবা পাননি। তাই ওই উদ্যোগ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় জনসংখ্যা ৫১ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪১১। তুলনায় ব্যাঙ্ক আছে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক ২৯৫, বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্ক ৩৭, কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ৩৬, বেসরকারি ব্যাঙ্ক ৮ এবং গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক ৮টি। কিন্তু প্রকল্পটি চালু হলে সরকারের আশা গ্রামের সব স্তরের মানুষ রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের গ্রাহক হওয়ার সুযোগ পাবেন। জানা গিয়েছে, যে এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক রয়েছে সেখানে ওই শাখা খোলা হলে সংলগ্ন রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষই সেগুলি নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে ব্যাঙ্কগুলি এই সমস্ত স্মল ব্রাঞ্চগুলির তদারকির জন্য স্বনির্বাচিত সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। তারাই সমস্ত কাজ দেখভাল করবে। কিন্তু, মূল নিয়ন্ত্রণ-সহ সব কিছুই ব্যাঙ্কের হাতেই থাকবে। এই ক্ষুদ্র শাখাগুলিতে একশো স্কোয়ার ফুটের একটি ঘর থাকবে। তাতে আপাতত একজন করে চুক্তি ভিত্তিক কর্মী থাকবেন। তারাই ওই সেন্টারের কাজ সামলাবেন। এ ছাড়াও তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ করবেন। তাঁদের বেতন দেবে সংশ্লিষ্ট বরাত পাওয়া সংস্থাগুলি। তা ছাড়াও শাখাগুলিতে লেনদেনের উপর কমিশন দেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক।
শাখাগুলিতে নিখরচায় সাধারণ মানুষ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এ ছাড়াও টাকা জমা এবং টাকা তোলা ওই শাখার মাধ্যমেই হবে। দিনের শেষে শাখার কর্মীরা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে গিয়ে ওই টাকা জমা দেবেন। কিষান ক্রেডিট এবং লোনের জন্য ওই শাখাতেই আবেদনও করবেন গ্রাহকরা। তবে ঋণ মঞ্জুর হবে প্রধান শাখা থেকে। তা ছাড়াও এ বার থেকে একশো দিনের কাজের টাকা, বিধবা ভাতা-সহ সরকারি সব প্রকল্পের টাকাও ব্যাঙ্কের ওই ক্ষুদ্র শাখা থেকে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। সেখানেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (আধার নম্বর দেওয়া) সরাসরি টাকা জমা পড়ে যাবে। এল ডি এম দফতর সূত্রে খবর, ওই সব শাখাগুলিতে একটি করে বায়োমেট্রিক যন্ত্র এবং সাউন্ড সিস্টেম থাকবে। কেবলমাত্র বায়োমেট্রিক এটিএম কার্ড ব্যবহার করে গ্রাহকরা তাঁর অ্যকাউন্টে কত টাকা আছে তা যেমন জানতে পারবেন তেমনি তুলতেও পারবেন। একই ভাবে টাকা জমাও দেওয়া যাবে। প্রতিটি লেনদেনের প্রমান স্বরূপ গ্রাহককে একটি প্রিন্ট দেওয়া হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কর্মসংস্থানও হবে বলে দাবি লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার সমরেন্দ্র সান্নিগ্রাহীর। তিনি বলেন, “স্মল ব্রাঞ্চ এবং কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট চালু হলে জেলাতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে প্রায় পাঁচ হাজার যুবক কাজ পাবেন।”
|
|
|
|
|
|